বন্ধুরা যখন দৌড়াবে, ফারহানাও তখন ছুটবে
সহপাঠীরা যখন ছুটোছুটি করত তখন নিদির্ষ্ট একটি জায়গায় বসে মলিন মুখে চেয়ে থাকত ছয় বছর বয়সী ফারহানা আক্তার। ইচ্ছে থাকলেও বন্ধুদের সঙ্গে ছুটতে পারত না সে। কারণ, ফারহানা প্রতিবন্ধী। তার চলাচল অনেকটাই নির্ভর করত মায়ের ইচ্ছের ওপর। প্রয়োজন অনুযায়ী মা তাকে কোলে নিয়ে পৌঁছে দিত বিভিন্ন জায়গায়। তবে, এখন কিছুটা হলেও কষ্ট কমল মায়ের। পাশাপাশি, ইচ্ছে পূরণের সুযোগ পেল ফারহানাও। এখন সে ইচ্ছে করলেই নিজেই হুইল চেয়ার নিয়ে বিভিন্ন জায়গায় চলাচল করতে পারবে। বন্ধুরা যখন দৌড়াবে, ফারহানাও তখন ছুটবে হুইল চেয়ার নিয়ে।
শনিবার (২ অক্টোবর) বিকেলে ঠাকুরগাঁও সদর উপজেলা সেনুয়া ইউনিয়নে হঠাৎ করেই ফারহানার বাড়িতে হুইল চেয়ার নিয়ে হাজির হন জেলা স্বেচ্ছাসেবকলীগের সভাপতি নজমুল হুদা শাহ অ্যাপোলো। দলের কোনো এক কর্মীর কাছে শুনেছিলেন একটি হুইল চেয়ারের অভাবে অনেক কষ্ট করছে ৬ বছরের শিশু ফারহানা।
বিজ্ঞাপন
এটি শুনে স্বেচ্ছাসেবকলীগের এই নেতা আর বসে থাকতে পারেননি। নিজ অর্থায়নে শিশুটিকে একটি হুইল চেয়ার কিনে দিয়েছেন তিনি। এতে যেমন তৃপ্তি পেয়েছেন নজমুল হুদা শাহ অ্যাপোলো, তেমনি খুশিতে ভরপুর ফারহানার পরিবারও।
এ সময় ফারহানার বাবা ফরিদ বলেন, ছোট থেকেই আমার মেয়েটির সমস্যা। দিনমজুর মানুষ আমি। অনেক কষ্টে সংসার চালাই। হুইল চেয়ার কিনব কীভাবে? আজ অ্যাপোলো সাহেব আমার মেয়েকে একটি চেয়ার দিয়েছেন। অনেক খুশি হয়েছি। মেয়ের মুখে হাসি দেখে মনটা ভরে গেছে। ধন্যবাদ ভাইকে।
এ বিষয়ে ঠাকুরগাঁও জেলা স্বেচ্ছাসেবকলীগের সভাপতি নজমুল হুদা শ্যাহ অ্যাপোলো ঢাকা পোস্টকে বলেন, আমাদের দলের একজন আমাকে শিশুটির বিষয়টি অবগত করেছিল। এরপর সত্যতা যাচাইয়ের পর আজ একটি চেয়ার কিনে দিয়েছি। প্রধানমন্ত্রীর জন্মদিন উপলক্ষে হুইল চেয়ারটি আমার ব্যক্তিগত অর্থায়নে তাকে উপহার দিয়েছি। আমি মনে করি সমাজের এসব অসহায় মানুষদের পাশে সকলকে এগিয়ে আসার প্রয়োজন।
এসময় উপস্থিত ছিলেন জেলা স্বেচ্ছাসেবক লীগের বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি সম্পাদক স্বপন কুমার ঘোষ, সদর উপজেলা স্বেচ্ছাসেবক লীগের সাধারণ সম্পাদক আব্দুল ওয়াফু তপু, দপ্তর সম্পাদক আবু হাসনাত মশিউর রহমান রুমন, জেলা স্বেচ্ছাসেবক লীগের সদস্য সাইমন, পৌর স্বেচ্ছাসেবকলীগের সাধারণ সম্পাদক নূর ইসলাম তালাশ, সেনুয়া ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সভাপতি নবেল সিং, সাধারণ সম্পাদক রবিউল ইসলাম, আকচা ইউনিয়ন স্বেচ্ছাসেবকলীগের সভাপতি শামিম ও সাধারণ সম্পাদক কানু।
নাহিদ রেজা/এমএএস