ফরিদপুরে দ্রুত বাড়ছে পদ্মার প্রশস্ততা
ফরিদপুরে পদ্মা নদীর পানি ৫ সেন্টিমিটার বেড়ে বিপৎসীমার ৭৪ সেন্টিমিটার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। শনিবার (৪ সেপ্টেম্বর) সকাল পর্যন্ত গোয়ালন্দ পয়েন্টে এ দৃশ্য দেখা যায়। ফলে বন্যা পরিস্থিতির আরও অবনতি ঘটেছে।
এদিকে ওই এলাকায় ইতোমধ্যে নদীগর্ভে বিলীন হয়ে গেছে ১৪১টি বসতভিটা। এ ছাড়া দুই একর ফসলি জমি বিলীন হয়ে গেছে। এ ছাড়া বন্যাদুর্গত এলাকায় দেখা দিয়েছে নদীভাঙন।
বিজ্ঞাপন
আলফাডাঙ্গার পাঁচুড়িয়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়, বাজরা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় ও পশ্চিম চর নারাণদিয়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ও রয়েছে ভাঙনঝুঁকিতে।
জানা গেছে, জেলার আলফাডাঙ্গায় মধুমতি নদীর ভাঙনের কবলে পড়েছে টগরবন্দ, গোপালপুর ও পাঁচুড়িয়া ইউনিয়ন।
টগরবন্দের চাপুলিয়া, আজমপুর, চর আজমপুর ও চরডাঙ্গা, গোপালপুরের গোপালপুর, দিক নগর, কাতলাসুর ও খোলাবাড়িয়া, পাচুড়িয়ার বাঁশতলা, পাচুরিয়া ও চাঁদরা গ্রামগুলোয় ভাঙনের অবস্থা ভয়াবহ রূপ ধারণ করেছে।
টগরবন্দ ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) চেয়ারম্যান মো. ইমাম হাসান বলেন, তার ইউনিয়নে গত এক সপ্তাহে অন্তত ৪৯টি ভিটাবাড়ি নদীগর্ভে বিলীন হয়ে গেছে। এ ছাড়া দুই একর ফসলি জমি ভেঙে গেছে। তিনি বলেন, শনিবার সকাল পর্যন্ত দুর্গতদের জন্য কোনো ত্রাণসহায়তা বরাদ্দ না পাওয়ায় দেওয়া সম্ভব হয়নি।
গোপালপুর ইউপির চেয়ারম্যান ইনামুল হাসান বলেন, মধুমতি নদী ভাঙতে ভাঙতে বাজরা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের অতি নিকটে চলে এসেছে। এ ভাঙন রোধ করা না গেলে স্কুলটি নদীগর্ভে বিলীন হয়ে যাবে। আমাদের চোখের সামনে গত এক সপ্তাহে ইউনিয়নে অন্তত ১৩টি বসতভিটা নদীগর্ভে বিলীন হয়ে গেছে।
এদিকে ফরিদপুরের মধুখালী উপজেলার কামারখালীতে বীরশ্রেষ্ঠ মুন্সী আব্দুর রউফ স্মৃতি জাদুঘর ও পৈতৃক ভিটাগামী সালামতপুর সড়ক মধুমতী নদীভাঙনের কবলে পড়েছে।
ওই গ্রামের বাসিন্দারা জানিয়েছেন, কামারখালী-সালামতপুরগামী সড়কে ফুলবাড়ী ও রাজধরপুর গ্রামের মাঝে দিলীপের বাড়ির সামনে ভাঙন শুরু হয়েছে। এ ছাড়া ইউনিয়নের গয়েষপুর গ্রামে ১০ থেকে ১২টি বাড়ি ভাঙনের কবলে পড়ে নদীগর্ভে বিলীন হয়ে গেছে।
এ ছাড়া ফরিদপুরের চরভদ্রাসন উপজেলার সদরের হাজিডাঙ্গী ভাঙ্গার মাথায় সলেমান শিকদারের বাড়ি-সংলগ্ন এলাকায় শুরু হয়েছে পদ্মা নদীর ভাঙন। ওই এলাকার ৪০ মিটারব্যাপী এলাকাজুড়ে এ ভাঙন দেখা দিয়েছে। গত বছরও ওই এলাকায় ভাঙন দেখা দিয়েছিল। পানি উন্নয়ন বোর্ড বালুভর্তি জিও ব্যাগ দিয়ে ভাঙন ঠেকিয়েছিল। তবে গত বছরের সেই জিও ব্যাগ চলতি বছর ভাঙনের কবলে পড়ে বিলীন হয়ে গেছে। নতুন করে জিও ব্যাগ না ফেললে ভাঙন রোধ করা সম্ভব হবে না। সেখানে ভাঙনের ঝুঁকিতে রয়েছে মো. কামালসহ আরও কয়েকজনের বাড়ি।
ফরিদপুর পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী পার্থ প্রতীম সাহা বলেন, শনিবার পর্যন্ত গোয়ালন্দ পয়েন্টে পদ্মা নদীর পানি আরও ৫ সেন্টিমিটার বেড়ে বিপৎসীমর ৭৪ সেন্টিমিটার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। পানি বৃদ্ধির সঙ্গে জেলার বেশ কয়েকটি জায়গায় ভাঙন দেখা দিয়েছে। এসব ভাযন রোধে কাজ চলছে। কাজ চলছে চরভদ্রাসনেও।
তিনি বলেন, কিছুদিন আগে বীরশ্রেষ্ঠ আব্দুর রউফের বাড়ির সালামতপুরগামী সড়কে ভাঙন রোধে কাজ হয়েছে। প্রয়োজনে সেখানে আবারও জিও ব্যাগ ফেলা হবে।
এনএ