কুমিল্লার শৌখিন চাষি আহমেদ জামিল। ব্যতিক্রমী বিভিন্ন ফসলের চাষ করে সফল হচ্ছেন। তেমনি ২০১৭  সালে প্রথমবারের মতো কালো টমেটো চাষ করে দেশজুড়ে আলোচিত হয়েছেন। বর্তমানে নিজে চাষ করার পাশাপাশি আগ্রহী চাষিদের বীজ দিয়ে সহযোগিতা করছেন।

সরেজমিনে নগরীর ঠাকুরপাড়া বাগান বাড়ি এলাকায় বাসার আঙিনায় কালো টমেটো চাষের জন্য জমি প্রস্তুত করছেন আহমেদ জামিল।  বীজ থেকে চারা উৎপাদন করে সারাদেশে চাষিদের সরবারহ করছেন। তার দেখাদেখি বর্তমানে অনেকে কালো টমেটো চাষ করছেন বাসার ছাদে কিংবা জমিতে।

চাষি আহমেদ জামিল বলেন, ২০১৬ সালে প্রথম যুক্তরাষ্ট্রের সাউথ ক্যারোলিনা থেকে অল্প কয়েকটি কালো টমেটোর বীজ বাংলাদেশে  আনি। ২০১৭ সালে শহরের বাসায় চাষ শুরু করি। তবে তখন বৃষ্টিতে প্রায় সব চারা মারা যায়। তবে একটি চারা কোনো রকমে বেঁচে গিয়েছিল। সেটা থেকে বীজ সংগ্রহ করি। পরবর্তীতে ১৬ শতক জমিতে প্রায় ৪০ মণ টমেটো আবাদ করি। দেশের সুপার শপগুলোতে এর ব্যাপক চাহিদা রয়েছে। আমি ২০০ টাকা কেজি দরে টমেটো বিক্রি করেছি।

তিনি আরও বলেন, জানুয়ারি থেকে এপ্রিল পর্যন্ত কালো টমেটো ফলন দিয়ে থাকে। প্রতি গাছে ৮-১০ কেজি টমেটো ধরে। তবে টবে করলে ফলন কম হয়। আট দিনের বেশি সময় ধরে স্বাভাবিক তামপাত্রায় এটি রাখা যায়। সহজে নষ্ট হয় না। বিদেশে এই টমেটোর ব্যাপক চাহিদা রয়েছে। দামও অনেক।

আমার স্বপ্ন এই কালো টমেটো দেশের চাহিদা পূরণ করে বিদেশে রফতানি করার। এতে কৃষকরাও লাভবান হবে। টমেটো চাষে কৃষি বিভাগ শুরু থেকে আমাকে সহযোগিতা করে আসছে। তারপরও কাঙ্ক্ষিত লক্ষে পৌঁছাতে পারছি না। আমি চাই সরকারের সহযোগিতায় এই কালো টমেটো সারাদেশে ছড়িয়ে পড়ুক।

কুমিল্লা আদর্শ সদরের উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা আউলিয়া খাতুন বলেন, কালো টমেটোর পুষ্টি গুণ বেশি। অ্যান্থোসায়ানিন নামক এন্টিঅক্সিডেন্ট থাকে, যা ক্যানসার প্রতিরোধক। এটি সুগার নিয়ন্ত্রণ করে ডায়াবেটিস কমাতে সাহায্য করে। শুরু থেকে আমরা শৌখিন চাষি আহমেদ জামিলকে সহযোগিতা করে আসছি। বাণিজ্যিকভাবে সারাদেশে কালো টমেটো চাষের নানা পরিকল্পনা নেওয়া হচ্ছে। এই বিষয়ে আমাদের সহযোগিতা অব্যাহত থাকবে।

উল্লেখ্য, শৌখিন চাষি আহমেদ জামিল কালো টমেটোর পাশাপাশি বিভিন্ন জাতের টমেটো বীজ সংগ্রহ করে পরীক্ষামূলক চাষ করছেন।  এ ছাড়া তিনি কুমিল্লায় প্রথম চাষ করছেন তেল জাতীয় ফসল পেরিলা। যা ইতোমধ্যে চাষিদের কাছে জনপ্রিয় হয়ে উঠছে।

অমিত মজুমদার/এসপি