মামলার ভয়ে ৯৫ লাখ টাকা খোয়ালেন চিকিৎসক
আয়কর ও দুর্নীতি মামলার ভয়ে ৯৫ লাখ টাকা খোয়ালেন রাজশাহীর নামকরা চিকিৎসক ডা. আজিজুল হক আব্দুল্লাহ। প্রতারণা টের পেয়ে গত রোববার (১৭ অক্টোবর) তিনজনকে আসামি করে নগরীর রাজপাড়া থানায় মামলা করেন তিনি। ওইদিন রাতেই মামলার দুই আসামি তাসফিন আহমেদ (৩৩) ও তার ভাই ফয়সাল আহমেদকে (৩৮) গ্রেফতার করে পুলিশ। তবে এখনো পলাতক রয়েছেন মামলার আরেক আসামি রুবেল সরকার ওরফে রাসেল (৩৩)।
গ্রেফতার তাসফিন ও ফয়সাল নগরীর লক্ষ্মীপুর মিঠুর মোড় এলাকার এ কে এম মোতাহারুল ইসলামের ছেলে। তারা সম্পর্কে চিকিৎসক আজিজুল হক আব্দুল্লাহর স্ত্রীর বড় বোনের ছেলে।
বিজ্ঞাপন
পলাতক রাসেল নগরীর তেরখাদিয়া এলাকার বাসিন্দা। তিনি গ্রেফতার ফয়সাল আহমেদের ভায়রা। নিজেকে ডিবি পুলিশ ও ওয়ারেন্ট অফিসার পরিচয়ে ওই চিকিৎসকের সঙ্গে প্রতারণায় যুক্ত হন রাসেল।
ভুক্তভোগী ডা. আজিজুল হক রাজশাহী মেডিকেল কলেজ (রামেক) হাসপাতালের মেডিসিন বিভাগের সাবেক প্রধান। তিনিও নগরীর বাকির মোড় এলাকার বাসিন্দা।
নগরীর রাজপাড়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মাজাহারুল ইসলাম এ তথ্য নিশ্চিত করে বলেন, জিজ্ঞাসাবাদে প্রতারণার মাধ্যমে বিপুল অংকের টাকা হাতিয়ে নেওয়ার কথা স্বীকার করেছেন তাসফিন ও ফয়সাল। এই মামলায় সোমবার তাদের আদালতের মাধ্যমে কারাগারে পাঠানো হয়েছে। জিজ্ঞাসাবাদের জন্য তাদের সাত দিনের রিমান্ড চেয়ে মঙ্গলবার (১৯ অক্টোবর) দুপুরের দিকে আদালতে আবেদন জমা দেওয়া হয়েছে। এছাড়াও পলাতক আসামিকেও গ্রেফতারের চেষ্টা চলছে।
ওই চিকিৎসকের বরাত দিয়ে ওসি জানান, আত্মীয়তার সূত্রে ওই চিকিৎসকের বাসায় যাতায়াত ছিল অভিযুক্তদের। তারা হাইকোর্টে ভুয়া দুর্নীতির মামলা ও আয়করের ভুয়া কাগজপত্র তৈরি করে ওই চিকিৎসককে ভয় দেখান। ভয় দেখিয়ে চলতি বছরের ১৫ জুলাই থেকে ৩০ সেপ্টেম্বর পর্যন্ত ওই চিকিৎসকের কাছ থেকে ধাপে ধাপে ৯৫ লাখ টাকা হাতিয়ে নেন তিনজন।
অর্থ হাতিয়ে নেওয়ার সময় তারা ওই চিকিৎসককে জানান, দুর্নীতি দমন কমিশন, আয়কর বিভাগ এবং হাইকোর্টের রায়ের কাগজ বের হতে সময় লাগবে। এ বিষয়ে কাউকে কিছু না জানানোর পরামর্শ দেন তারা। জানাজানি হলে তার এবং তার পরিবারের বড় ধরনের ক্ষতি হতে পারে বলেও ভয় দেখান।
পরে খোঁজ নিয়ে বিষয়টি ভুয়া বলে নিশ্চিত হন চিকিৎসক। তখনই প্রতারণার বিষয়টিও নিশ্চিত হন তিনি। পরে হাতিয়ে নেওয়া অর্থ ফেরত চান অভিযুক্ত ফয়সালের কাছে। তখন বিষয়টি সরাসরি অস্বীকার করেন ফয়সাল। এরপরই থানায় মামলা করেন ভুক্তভোগী চিকিৎসক।
ওসি মাজাহারুল ইসলাম বলেন, মামলা দায়েরের পরপরই রাজশাহী মহানগর পুলিশের বোয়ালিয়া বিভাগের উপ-কমিশনার সাজিদ হোসেনের তত্ত্বাবধানে আসামিদের গ্রেফতার প্রক্রিয়া শুরু হয়। ওই রাতেই নিজ বাড়ি থেকে আসামি দুই ভাইকে গ্রেফতার করা হয়।
ফেরদৌস সিদ্দিকী/আরএআর