লক্ষ্মীপুরে দলীয় নেতাকর্মীদের শোডাউনে যুবলীগ সভাপতির হামলা
লক্ষ্মীপুর জেলা যুবলীগের সভাপতি একেএম সালাহ উদ্দিন টিপু ও তার অনুসারীরা দলীয় নেতাকর্মীদের শোডাউনে হামলা চালিয়েছেন বলে অভিযোগ উঠেছে। এতে জেলা ছাত্রলীগের সাবেক সাধারণ সম্পাদক সৈয়দ নুরুল আজিম বাবর ও সদর উপজেলা যুবলীগের যুগ্ম আহ্বায়ক রুপম হাওলাদারসহ অন্তত ১২ নেতাকর্মী আহত হয়েছেন। বাবর ও রুপম জেলা যুবলীগের সাধারণ সম্পাদক প্রার্থী।
মঙ্গলবার (১২ সেপ্টেম্বর) দুপুর ১২টার দিকে লক্ষ্মীপুর পৌর শহরের গণকবর ও শিশু পরিবার এলাকায় এ হামলার ঘটনা ঘটে। এতে দলীয় নেতাকর্মীদের মাঝে আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়েছে। দুপুর ২টার দিকে যুবলীগ নেতা টিপুর হাতে ব্যান্ডেজ লাগানো একটি ছবি ফেসবুকে ছড়িয়ে পড়ে। ছবিটি সদর হাসপাতালের আবাসিক মেডিকেল অফিসারের (আরএমও) কক্ষ থেকে তোলা।
বিজ্ঞাপন
জানা গেছে, বর্ধিত সভাকে কেন্দ্র করে প্রার্থিতা ঘোষণা করে নেতাকর্মীরা প্রচার-প্রচারণা চালাচ্ছেন। এতে ক্ষিপ্ত হয়েই টিপু ও তার অনুসারীদের নিয়ে হামলা চালিয়েছে বলে খবর পাওয়া গেছে। আহতদের সদর হাসপাতাল ও স্থানীয় ক্লিনিকে চিকিৎসা দেওয়া হচ্ছে।
আহত অন্যরা হলেন- জামাল উদ্দিন, আবদুল মতিন, মো. খোকন, জামাল হোসেন ও মামুন হোসেনসহ ১২ জন।
প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, মঙ্গলবার দুপুরে লক্ষ্মীপুর পৌর আধুনিক বিপনী বিতানের সোনার বাংলা চাইনিজ রেস্টুরেন্টে জেলা যুবলীগের বর্ধিত সভার আয়োজন করা হয়। ২০১৭ সালের ২৩ নভেম্বর টিপুকে সভাপতি ও আবদুল্লাহ আল নোমানকে সাধারণ সম্পাদক করে তিন বছরের জন্য জেলা যুবলীগের কমিটি ঘোষণা করা হয়। এরপর নানা বিতর্কে পূর্ণাঙ্গ কমিটি অনুমোদন দেওয়া হয়নি। যুবলীগের কমিটি এখন মেয়াদোত্তীর্ণ। কমিটি গঠনের প্রায় চার বছর পর এ প্রথম বর্ধিত সভার আয়োজন করা হয়েছে।
বর্ধিত সভায় প্রধান অতিথি যুবলীগের প্রেসিডিয়াম সদস্য হাবিবুর রহমান পবন, বিশেষ অতিথি যুবলীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ব্যারিস্টার শেখ ফজলে নাঈম, উপপরিবেশ বিষয়ক সম্পাদক শামছুল ইসলাম পাটওয়ারী ও সহ-সম্পাদক অ্যাডভোকেট জয়নাল আবেদিন রিগ্যান উপস্থিত হয়েছেন।
পূর্বনির্ধারিত কর্মসূচিতে অংশগ্রহণ করতে কেন্দ্রীয় নেতারা ঢাকা থেকে দুপুরে রামগঞ্জ হয়ে লক্ষ্মীপুরে এসেছেন। এতে অন্তত ১০ জন সাবেক যুবলীগ ও ছাত্রলীগ নেতা প্রার্থিতা ঘোষণা করে কেন্দ্রীয় নেতাদের শুভেচ্ছা জানিয়ে শহরে বিলবোর্ড, ব্যানার-ফেস্টুন সাঁটিয়ে প্রচারণা চালাচ্ছেন। বর্ধিত সভার অতিথিদের বরণ করতেই দলীয় নেতাকর্মীদের নিয়ে তারা রামগঞ্জ-লক্ষ্মীপুর সড়কের পাশে দাঁড়ান। এসব দেখে ক্ষিপ্ত হয়ে যুবলীগ সভাপতি টিপুর নেতৃত্বে হামলা চালানো হয়।
সভাস্থলের গেটে উপস্থিত পৌরসভার মেয়র আবু তাহেরের ছেলে এএইচএম বিপ্লব সাংবাদিকদের বলেন, সাংবাদিক এখন অ্যালাউ না। পরবর্তীতে সুযোগ হলে সাংবাদিকদের ঢুকতে দেওয়া হবে’।
আহত যুবলীগ নেতা ইউনুছ হাওলাদার রুপম বলেন, টিপুর নেতৃত্বে নেশাগ্রস্ত একদল বখাটে মোটরসাইকেলে এসে আমাদের ওপর পরিকল্পিতভাবে হামলা করেছে। এতে আমি ও সৈয়দ বাবরসহ নেতাকর্মীরা আহত হন। যুবলীগকে তারা বাবার সম্পত্তি মনে করছে। বিষয়টি কেন্দ্রীয় নেতাদের জানানো হয়েছে।
এ ব্যাপারে জেলা যুবলীগের সভাপতি একেএম সালাহ উদ্দিন টিপু জানান, বাবরের সঙ্গে তার বাদানুবাধ হয়েছে। কাউকে মারধর করা হয়নি।
লক্ষ্মীপুর সদর মডেল থানা পুলিশের পরিদর্শক (তদন্ত) শিপন বড়ুয়া বলেন, অপ্রীতিকর ঘটনা এড়াতে শহরজুড়ে অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়েন রয়েছে। বিশৃঙ্খলার ঘটনায় কাউকে আটক করা সম্ভব হয়নি। বর্ধিত সভাস্থলেও পুলিশ মোতায়েন আছে।
প্রসঙ্গত, যুবলীগ নেতা টিপু সদর উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান। তিনি গত উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে নৌকার বিপক্ষে নির্বাচন করে চেয়ারম্যান নির্বাচিত হয়েছেন।
হাসান মাহমুদ শাকিল/আরএআর