কমেনি ভোগান্তি, শ্রমিকদের ভরসা এখন ইজিবাইক
কেরোসিন ডিজেলের দাম বৃদ্ধির প্রতিবাদে ধর্মঘট পালন করছে পরিবহন মালিকরা। ফলে ভোগান্তি মাথায় নিয়ে কাজে যোগদান করতে হচ্ছে খেটে-খাওয়া মানুষদের। এখন তাদের কর্মস্থলে পৌঁছার একমাত্র ভরসা ইজিবাইক, ভ্যান ও অটোরিকশা। এতে সময় বেশি লাগার পাশাপাশি ভাড়াও গুনতে হচ্ছে বেশি।
রোববার (০৭ নভেম্বর) ঢাকা-আরিচা মহাসড়কের সাভার, নবীনগর, চন্দ্রা-নবীনগর মহাসড়কের পল্লিবিদ্যুৎ, বাইপাইল, জিরানীবাজার কবিরপুর ও টঙ্গী-আশুলিয়া-ইপিজেড মহাসড়কের আশুলিয়া বাজার, জামগড়া, ইউনিক বাসস্ট্যান্ড ঘুরে দেখা যায়, যাত্রীবাহী বাস ট্রাক না থাকায় ইজিবাইকে কর্মস্থলে যাচ্ছেন খেটে খাওয়া মানুষ। শ্রমিকের তুলনায় ইজিবাইক কম থাকায় ঝুঁকি নিয়ে গাদাগাদি করেই কর্মস্থলে পৌঁছাতে হচ্ছে।
বিজ্ঞাপন
ইজিবাইকে করে কারখানায় যাবেন সাজেদা বেগম নামে এক নারী পোশাকশ্রমিক। তিনি ঢাকা পোস্টকে বলেন, শুক্রবার অফিস বন্ধ ছিল তাই ভোগান্তি বুঝিনি। শনিবার অফিসে যেতেও সময় লেগেছে অনেক। ফিরতে আরও বেশি সময় লেগেছে। বাসায় ফিরে রান্না করতে ১০টার বেশি বেজে গেছে। ঘুমাব কখন, আর সকালের রান্নাই বা করব কীভাবে? ইজিবাইকে করে অফিস যেতে হবে। এজন্য সকালে রান্না না করেই বাসা থেকে বের হতে হয়েছে। রান্না করে খাওয়ার চিন্তা করলে সঠিক সময়ে অফিসে উপস্থিত হতে পারব না।
আরেক শ্রমিক রাবেয়া খাতুন বলেন, আমরা এত ভোগান্তি চাই না, সঠিক সমাধান চাই। যত কষ্ট সব আমাদেরই পোহাতে হয়। আমরা দ্রুত পরিবহন সেবা চাই। মালিক পক্ষ কিংবা সরকার এ ধরনের পরিস্থিতিতে আমাদের জন্য একবারও ভাবেনি। যদিও এর আগে করোনার সময় এ রকম পরিস্থিতিতে পড়েছিলাম। এবারও একই অবস্থা। সড়কে গাড়ি না থাকায় রিকশা, ভ্যানচালকরাও কৌশল করছেন। ১৫ টাকার ভাড়া নিচ্ছেন ৫০ টাকা। ইজিবাইকে ১০ টাকার ভাড়া দিতে হচ্ছে ২০ টাকা। তবুও দুইজনের সিটে নিচ্ছে চারজন।
আশুলিয়ার বাইপাইল এলাকায় যাত্রীর জন্য রিকশা নিয়ে অপেক্ষা করছেন লিখন মিয়া। তিনি ঢাকা পোস্টকে বলেন, যাত্রীদের দুঃসময়ে আমরাই সড়কে থাকি। একটু ভাড়া বেশি নিলেও যাত্রীদের অভিযোগ নেই। আমরা সড়কে না থাকলে তো কেউ অফিসে ঠিক সময় যেতে পারত না। তাই ভাড়া বেশি হলেও তারা রিকশাতেই দুই দিন যাতায়াত করছে। তাছাড়া মাস শেষ, এখন কারও হাতেই টাকা নেই। মানবিক দিক থেকে আমরা বিবেক করেই ভাড়া নেই। বড় গাড়ির মতো ভাড়া বাড়ানোর দাবিতে পরিবহন বন্ধ রাখি না।
বাংলাদেশ বস্ত্র ও পোশাক শিল্প শ্রমিক লীগের কেন্দ্রীয় কমিটির সাংগঠনিক সম্পাদক সারোয়ার হোসেন বলেন, অনেক সময় বাধ্য হয়েই শ্রমিকরা বেশি ভাড়া দিয়ে কারখানায় যাচ্ছে। এরপরও কিন্তু ঠিক সময়ে তারা কর্মস্থলে পৌঁছাতে পারছে না। চেষ্টা থাকলেও তারা নিরুপায়। এমন অবস্থা চলতে থাকলে মালিকদের উচিত শ্রমিকদের জন্য পরিবহনের ব্যবস্থা করা।
মাহিদুল মাহিদ/এসপি