সিনহা হত্যা মামলা : তৃতীয় দফা সাক্ষ্যগ্রহণ শুরু
কক্সবাজারের টেকনাফে আলোচিত মেজর (অব.) সিনহা মো. রাশেদ খান হত্যা মামলার তৃতীয় ধাপের সাক্ষ্যগ্রহণ শুরু হয়েছে। সোমবার (২০ সেপ্টেম্বর) সকাল সোয়া ১০টার দিকে কক্সবাজার জেলা ও দায়রা জজ আদালতের বিচারক মো. ইসমাঈলের আদালতে ৭ নং সাক্ষীর জবানবন্দি গ্রহণের মধ্যদিয়ে শুরু হয়েছে বিচারিক কার্যক্রম।
কক্সবাজার জেলা ও দায়রা জজ আদালতের পাবলিক প্রসিকিউটর (পিপি) ফরিদুল আলম বলেন, গেল দুই ধাপে মামলার বাদীসহ ছয়জনের সাক্ষ্য ও আসামি পক্ষের জেরা শেষ হয়েছে। তৃতীয় ধাপে এসে ৭ নং সাক্ষীর জবানবন্দি গ্রহণের মধ্যদিয়ে শুরু হয়েছে বিচারিক কার্যক্রম।
বিজ্ঞাপন
এর আগে দ্বিতীয় ধাপের চার দিনের সাক্ষ্যগ্রহণ শেষ হয় বুধবার (৮ সেপ্টেম্বর)। দ্বিতীয় ধাপের চতুর্থ দিনে সাক্ষ্য দিয়েছেন ৬ নং সাক্ষী শামলাপুর বায়তুর নুর জামে মসজিদের ইমাম হাফেজ মাওলানা শহিদুল ইসলাম। শেষ হয় বুধবার (৮ সেপ্টেম্বর)।
দুই ধাপে মামলার বাদী ও সিনহার বোন শারমিন শাহরিয়ার ফেরদৌসহ ছয়জনের সাক্ষ্য নেওয়া হয়েছে। তাদের জেরাও শেষ করেছে আসামি পক্ষ। আগামী ২০, ২১ ও ২২ সেপ্টেম্বর পরবর্তী সাক্ষ্যগ্রহণ করা হবে বলে দিন ধার্য করেন আদালত।
উল্লেখ্য, ২০২০ সালের ৩১ জুলাই রাতে কক্সবাজার-টেকনাফ মেরিন ড্রাইভ সড়কের শামলাপুর চেকপোস্টে পুলিশের গুলিতে নিহত হন মেজর (অব.) সিনহা মো. রাশেদ খান। তার সঙ্গে থাকা সাহেদুল ইসলামকে (সিফাত) পুলিশ আটক করে। এরপর সিনহা যেখানে ছিলেন, সেই নীলিমা রিসোর্টে ঢুকে তার ভিডিও দলের দুই সদস্য শিপ্রা দেবনাথ ও তাহসিন রিফাত নুরকে আটক করে। পরে তাহসিনকে ছেড়ে দিলেও শিপ্রা ও সিফাতকে গ্রেফতার করে কারাগারে পাঠায় পুলিশ। পরে এই দুজন জামিনে মুক্তি পান।
সিনহা হত্যার ঘটনায় চারটি মামলা হয়েছে। ঘটনার পর পরই পুলিশ বাদী হয়ে তিনটি মামলা করে। এর মধ্যে দুটি মামলা হয় টেকনাফ থানায় ও একটি রামু থানায়। ঘটনার পাঁচ দিন পর অর্থাৎ ৫ আগস্ট কক্সবাজার আদালতে টেকনাফ থানার বরখাস্ত হওয়া ওসি প্রদীপ কুমার দাশ, বাহারছড়া তদন্ত কেন্দ্রের পরিদর্শক লিয়াকত আলীসহ ৯ পুলিশের বিরুদ্ধে হত্যা মামলা করেন সিনহার বড় বোন শারমিন শাহরিয়া ফেরদৌস। চারটি মামলা তদন্তের দায়িত্ব পায় র্যাব।
২০২০ সালের ১৩ ডিসেম্বর ওসি প্রদীপ কুমার দাশসহ ১৫ জনকে অভিযুক্ত করে আদালতে অভিযোগপত্র দেন তদন্তকারী কর্মকর্তা ও র্যাব-১৫ কক্সবাজারের সিনিয়র সহকারী পুলিশ সুপার মো. খাইরুল ইসলাম।
আসামিদের মধ্যে রয়েছেন পুলিশের ৯ সদস্য। তারা হলেন- বরখাস্ত হওয়া ওসি প্রদীপ কুমার দাশ, পরিদর্শক লিয়াকত আলী, কনস্টেল রুবেল শর্মা, এসআই নন্দদুলাল রক্ষিত, কনস্টেবল সাফানুল করিম, কামাল হোসেন, আব্দুল্লাহ আল মামুন, এএসআই লিটন মিয়া ও কনস্টেবল সাগর দেব নাথ।
অপর আসামিরা হলেন- আর্মড পুলিশ ব্যাটালিয়নের (এপিবিএন) সদস্য এসআই মো. শাহজাহান, কনস্টেবল মো. রাজিব ও মো. আব্দুল্লাহ এবং টেকনাফের বাহারছড়ার মারিষবুনিয়া গ্রামের বাসিন্দা ও পুলিশের করা মামলার সাক্ষী নুরুল আমিন, মো. নিজাম উদ্দিন ও আয়াজ উদ্দিন।
গ্রেফতার হওয়া আসামিদের মধ্যে ১২ জন আদালতে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দিয়েছেন। তবে ওসি প্রদীপ ও কনস্টেবল রুবেল শর্মা আদালতে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দেননি। এর আগে আসামিদের তিন দফায় ১২ থেকে ১৫ দিনের রিমান্ডে নেওয়া হয়েছিল।
মুহিববুল্লাহ মুহিব/এসপি