মানিকগঞ্জের সিংগাইরে পাবজি নিয়ে বিরোধের জেরে মারধরের ঘটনায় আহত রাজু নামের কিশোর ২ দিন চিকিৎসাধীন থাকার পর আজ শনিবার ভোরে মারা গেছে। এ ঘটনায় রাজুর স্বজনরা অভিযুক্ত কিশোর আলিফের (১৬) বাড়ি ঘেরাও করে।

পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী ঘটনাস্থলে গেলে তারা বাধা দেয় ও ইটপাটকেল নিক্ষেপ করে। এ ঘটনায় তিন পুলিশ সদস্য আহত হন। শনিবার (১৬ অক্টোবর) দুপুরে উপজেলার সায়েস্তা ইউনিয়নের দক্ষিণ সাহরাইল গ্রামে এ ঘটনা ঘটে।

জানা গেছে, দক্ষিণ সাহরাইল গ্রামের কোরাইশির ছেলে আলিফের (১৬) সঙ্গে পাবজি খেলা নিয়ে বিরোধ বাঁধে একই গ্রামের মোসলেম উদ্দিনের ছেলে রাজুর (১৪)। এর জেরে আলিফ পরিকল্পিতভাবে বৃহস্পতিবার (১৪ অক্টোবর) সন্ধ্যায় রাজুকে পার্শ্ববর্তী কালীগঙ্গা নদীর তীরে নিয়ে ইট দিয়ে মাথায় আঘাত করে। পরে আহত অবস্থায় রাজুকে ফেলে দ্রুত ঘটনাস্থল থেকে চলে যায় আলিফ।

এদিকে, রাজু বাড়িতে না ফেরায় অনেক খোঁজাখুঁজির পর তার পরিবার আলিফের বাড়িতে যায়। তাকে নিয়েও অনেক খোঁজাখুঁজি করে। রাত ৯টার দিকে স্থানীয় ব্যবসায়ী নুরু মিয়া বাজার থেকে ফেরার পথে গোঙানির শব্দ শুনে পরিবারকে জানান।

পরে সেখান থেকে রাজুকে উদ্ধার করে সাহরাইল ইব্রাহিম মেমোরিয়াল হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। অবস্থা সংকটাপন্ন হওয়ায় রাজুকে সাভার এনাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। সেখানে চিকিৎসাধীন অবস্থায় শনিবার (১৬ অক্টোবর) ভোরে রাজুর মৃত্যু হয়।

মৃত্যুর খবর এলাকায় ছড়িয়ে পড়লে রাজুর স্বজন এবং এলাকাবাসী দুপুর ১২টার দিকে আলিফের বাড়ি ঘেরাও করে। এ সময় অভিযুক্ত আলিফকে ছিনিয়ে নেওয়ার চেষ্টা করে। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে ঘটনাস্থলে যায় পুলিশ। বিক্ষুব্ধ জনতার হাত থেকে আলিফকে উদ্ধার করতে গেলে পুলিশের সঙ্গে সংঘর্ষ বেঁধে যায়। এতে তিন পুলিশ সদস্য আহত হয়েছেন।

এ ঘটনায় অভিযুক্ত আলিফসহ তার পরিবারের তিন সদস্যকে উদ্ধার করে সিংগাইর থানায় নেওয়া হয়েছে। তবে কী কারণে রাজুকে হত্যা করা হয়েছে তা বলতে পারেনি পুলিশ। তবে পাবজি খেলা নিয়ে রাজুর সঙ্গে আলিফের বিরোধ ছিল বলে জানা গেছে।

মানিকগঞ্জের পুলিশ সুপার (এসপি) গোলাম আজাদ খান বলেন, সকালে আলিফের বাড়ি ঘেরাও করার খবর পেয়ে আমাদের সদস্যরা ঘটনাস্থলে যান। আলিফকে উদ্ধারকালে উত্তেজিত জনতার সাথে আমাদের সদস্যদের সংঘাত বাঁধে। এতে আমাদের ৩ জন সদস্য আহত হন। দুপুরে আলিফসহ তার পরিবারের ৩ সদস্যকে আটক করে থানায় আনা হয়েছে।

সোহেল হোসেন/আরআই