এবারও ইছামতিতে বসছে না বাংলাদেশ-ভারত মিলনমেলা
শুরু হতে যাচ্ছে সনাতন ধর্মাবলম্বীদের সর্ববৃহৎ ধর্মীয় উৎসব শারদীয় দুর্গা পূজা। প্রতিবছর ব্যাপক উৎসাহ উদ্দীপনার মধ্য দিয়ে পূজার সকল আনুষ্ঠানিকতা শেষে বিজয়া দশমীতে আর্ন্তজাতিক সীমানা নির্ধারণী ইছামতি নদীতে একসাথে প্রতিমা বিসর্জন করেন বাংলাদেশ-ভারতের সনাতন ধর্মাবলম্বীরা।
প্রতিমা বিসর্জন ঘিরে ইছামতির দু’পাড়ে বাংলাদেশ ও ভারতের লাখো মানুষের উপস্থিতিতে একটি মিলন মেলার ঐতিহ্য রয়েছে। সীমানার গণ্ডি এবং জাতি-ধর্ম-বর্ণের ভেদাভেদ ভুলে সৌহার্দ্য ও সম্প্রীতির মেলবন্ধনে একসাথে আনন্দ উৎসবে মেতে ওঠেন দু’দেশের লাখো মানুষ। সাতক্ষীরার দেবহাটা উপজেলার ইছামতি নদীর বুক চিরে ভাসতে থাকে বাংলাদেশ ও ভারতের হাজারো নৌকা, ট্রলার, লঞ্চ। দিনটিতে থাকে না আইনের কোনো বাধ্যবাধকতা। পাসপোর্ট-ভিসা ছাড়াই দিনটিতে কয়েক ঘণ্টার জন্য ভারতের মানুষ বাংলাদেশে এবং বাংলাদেশের মানুষ ভারতে প্রবেশ করতে পারেন। বেড়ানো, কেনাকাটা এবং ভিন্ন দেশে থাকা আত্মীয় স্বজনদের সাথে দেখা করে সন্ধ্যার আগেই সবাই আবার ফিরে যান যার যার দেশে।
বিজ্ঞাপন
তবে সর্বশেষ ২০১৭ সালে ইছামতি নদীর বুকে ভেসেছিল এমন সৌহার্দ্যপূর্ণ মিলন মেলার তরী। পরবর্তীতে আইনি জটিলতার কারণে বাংলাদেশ ও ভারতের উচ্চ পর্যায়ের প্রশাসনিক সিদ্ধান্তে বন্ধ হয়ে যায় শত বছরের ঐতিহ্যবাহী এ মিলনমেলা। তবুও প্রতিবছর দূর্গা পূজা এলেই সেই মেলার অপেক্ষা করতে থাকেন দু’দেশের মানুষ।
এবারও বাংলাদেশ ও ভারতের উৎসুক লাখো মানুষের সেই আকাঙ্ক্ষা অপূর্ণ থাকবে। ১৫ অক্টোবর প্রতিমা বিসর্জনকে ঘিরে ইছামতির দু’পাড়ে বসবে না সৌহার্দ্য ও সম্প্রীতির সেই মিলন মেলা।
প্রতিমা বিসর্জনকে ঘিরে আগাম পতাকা বৈঠকে এসব সিদ্ধান্ত নিয়েছেন দুই বাংলার উচ্চ পর্যায়ের প্রশাসনিক কর্মকর্তারা। এছাড়া ইছামতি নদীর নোম্যান্স ল্যান্ড বরাবর রশি টানিয়ে সীমানা নির্ধারণসহ যাতে কোনো দেশের প্রতিমাবাহী ট্রলার আর্ন্তজাতিক সীমারেখা অতিক্রম করতে না পারে সেজন্য থাকবে বিজিবি ও বিএসএফের টহল।
করোনা সংক্রমণ এড়াতে প্রশাসনিক সিদ্ধান্ত মেনে নিজ নিজ সীমানায় শান্তিপূর্ণভাবে ভারতীয় সময় দুপুর ১টা থেকে বিকাল ৪টা এবং বাংলাদেশ সময় দুপুর দেড়টা থেকে সাড়ে চারটার মধ্যে প্রতিমা বিসর্জন দিবে উভয় দেশের মানুষ।
আকরামুল ইসলাম/এনএফ