যেকোনো মূল্যে হিন্দুদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে হবে : ইনু
রংপুরের পীরগঞ্জসহ দেশের বিভিন্ন স্থানে পূজামণ্ডপে ও হিন্দু সম্প্রদায়ের লোকজনের বাড়িঘরে হামলার দায়দায়িত্ব প্রশাসন এড়াতে পারবে না বলে মন্তব্য করেছেন জাতীয় সমাজতান্ত্রিক দলের (জাসদ) সভাপতি হাসানুল হক ইনু।
তিনি বলেছেন, হামলা ঠেকানোর দায়িত্বে থাকা প্রশাসন ব্যর্থ হলো কেন? প্রশাসন কি অদক্ষ নাকি গাফিলতি আছে? প্রশাসনের ভেতরে ঘাপটি মেরে থাকা সাম্প্রদায়িক কর্মকর্তা ও কর্মচারীদের ইচ্ছাকৃত নিষ্ক্রিয়তা আছে কিনা তা সরকারকে তদন্ত করে দেখতে হবে। তা না হলে এই হামলার পুনরাবৃত্তি ঘটবে। ৩২ হাজার পূজামণ্ডপে নিরাপত্তা দেওয়া হলো, অথচ ৫০টিতে হামলা হলো। এর দায়-দায়িত্ব প্রশাসনকে নিতে হবে।
বিজ্ঞাপন
মঙ্গলবার (১৯ অক্টোবর) দুপুরে রংপুরের পীরগঞ্জের রামনাথপুর ইউনিয়নের বড় করিমপুর মাঝিপাড়া গ্রামে ক্ষতিগ্রস্ত হিন্দু সম্প্রদায়ের বাড়িঘর পরিদর্শনে এসে হাসানুল হক ইনু সাংবাদিকদের এসব কথা বলেন।
তিনি আরও বলেন, যারা এ ন্যাক্কারজনক ঘটনা ঘটিয়েছে, তারা দেশের ও সমাজের শত্রু। এদের দ্রুত বিচার আইনে তিন মাসের মধ্যে শাস্তি নিশ্চিত করা হোক। দৃশ্যমান শাস্তি হলে প্রতীয়মান হবে যে হামলাকারীরা রেহাই পায় না।
এ ঘটনায় ক্ষতিগ্রস্তদের পুনর্বাসনে রাষ্ট্রকে ব্যবস্থা নেওয়ার আহ্বান জানিয়ে ইনু বলেন, হিন্দু ভাই-বোনদের ক্ষয়ক্ষতিতে সহায়তা, বাড়িঘর নির্মাণসহ মন্দির পুনর্নির্মাণে রাষ্ট্রকেই ব্যবস্থা গ্রহণ করতে হবে। দেশের যে সব যায়গায় এ ধরনের ঘটনা ঘটেছে সেখানে রাষ্ট্রকে একই নীতি অনুসরণ করতে হবে। হিন্দুদের নিরাপত্তা, সংখ্যালঘুদের নিরাপত্তা, রাষ্ট্রের ধর্মনিরপেক্ষ চরিত্র রক্ষা ও অসাম্প্রদায়িকতা বজায় রাখার প্রশ্নে কোনো ধরনের আপস বা দর কষাকষি চলবে না। যেকোনো মূল্যে হিন্দুদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে হবে।
সাম্প্রদায়িক উসকানি ও দেশকে অস্থিতিশীল করার পেছনে বিএনপি-জামায়াতকে দায়ী করে হাসানুল হক ইনু বলেন, জঙ্গি, সন্ত্রাসী, জামায়াত-শিবিরের মাথার ওপরে যতদিন পর্যন্ত বিএনপি ছাতা ধরে থাকবে, ততদিন পর্যন্ত দেশে সাম্প্রদায়িক দাঙ্গা চলতে থাকবে। তাই এই বিশৃঙ্খলা সৃষ্টিকারী দলকে বয়কট করতে হবে। তবে প্রশাসনের প্রতি অনুরোধ নিরাপরাধ কাউকে গ্রেফতার বা হয়রানি করবেন না। কারা হামলাকারী সরকার তা জেনে গেছে। সুতরাং নিরীহ কাউকে ধরবেন না।
এ সময় তার সঙ্গে রংপুর জেলা জাসদের সাধারণ সম্পাদক কুমারেশ রায়, মহানগর সভাপতি সাহিদুল ইসলাম, জেলার সাংগঠনিক সম্পাদক মনিরুজ্জামান মাসুদ, সদর উপজেলা সভাপতি আব্দুর রাজ্জাক, সাধারণ সম্পাদক একরামুল হক, পীরগঞ্জ উপজেলা সভাপতি মীর মোহাম্মদ মানিক, জেলা ছাত্রলীগের (জাসদ) সাবেক সাধারণ সম্পাদক আনোয়ার হোসেন, যুবজোট নেতা জামাল হোসেন, রংপুর জেলা ছাত্রলীগের (জাসদ) সভাপতি ওসমান গণি শুভ্র প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।
ফরহাদুজ্জামান ফারুক/আরএআর