গাজীপুরের টঙ্গীতে ঢাকা-ময়মনসিংহ মহাসড়কের তুরাগ নদের ওপরে শতবর্ষী সেতুর স্লাব ধসে পড়ায় সৃষ্ট যানজট সামান্য কমলেও খানাখন্দ ভরা সড়কের কারণে যান চলছে ধীরগতিতে। ফলে দিনভর মোড়ে মোড়ে যানজটের তৈরি হয়েছে। এতে দুর্ভোগ পোহাতে হয়েছে কারখানার শ্রমিকসহ স্কুল-কলেজগামী ছাত্র-ছাত্রীদের।

এদিকে যান চলাচল স্বাভাবিক করতে সেতুটির ধসে পড়া স্লাবের সংস্কারকাজ শুরু করেছে বিআরটি কর্তৃপক্ষ।

শনিবার (১৩ নভেম্বর) বেলা ১১টা সেতুটি পরিদর্শনে এসে বিআরটি প্রকল্প পরিচালক (সেতু বিভাগ) মহিরুল ইসলাম বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন। ১০ থেকে ১২ দিনের মধ্যে সেতু সংস্কারের কাজ সম্পন্ন হবে বলে আশা করছেন তিনি।

মালেকের বাড়ি এলাকা থেকে প্রতিদিনই বাসযোগে উত্তরার অফিসে যাতায়াত করেন রাকিবুল ইসলাম। তিনি বলেন, কয়েক বছর ধরে যানজটকে সঙ্গী করে আমি নিজ বাসা থেকে উত্তরার অফিসে যাই। কিন্তু সেতুটি ভেঙে পড়ার পর অসহনীয় দুর্ভোগ তৈরি হচ্ছে। সড়কের প্রায় অংশই হেঁটে যেতে হচ্ছে। অফিসে পৌঁছাতে নির্ধারিত সময়ের কয়েক ঘণ্টা আগে বাসা থেকে বের হতে হচ্ছে। আবার নির্ধারিত সময়ে অফিস শেষ করে গভীর রাতে বাসায় পৌঁছাতে হচ্ছে। সেতুতে যান চলাচল বন্ধ হয়ে যাওয়ায় অফিস সময় বাদে বেশির ভাগ সময় সড়কেই ব্যয় করতে হচ্ছে।

অনার্স প্রথম বর্ষপড়ুয়া সোহেল আহমেদ পরিবারের সঙ্গে উত্তরায় থাকেন। পড়েন গাজীপুরের একটি কলেজে। ভাওয়াল গাজীপুর বদরে আলম সরকারি কলেজ কেন্দ্রে পরীক্ষা ছিল তার। তিনি বলেন, পরীক্ষায় অংশগ্রহণের উদ্দেশ্যে খুব ভোরে উত্তরার বাসা থেকে বের হয়েও কেন্দ্রে সঠিক সময়ে পৌঁছাতে পারেননি। একপর্যায়ে বাস ছেড়ে ভাড়ায় চালিত মোটরসাইকেলযোগে যানজট এড়িয়ে কেন্দ্রে পৌঁছাতে হয়েছে। যানজট না কমলে সামনের পরীক্ষায় এক দিন আগেই গাজীপুরে এসে আত্মীয়ের বাড়িতে থেকে পরীক্ষা অংশগ্রহণ করতে হবে।

এদিকে স্লাব ধসে বন্ধ হয়ে যাওয়া সেতুটি চালু করতে ইতিমধ্যে কাজ শুরু করেছে বিআরটি কর্তৃপক্ষ। বিআরটি প্রকল্প পরিচালক (সেতু বিভাগ) মহিরুল ইসলাম জানান, শনিবার বিশেষজ্ঞ একটি দল সেতুটির ধসে পড়া অংশ পরিদর্শন করেছে। ইতিমধ্যে, সেতুটি সংস্কারে কাজ শুরু করা হয়েছে। আশা করা যাচ্ছে ১০ থেকে ১২ দিনের মধ্যে সেতুটির ধসে পড়া অংশ সংস্কার করে যান চলাচল শুরু করা যাবে। পরিদর্শন দল জানালেও আমরা ১৪ দিন সময় নিয়েছি।

তিনি বলেন, সেতুটি সংস্কারে বিশেষায়িত একপ্রকার কংক্রিট ব্যবহার করা হবে। আমরা বাজারে যে সিমেন্ট পাই, তা সাধারণত কংক্রিট ভেদে ১৪ দিন, ২১ দিন ও ২৮ দিনে তার কার্যকারিতা পায়। আমরা টঙ্গীর সেতুটির ধসে যাওয়া অংশ মেরামতে বিশেষ কংক্রটি জাতীয় কুইক হাইডিন্ট সিমেন্ট ব্যবহার করব। তাতে মাত্র তিন দিনে সেতুর কার্যকারিতা ফিরে পাবে এবং স্বল্প সময়ের মধ্যে যান চলাচল স্বাভাবিক হয়ে দুর্ভোগ কমবে।

গাজীপুর মেট্রোপলিটন পুলিশের উপকমিশনার (ট্রাফিক) আব্দুল্লাহ্ আল-মামুন বলেন, ঢাকায় প্রবেশ ও বের হওয়ার পথে কোনো যানজট নেই। তবে সড়কে খানাখন্দ থাকায় যানবাহনগুলো চলছে ধীরগতিতে। এতে মোড়ে মোড়ে যানজটের তৈরি হচ্ছে।

শিহাব খান/এনএ