নওগাঁয় শীতকালীন আগাম সবজিতে লাভবান কৃষকরা
উত্তরাঞ্চলের জেলা নওগাঁকে খাদ্যভান্ডারের জেলা বলা হয়। ধান-চাল, আমের পাশাপাশি সবজিতেও সমৃদ্ধ এই জেলা। শীতের আগমনী বার্তা শুরু হয়েছে। তাই নওগাঁর বিভিন্ন বাজারে উঠতে শুরু করেছে নানা রকমের শাকসবজি।
বাণিজ্যিকভাবে চাষ করা শীতকালীন এসব শাকসবজি জেলার চাহিদা মিটিয়ে যাচ্ছে দেশের বিভিন্ন জেলায়। এ বছর বন্যা না হওয়ায় উঁচু জমিতে শীতকালীন বিভিন্ন জাতের সবজির চারা পরিচর্যায় ও বাজারজাতকরণে কৃষকরা এখন ব্যস্ততা সময় পার করছেন।
বিজ্ঞাপন
কৃষি সম্প্রসারণ অধিদফতর খামারবাড়ি নওগাঁর তথ্যমতে, চলতি মৌসুমে জেলায় মোট ২ হাজার ৭৮০ হেক্টর জমিতে শাকসবজির আবাদ হয়েছে।
উপজেলাভিত্তিক শীতকালীন শাকসবজি চাষের পরিমাণ নওগাঁ সদর উপজেলায় ৫৪০ হেক্টর, ধামইরহাট উপজেলায় ৫৭৫ হেক্টর, মহাদেবপুর উপজেলায় ২৬০ হেক্টর, পত্নীতলা উপজেলায় ২৪৫ হেক্টর, নিয়ামতপুর উপজেলায় ৩০০ হেক্টর, বদলগাছি উপজেলায় ৮০ হেক্টর, রানীনগর উপজেলায় ৮০ হেক্টর, আত্রাই উপজেলায় ৮০ হেক্টর, সাপাহার উপজেলায় ৩০ হেক্টর, পোরশা উপজেলায় ৭০ হেক্টর এবং মান্দা উপজেলায় ৫২০ হেক্টর।
তবে জেলায় যেসব শীতকালীন শাকসবজি বেশি পরিমাণ চাষ করা হয়েছে, সেগুলো হলো শিম ৫২০ হেক্টর, মুলা ১৩০ হেক্টর, বেগুন ২৮০ হেক্টর, ফুলকপি ৮৫ হেক্টর, বাঁধাকপি ৩০ হেক্টর, পালংশাক ১০৫ হেক্টর ও লালশাক ৭৫ হেক্টর।
সবুজে সবুজে ভরে ওঠা বিস্তীর্ণ মাঠজুড়ে এখন শোভা পাচ্ছে সারি সারি শিমগাছ, ফুলকপি, বাঁধাকপি, লাউ, বেগুন, মুলা, করলা, পটোল, বরবটি, পালং ও লালশাকসহ ইত্যাদি শাকসবজি। এত কৃষকের মুখেও হাসি ফুটেছে। তারা আশা করছেন, ভালো দামে এবার শাকসবজি বিক্রি করে দুপয়সা উপার্জন করতে পারবেন।
সদর উপজেলার বক্তারপুর ইউনিয়নেরএর বাচাড়ীগ্রামের কৃষক কুদ্দুস হোসেন ঢাকা পোস্টকে বলেন, শীতকালীন সবজি পালংশাক খাওয়া ও বিক্রি শেষ করে সেখানে আবার নমলা জাতের ফুলকপি রোপণ করি। আগাম শীতকালীন এই পালংশাক চাষ করে ভালো লাভবান হয়েছি। আমার অন্যান্য জমিতে এখনো অনেক ধরনের সবজি আছে। আশা করছি বিক্রি করে ভালো দাম পাব।
নওগাঁ কৃষি সম্প্রসারণ অধিদফতরের উপপরিচালক শামছুল ওয়াদুদ ঢাকা পোস্টকে জানান, চলতি বছর আবহাওয়া অনুকূলে থাকায় আগাম জাতের শাকসবজির ভালো উৎপাদন হয়েছে। করোনাকালীন ক্ষতি পুষিয়ে নিতে চাষিরা বেশি পরিমাণে শাকসবজি চাষ করেছেন। আগাম জাতের শাকসবজি বাজারে উঠতে শুরু করায় লাভবান হচ্ছেন চাষিরা।
তিনি আরও বলেন, এ বছর শিম, ফুলকপি, মুলাসহ কয়েক রকমের সবজি সবচেয়ে বেশি উৎপাদিত হয়েছে। বন্যা ও দুর্যোগ না হওয়ায় কৃষকরা বীজ বপন থেকে শুরু করে চারা পরিচর্যা সুষ্ঠুভাবে করতে পারছেন। এখন অল্প পরিসরে উৎপাদন শুরু হয়েছে। আস্তে আস্তে বাড়বে। স্থানীয় চাহিদা মেটানোর পাশাপাশি জেলার বাইরে সরবরাহ হচ্ছে। তবে ভরা মৌসুমেও কৃষকরা ভালো দাম পাবেন বলে আশা করছি।
মো. দেলোয়ার হোসেন/এনএ