‘ম্যাডাম কেমন আছেন? ম্যাডামের জন্য বুক খুব কাঁদে’
সুনামগঞ্জে সাবেক হুইপ এবং বিএনপি চেয়ারপার্সনের সাবেক উপদেষ্টা ফজলুল হক আসপিয়ার শোকসভা অনুষ্ঠিত হয়েছে।
রবিবার (২৪ অক্টোবর) বিকেলে শহরের জামতলার একটি কমিউনিটি সেন্টারে আয়োজিত শোকসভায় সভাপতিত্ব করেন জেলা বিএনপির সভাপতি কলিম উদ্দিন আহমদ মিলন।
বিজ্ঞাপন
শোকসভায় বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেন, জনাব আসপিয়া আমার অত্যন্ত শ্রদ্ধেয় ব্যক্তি ছিলেন। আমি তার রুহের মাগফেরাত কামনা করছি। আল্লাহ তাকে যেন বেহেস্ত নচিব করেন। সুনামগঞ্জের বিএনপি নেতাদের কাছে এ আবেদন রাখছি তারা যেন তাদের নেতার আর্দশ বাস্তবায়নের জন্য সর্বশক্তি নিয়োগ করেন।
তিনি আরও বলেন, আসপিয়া ব্যতিক্রমী মানুষ ছিলেন। উনার ইন্তেকালের কিছুদিন আগে নেতাকর্মীদের নিয়ে বাসায় গিয়েছিলেন। তখন আমার মনে হয়নি আমার প্রিয় মানুষকে এতো তাড়াতাড়ি হারাব। তার বয়স হলেও সবসময় যুবকের মতো উদ্যোমী ছিলেন। পরে খবর পেলাম তিনি করোনায় আক্তান্ত। কদিন পরে শুনলাম তিনি ইন্তেকাল করেছেন। আমি তখন তার জানাযায় এসে উপস্থিত হতে পারিনি। আমি তখনই ঠিক করেছিলাম যে, কখনো যদি সুনামগঞ্জ যাই তাঁর পরিবারের সঙ্গে দেখা করে আসব। যখন মিলন সাহেব গিয়ে বললেন তারা একটা শোকসভা করবেন। আমাকে বললে, সাথে সাথে আসার সম্মতি জানিয়েছিলাম।
আজ আমাদের কেন্দ্রীয় প্রোগ্রাম থাকা সত্বেও আমাদের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান মহোদয়ের কাছ থেকে ছুটি নিয়ে শুধু মাত্র এই মহান মানুষটির প্রতি শ্রদ্ধা জানানোর জন্য শোকসভায় উপস্থিত হয়েছি।
ফখরুল বলেন, আসপিয়া সাহেবরা সবসময় জন্মান না। আমরা অনেকেই বিভিন্ন কারণে রাজনীতি করি। কেউ পদপদবীর জন্য। কেউ সমাজে বিত্ত তৈরির জন্য। কিন্তু আসপিয়া সাহেবকে দেখেছি সবসময় জনগণের কল্যাণের জন্য রাজনীতি করতে। তিনি এমন একটা সময়ে চলে গেলেন যখন তাঁকে আমাদের খুব দরকার ছিলো। উনার বয়েস হয়েছিলো। কিন্তু কখনো তাকে বয়ষ্ক মনে হয়নি, বরং তরুণ মনে হতো। শেষ সময় যখন দেখা হলো তিনি আমাকে জিজ্ঞেস করলেন, ‘ম্যাডাম কেমন আছেন?’। ম্যাডামের জন্য বুক খুব কাঁদে।
সিলেট সিটি কর্পোরেশনের মেয়র আরিফুল হক চৌধুরী বলেন, সিলেট বিভাগের বর্ষিয়ান নেতা সকলের অভিভাবক ফজলুল হক আসপিয়া। আজকে আমাদের অত্যন্ত শোকের দিন। আসপিয়া সাহেবের সঙ্গে আমার দীর্ঘদিনের সর্ম্পক। আমার এখনও মনে আছে তাঁকে নিয়ে প্রথম সুনামগঞ্জে জাতীয়তাবাদী দল গঠন করি মাহমুদ আলী সাহেবের বাড়িতে। তখন অ্যাড. শহীদ আলী, বেগম ফাতেমা চৌধুরীসহ তাদের সফর সঙ্গী আমিও ছিলাম।
জেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক নুরুল ইসলাম নুরুলের সঞ্চালনায় শোকসভায় বক্তব্য দেন- খালেদা জিয়ার উপদেষ্টামণ্ডলীর সদস্য ডা. এনামুল হক, খ. আব্দুল মুক্তাদীর, ব্যারি. আব্দুস সামাদ, বিএনপির কেন্দ্রীয় কার্যনির্বাহী কমিটির সাংগঠনিক সম্পাদক ডা. শাখাওয়াত হাসান জীবন, সাবেক সংসদ সদস্য জহির উদ্দিন, ছাত্রনেতা কামরুজ্জামান রতন, সাবেক সংসদ সদস্য নাছির উদ্দিন চৌধুরী, বিএনপির কেন্দ্রীয় কার্যনির্বাহী কমিটির সদস্য মিজানুর রহমান চৌধুরী, সাবেক সংসদ সদস্য নজির হোসেন, প্রয়াত ফজলুল হক আসপিয়ার ছেলে ব্যারিস্টার আবিদুল হক, জেলা বিএনপির সহ-সভাপতি নাদীর আহমদ, অ্যাড. মঈনুদ্দিন সোহেল, অ্যাড. শেরেনুর আলী, আকবর আলী, সেলিম উদ্দিন আহমদ প্রমুখ।
সাইদুর রহমান আসাদ/আরআই