অন্যের জমিতে বসবাস করছেন নামদেল মিয়া ও তার পরিবার

‘দেহেন সরকার অনেক কিছু দেবাইছে। গ্রামোত শুনলোং সরকার নাকি জায়গাসহ বিল্ডিং ঘর তুলি দেইল। হামরা কি ঘর পাওয়ার যোগ্য নোয়াই। মানষের জায়গাত থাকি, মানুষ যদি বাইর করি দেয় দুইটা বাচ্চাক ধরি জামো কোনটাই, কোনো জায়গা জমি বলতে নাই হামার।’ এভাবেই আক্ষেপ নিয়ে কথাগুলো বলছিলেন কুড়িগ্রাম সদর উপজেলার পাঁচগাছী ইউনিয়নের মিলপাড়া গ্রামের নামদেল মিয়া (৪৫)।

রোববার (২৪ জানুয়ারি) ঢাকা পোস্টের সঙ্গে আলাপকালে তিনি এ সকল কথা বলেন। নামদেল আরও বলেন, ‘এলায় যদি মানুষ ভাঘে দেয়, বাচ্চা দুই টাক নিয়া যামো কোনডাই। দিন করি দিন খাই, কাম হলে খাই, না হলে উপোষ থাকি। এতো জার যাবাইছে না মেম্বার, চেয়ারম্যান একটা ঢুশাও দেইল না। সরকার না গরীব মানষেক ঘর দেইল হামাক যদি কাইও চোখ তুলি দেহিল হয়, কারও কি চোখতে পরি নাই।’

মুজিব শতবর্ষে দেশের সবচেয়ে দরিদ্র জেলা কুড়িগ্রামে ১ হাজার ৫৪৯ ভূমি ও গৃহহীন পরিবার ঘর পেলেও অনেকের ভাগ্যে তা জোটেনি।

স্থানীয়রা জানান, নামদেলের সংসার খুব কষ্টে চলে। তার কোনো জায়গা জমি নেই। তিনি দীর্ঘদিন ধরে অন্যের জমিতে বসবাস করে আসছেন। দিনমজুরের কাজ করে কোনো রকমভাবে খেয়ে না খেয়ে দিন পার করে আসছেন। তার সংসারে দুই ছেলে সন্তান ও স্ত্রী রয়েছে। নামদেলের থাকার ঘরটা ভাঙা ছিল, কিছুদিন আগে একটি সামাজিক সংগঠন তাকে একটা ঘর তুলে দেয়।

নামদেলের স্ত্রী মিনু বেগম বলেন, ‘হামরা মানষের জায়গাত থাকি, ঘরও নাই জায়গাও নাই। হামরাও তো ঘর জায়গা পাওয়ার যোগ্য। কই হামাক তো দেইল না কাইও। কত ঠান্ডা যাবাইছে না একটা কম্বল এ দেয় নাই। আর ঘর তো দূরের কথা।’ 

পাঁচগাছী ইউনিয়নের (ইউপি) চেয়ারম্যান মো. দেলোয়ার হোসেন জানান, ভূমি ও গৃহহীন পরিবারের তালিকা আমার ইউনিয়নে হয়নি। কারণ আমরা খাস জমি পাইনি। তবে অন্যান্য ইউনিয়নে তালিকা হয়েছে। 

কুড়িগ্রামের জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ রেজাউল করিম ঢাকা পোস্টকে বলেন, ওই পরিবারটি  ইউএনও বরাবর আবেদন দিলে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

এসপি