পাবনায় ডেঙ্গু আক্রান্ত রোগীর সংখ্যা দিন দিন বাড়ছে। গত কয়েক দিনে পাবনা জেনারেল হাসপাতালে ১৬ জন ডেঙ্গু রোগী ভর্তি হয়েছেন। তাদের অধিকাংশই ঢাকা থেকে আক্রান্ত হয়ে পাবনায় এসেছেন বলে হাসপাতাল সূত্রে জানা গেছে।

সোমবার (০৪ অক্টোবর) সকালে পাবনা জেনারেল হাসপাতালের পরিসংখ্যান কর্মকর্তা সোহেল রানা ঢাকা পোস্টকে বলেন, ১৬ জন রোগীর মধ্যে প্রায় সবাই ঢাকা থেকে এসেছেন। কয়েকজন পাবনা থেকে আক্রান্ত হয়েছেন। আক্রান্তদের মধ্যে ১৪ জন চিকিৎসা শেষে বাড়ি ফিরে গেছেন। বর্তমানে হাসপাতালে দুজন ডেঙ্গু রোগী ভর্তি রয়েছেন।

হাসপাতালে ভর্তি দুজনের সঙ্গে আলাপ করে জানা যায়, একজনের কর্মক্ষেত্র পাবনায়। আরেকজন ঢাকায় পড়ালেখা করেন। অন্যদের কেউ ছাত্র, কেউ শ্রমিক, কেউ ব্যবসায়ী আবার কেউ গার্মেন্টসে কাজ করেন। ঢাকা থেকে ফেরার পরপরই তারা জ্বরে আক্রান্ত হন।

কথা হয় কুষ্টিয়া ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী শরিফুল ইসলামের সঙ্গে। তিনি বলেন, অনার্স শেষ করে বিসিএসের প্রস্তুতি নিচ্ছি।ঢাকার মিরপুরে থাকি। ১০ দিন আগে রুমমেট বন্ধুর ডেঙ্গু শনাক্ত হয়। এরপরের দিন পাবনা চলে আসি। এরপর তীব্র জ্বর হয়। পরীক্ষা করে জানতে পারি ডেঙ্গু হয়েছে।

শহরের পার-হাউজপাড়া এলাকার ব্যবসায়ী আতিকুল ইসলাম জানান, ১৫ দিন ধরে ডেঙ্গুতে আক্রান্ত হয়ে হাসপাতালে ভর্তি আছি। তবে আগের চেয়ে এখন সুস্থ মনে হচ্ছে। 

পাবনা জেনারেল হাসপাতালের মেডিসিন বিভাগের মেডিকেল অফিসার ডা. সেলিমুজ্জামান বলেন, বেশির ভাগ আক্রান্ত রোগী জেলার বাইরে থেকে আসছেন। কিছু আবার পাবনা থেকেই আক্রান্ত হচ্ছেন। 

পাবনা জেনারেল হাসপাতালের সহকারী পরিচালক ডা. কেএম আবু জাফর ঢাকা পোস্টকে  জানান, পাবনায় ডেঙ্গু আক্রান্তের সংখ্যা বাড়ছে। অল্প আক্রান্তদের প্রাথমিক চিকিৎসাসেবা দিয়ে বাড়িতে পাঠিয়ে দেওয়া হচ্ছে। জটিলদের হাসপাতালে ভর্তি রাখা হচ্ছে। হাসপাতালেই শনাক্তের সরঞ্জামাদি রয়েছে। কাউকে বাইরে পরীক্ষা করাতে হচ্ছে না। কেউ বেশি জটিলতায় থাকলে আমরা ঢাকায় পাঠানোর ব্যবস্থা করব।

পাবনার সিভিল সার্জন ডা. মনিসর চৌধুরী ঢাকা পোস্টকে জানান, আক্রান্তরা ঢাকা থেকে অসুস্থ হয়ে এসেছেন। যারা ভর্তি আছেন তাদের সঠিকভাবে চিকিৎসা দেওয়া হচ্ছে। অনেকের উন্নতি হওয়ায় তারা বাড়ি ফিরে যাচ্ছেন। আবার কেউ আক্রান্ত হয়ে হাসপাতালে ভর্তি হচ্ছেন। দুশ্চিন্তার কোনো কারণ নেই।

তিনি বলেন, জেলায় এখন পর্যন্ত এডিস মশার লার্ভা পাওয়া যায়নি। প্রায়ই আমরা বিভিন্ন সন্দেহজনক স্থানে পরীক্ষা নিরীক্ষা করছি। সচেতনতামূলক লিফলেট বিতরণ করছি। ময়লা-আবর্জনা জমে আছে এমন এলাকায় স্প্রে করা হচ্ছে। সামাজিকভাবেও বিষয়টি নিয়ে আলোচনার উদ্যোগ নেওয়া হচ্ছে। 

রাকিব হাসনাত/এসপি