ভারতের বিভিন্ন প্রদেশে অতিবৃষ্টির কারণে পেঁয়াজ নষ্ট হয়ে বুকিং রেট বাড়ায় হিলি স্থলবন্দর দিয়ে কমেছে পেঁয়াজের আমদানি। চাহিদার তুলনায় আমদানি কমায় পাইকারি ও খুচরা বাজারে বেড়েছে আমদানিকৃত সব ধরনের পেঁয়াজের দাম। দুদিনের ব্যবধানে পাইকারি বাজারে প্রতি কেজি পেঁয়াজের দাম বেড়েছে ১৫ টাকা আর খুচরা বাজারে বেড়েছে ২০ টাকা। ভারতে বুকিং রেট বৃদ্ধি এবং অতিরিক্ত গরমে অপরিপক্ক পেঁয়াজ আমদানি করে লোকসানের আশঙ্কায় আমদানির পরিমাণ কমানো হয়েছে বলে জানান ব্যবসায়ীরা। যার ফলে দেশের বাজারে পেঁয়াজের দাম উর্দ্ধমূখী। 

সোমবার (৪ অক্টোবর) দুপুরে হিলি বন্দরের পাইকারি ও খুচরা বাজার ঘুরে দেখা যায়, বন্দরে দুদিনের ব্যবধানে আমদানিকৃত সব ধরনের পেঁয়াজের দাম বেড়েছে। পাইকারিতে দুদিন আগে যে পেঁয়াজ বিক্রি হয়েছে ৩০-৩২ টাকা কেজি দরে সে পেঁয়াজ আজ কেজিতে ১৫ টাকা বেড়ে বিক্রি হচ্ছে ৪৫ টাকা কেজি দরে। অন্যদিকে খুচরা বাজারে কেজিতে ২০ টাকা বেড়ে প্রতিকেজি বিক্রি হচ্ছে ৫০ থেকে ৫৫ টাকা কেজি দরে। প্রতিবছর অক্টোবর মাসে ঠিক এ সময়ে পেঁয়াজের দাম নানা অজুহাতে বেড়ে যায়। আর এতে চরম বিপাকে পড়তে হয় সাধারণ ক্রেতাদের।

বন্দরের ব্যবসায়ীদের তথ্যমতে, প্রতিদিন এ বন্দরে ৫০ ট্রাক পেঁয়াজের চাহিদা রয়েছে সেখানে বর্তমানে আমদানি হচ্ছে ২০ থেকে ২৫ ট্রাক। কাস্টমসের তথ্য বলছে গেলো দুসপ্তাহে আমদানি হয়েছে ১শ ৭২ ট্রাকে মাত্র সাড়ে ৪ হাজার মেট্টিক টন।

হিলির খুচরা বিক্রেতা শাকিল বলেন, হঠাৎ করে স্থানীয় বাজারে পেঁয়াজের সরবরাহ কমে যাওয়ায় দাম বৃদ্ধি পেয়েছে। গেল সপ্তাহ থেকে সব ধরনের পেঁয়াজের দাম কেজিতে ১৫ থেকে ২০ টাকা বেড়েছে যে কারণে বাজারে বিক্রিও কমে গেছে। 

হিলি বন্দরের পাইকার রহমত আলী বলেন, হঠাৎ করে বন্দরের পেঁয়াজের আমদানি কমের অযুহাতে আমদানিকারকরা পেঁয়াজের দাম বেশি চাচ্ছে। বেশি দামে পেঁয়াজ কিনতে আমাদের সমস্যায় পড়তে হচ্ছে। কারণ আড়ৎগুলোতে ক্রেতা কমে গেছে, বিক্রিও কমে গেছে। 

হিলি বাজারে পেঁয়াজ কিনতে আসা সৈকত, আশরাফ ও নাবিল নামের তিনজন ক্রেতা বলেন, কয়েকদিন থেকে বাজারে পেঁয়াজের দাম বেশি চাচ্ছে। আমরা সাধারণ ক্রেতা বেশি দামে পেঁয়াজ কিনতে আমাদের সমস্যা হচ্ছে। দাম কম হলে আমাদের জন্য ভালো হয়।

হিলি স্থলবন্দরের আমদানিকারক গ্রুপের সভাপতি হারুন উর রশিদ বলেন, হিলি স্থলবন্দর দিয়ে আগের তুলনায় পেঁয়াজ অর্ধেক আমদানি হচ্ছে। কারণ ভারতের বিভিন্ন প্রদেশে অতিবৃষ্টির ফলে পেঁয়াজের উৎপাদন নষ্ট হয়েছে। সে কারণে ভারতের ব্যবসায়ীরা বুকিং রেট বাড়িয়ে দেয়ায় বেশি দামে কিনে লোকসান গুনতে হচ্ছে। অন্যদিকে যেসব পেঁয়াজ ভারত রফতানি করছে সেগুলো অপরিপক্ক হওয়ায় রাস্তায় পচে যাচ্ছে। তাই লোকসানের আশঙ্কায় আমদানিটা কম করছি।

হিলি পানামা পোর্টের জনসংযোগ কর্মকর্তা সোহরাব হোসেন প্রতাব মল্লিক ঢাকা পোস্টকে বলেন, হিলি বন্দর দিয়ে পেঁয়াজের আমদানি স্বাভাবিক রয়েছে। পেঁয়াজ যেহেতু কাঁচামাল তাই পণ্যটি দ্রুত ছাড়করণে সব ধরনের সহযোগিতা দিয়ে যাচ্ছি আমরা।

সোহেল রানা/আরআই