দিনাজপুর পৌরসভার মেয়র সৈয়দ জাহাঙ্গীর আলমের বিরুদ্ধে দুর্নীতি, ক্ষমতার অপব্যবহারসহ বিভিন্ন অনিয়মের জন্য রাজস্ব ও আর্থিক ক্ষতি হয়েছে মর্মে পৌরসভার ১০ জন কাউন্সিলর কর্তৃক সরকারের বিভিন্ন দফতরে অভিযোগ দাখিলের প্রেক্ষিতে তদন্ত শুরু করেছে দিনাজপুর জেলা প্রশাসন।

সোমবার (৮ নভেম্বর) সকাল ১১টা থেকে দুপুর তিনটা পর্যন্ত দিনাজপুর পৌরসভার ফাতেহুল আলম দুলাল মিলনায়তনে অভিযোগের শুনানি অনুষ্ঠিত হয়। শুনানিতে অভিযুক্ত মেয়র, অভিযোগকারী কাউন্সিলরবৃন্দ ও পৌরসভার কর্মকর্তাগণ উপস্থিত ছিলেন।

দিনাজপুরের অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক ও স্থানীয় সরকার বিভাগের উপ পরিচালক (অতিরিক্ত দায়িত্ব) মো. শরিফুল ইসলাম এই শুনানি গ্রহণ করেন।

কাউন্সিলরগণের দায়েরকৃত অভিযোগসূত্রে জানা যায়, পৌরসভার ইজারার রাজস্ব আয়ের একটি বড় খাত। শর্ত অনুযায়ী দরপত্র গ্রহণের খবর পাওয়ার সাত কার্যদিবসের মধ্যে ইজারার বকেয়া টাকা পরিশোধ করতে হবে। কিন্তু অভিযুক্ত মেয়র নীতিবহির্ভূতভাবে পুরো অর্থ গ্রহণ না করে কিস্তির মাধ্যমে অর্থ আদায় করছেন। ফলে ইজারার টাকা ইজারাদাররা সময়মত পরিশোধ না করায় এক কোটি টাকা আদায় হওয়া নিয়ে অনিশ্চয়তা দেখা দিয়েছে। 

এ ছাড়া ২০১৭ হতে ২০২১ পর্যন্ত মোট চার বছরে এশিয়ান ডেভেলপমেন্ট ব্যাংক এডিপির আর্থিক সহায়তা তহবিল হতে প্রাপ্ত ৩ কোটি ১৫ লাখ ২২ হাজার ৫শ টাকার কোনো টেন্ডার করা হয়নি। বাজেটে বরাদ্দ না থাকলেও ২০২০-২০২১ অর্থবছরে ১৫ লক্ষ টাকা পৌরসভার গরীব, দুঃস্থ ও অসহায় ব্যক্তিদের মাঝে বিধি বহির্ভূতভাবে বিতরণ করা হয়েছে। চুক্তিভিত্তিক কর্মচারী নিয়োগের সুযোগ না থাকলেও পৌরসভার বিভিন্ন বিভাগে ১৬২ জন অতিরিক্ত কর্মচারী নিয়োগ দেওয়া হয়েছে। 

শুনানি শেষে দিনাজপুর অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক ও স্থানীয় সরকার বিভাগের উপ পরিচালক (অতিরিক্ত দায়িত্ব) মো. শরিফুল ইসলাম বলেন, তদন্তাধীন বিষয়ে এখনই কোনো মন্তব্য করা যাবে না।

দিনাজপুর পৌরসভার প্যানেল মেয়র আবু তৈয়ব আলী দুলাল বলেন, জনগণ আমাদেরকে ভোট দিয়ে নির্বাচিত করেছে উন্নয়নের জন্য। কিন্তু দিনাজপুর পৌর মেয়র প্রতিষ্ঠানটিকে স্বেচ্ছাচারী প্রতিষ্ঠানে পরিণত করেছে। শত বছরের প্রাচীন দিনাজপুর পৌরসভা তার পরিচ্ছন্ন ঐতিহ্য হারিয়ে ভাঙা রাস্তা-ঘাট আর ময়লার শহরে পরিণত হয়েছে। আর আমাদের মেয়র তার আখের গোছাতে ব্যস্ত।

এ বিষয়ে দিনাজপুর পৌরসভার মেয়র সৈয়দ জাহাঙ্গীর আলম বলেন, আমি জনগণের ভোটে পরপর তিনবার নির্বাচিত মেয়র। সততার সঙ্গে দায়িত্ব পালন করছি। আগেও অনেকবার আমাকে বিভিন্নভাবে হয়রানি করা হয়েছে, এখনো হচ্ছে। কোনোটাই অবৈধ ও স্বেচ্ছাচারিতা নয়। আমি করলে লীলা আর আপনি করলে বিলা।

ইমরান আলী সোহাগ/আরআই