সরকার রোহিঙ্গাদের ঘর দেয়, আর আমাদের উচ্ছেদ করে
‘সরকার রোহিঙ্গাদের ঘর-বাড়ি দেয়, জায়গা দেয় আর আমাদের উচ্ছেদ করে। রোহিঙ্গাদের জায়গা দিতে পারে, কিন্তু আমাদের দিতে পারে না। আমরা বাংলাদেশের নাগরিক হয়েও কোনো সুযোগ-সুবিধা পাই না। আমরা গরিব, নদী ভাঙনের কারণে এখানে এসে আশ্রয় নিছি। আমাদের আর থাকতে দিল না। এখন পোলাপান নিয়া কই যামু।’
কথাগুলো বলছিলেন চাঁদপুর পৌরসভার ৭নং ওয়ার্ডে রেলের জায়গায় গড়ে ওঠা বস্তির বাসিন্দা লাভলি বেগম। নদী ভাঙনের পর বাচ্চাদের নিয়ে যে বস্তিতে আশ্রয় নিয়েছিলেন, বাংলাদেশ রেলওয়ে সে বস্তি ভেঙে দিলে কষ্টে তিনি এ কথাগুলো বলেন।
বিজ্ঞাপন
সোমবার (৮ নভেম্বর) দিনব্যাপি ৭নং ওয়ার্ডের কয়লাঘাট এলাকায় বাংলাদেশ রেলওয়ের সম্পত্তিতে গড়ে ওঠা অর্ধশতাধিক স্থাপনা উচ্ছেদ অভিযান শুরু করে বাংলাদেশ রেলওয়ে কর্তৃপক্ষ।
রেলের অভিযানে ৩০ বছর পর কয়লাঘাট এলাকার রেলের বস্তি উচ্ছেদ করা হয়। এ সময় সেখানে গড়ে ওঠা সেমিপাকা, টিনশেড ও ঝুপড়ি মিলিয়ে অর্ধশতাধিক স্থাপনা গুঁড়িয়ে দেওয়া হয়। উচ্ছেদের পর সেখানে বসবাসকারীরা পথেই যায়গা করে থাকার ব্যবস্থা করেন।
বসবাসরত খাদিজা, মোস্তফা ও আমির হোসেন গাজী বলেন, আমরা পৌরসভার ভোটার হয়েও কোনো সুযোগ-সুবিধা পাই না। আজকে রেল আমাদের উচ্ছেদ করে দিয়েছে। আমরা কোথায় থাকব। রেলেও প্রচুর সম্পদ আছে, আমাদেরকে কোথাও থাকার ব্যবস্থা করে দিক। না হলে অসহায় মানুষগুলো কোথায় যাবে।
রেলের চট্টগ্রাম বিভাগীয় ভু-সম্পত্তি কর্মকর্তা মো. মাহবুবুল করিম বলেন, মুজিববর্ষ উপলক্ষে রেলের পক্ষ থেকে নিরাপত্তাজনিত বেষ্টনী দেয়াল তৈরি হচ্ছে। অনেক কাজ হচ্ছে, এর মধ্যে এটিও একটি। আমরা আগেই মাইকিং করে তাদের সরে যেতে বলেছি। তারা কথা রেখেছে এবং কাজে সহযোগিতা করেছে। এখানে শুধু নিরাপত্তা দেয়াল হবে, কোনো স্থাপনা হবে না। স্টেশনের নিরপত্তার জন্য এই বেষ্টনী দেয়াল।
এ সময় উপস্থিত ছিলেন, চট্টগ্রাম বিভাগীয় রেলওয়ে ম্যানেজার শামস মো. তুষার, রেলওয়ে নিরাপত্তা বাহিনী (আরএনবি) কমান্ডার সত্যজিৎ দাম, রেলওয়ে থানার ওসি মুরাদ হোসেন বাহার, আরএনবি সিআই ইয়াসিন, সিআই অস্রশাখার রেজওয়ান, রেলের উপ-সহকারী প্রকৌশলী মো. লিয়াকত আলী মজুমদার, কারোঙ্গ লাকসাম কাউসার আহমেদ, চাঁদপুর মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আব্দুর রশিদ, চাঁদপুর বিদুৎতের উপ-সহকারী প্রকৌশলী মো. হারুন, স্টেশন মাস্টার শোয়াইবুল শিকদার।
শরীফুল ইসলাম/আরআই