গৃহহীনদের ঘর পেলেন দুবারের সাবেক এমপি
এনামুল হক ওরফে জজ মিয়া ময়মনসিংহের গফরগাঁও পৌর শহর ও ঢাকায় বিলাসবহুল গাড়ি-বাড়ির মালিক ছিলেন। সংসদ সদস্য হিসেবে দায়িত্ব পালন করেছেন দুবার। তিন বিয়ে করেছিলেন। একসময় তার সব সহায়-সম্পত্তি, গাড়ি-বাড়ি দুই স্ত্রী ও সন্তানদের নামে লিখে দিয়ে হন গৃহহীন।
সর্বশেষ গফরগাঁও পৌর শহরে ১২ শতাংশ জমি মসজিদের নামে লিখে দিয়ে এক রুমের ভাড়া বাসায় থাকছিলেন তৃতীয় স্ত্রী-সন্তান নিয়ে। খাট কেনার সামর্থ্য না থাকায় মেঝেতে ঘুমাতেন জজ মিয়া।
বিজ্ঞাপন
গৃহহীন সেই দুবারের এমপি জজ মিয়া এবার পেলেন প্রধানমন্ত্রীর উপহার জমি ও ঘর। শনিবার (২৩ জানুয়ারি) উপজেলা পরিষদ সম্মেলন কক্ষে এনামুল হক জজ মিয়াকে জমির দলিলসহ বাড়ি বুঝিয়ে দেওয়া হয়।
বিষয়টি নিশ্চিত করে গফরগাঁও পৌরসভার মেয়র ইকবাল হোসেন সুমন বলেন, স্থানীয় সংসদ সদস্য ফাহমী গোলন্দাজ বাবেল নিজ হাতে তাকে ঘরটি বুঝিয়ে দিয়েছেন।
খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, সাবেক রাষ্ট্রপতি ও জাতীয় পার্টির চেয়ারম্যান এইচ এম এরশাদের পালিত মেয়ে নাজুকে ১৯৭২ সালে বিয়ে করেন এনামুল হক। ১৯৮৬ ও ১৯৮৮ সালে ময়মনসিংহ-১০ আসন থেকে জাতীয় পার্টির হয়ে দুবার সংসদ সদস্য হন তিনি।
জজ মিয়ার প্রথম স্ত্রী নাজু এক মেয়েকে নিয়ে আমেরিকায় থাকেন। দ্বিতীয় স্ত্রী নাছিমা হক ঢাকার পুরানা পল্টন ও মিরপুর কাজীপাড়ায় দুই সন্তান নিয়ে দুটি বাড়িতে থাকেন। সহায়-সম্পদ যা ছিল সবই দুই স্ত্রী ও সন্তানদের নামে লিখে দিয়েছিলেন এনামুল হক। এরপর তিনি তৃতীয় স্ত্রী রুমার সঙ্গে পৌর শহরের ২ নম্বর ওয়ার্ডে ভাড়া বাসায় আট বছরের সন্তান নুরে এলাহীকে নিয়ে মানবেতর জীবন কাটাচ্ছিলেন।
ময়মনসিংহের জেলা প্রশাসক (ডিসি) মিজানুর রহমান বলেন, প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশনা বাস্তবায়নের লক্ষ্যে ময়মনসিংহে চার হাজার ৭০৮ জন ভূমিহীন ও গৃহহীন পরিবারের তালিকা করা হয়। এর মধ্যে মুজিব শতবর্ষে ভূমিহীন ও গৃহহীনদের গৃহ নির্মাণের জন্য প্রথম পর্যায়ে শনিবার জেলার ১৩ উপজেলায় ১৪৪টি স্পটে এক হাজার ৩০৫টি বাড়ি হস্তান্তর করা হয়।
ডিসি মিজানুর রহমান বলেন, সদরে ২৫০, গফরগাঁওয়ে ২০০, ভালুকায় ১৯৯, গৌরীপুরে ১০২, হালুয়াঘাটে ১০০, ফুলপুরে ৯৭, নান্দাইলে ৬২, ঈশ্বরগঞ্জ, মুক্তাগাছা, ত্রিশাল, ফুলবাড়িয়া ও তারাকান্দায় ৫০টি করে এবং ধোবাউড়ায় ৪৫টি ঘর নির্মাণ করা হয়। তালিকায় থাকা বাকিদেরও পর্যায়ক্রমে প্রকল্পের আওতায় আনা হবে।
এএম