প্রশাসনের নানা তদারকির পরও থামানো যাচ্ছে না বান্দরবানে অবৈধ পাহাড় কাটা। প্রকাশ্যে বা গোপনে একাধিক চক্র চালিয়ে যাচ্ছে পাহাড় কাটার এ মহোৎসব। সর্বশেষ বান্দরবানের থানচিতে নির্বিচারে পাহাড় কাটছেন উপজেলা চেয়ারম্যান ও উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি থোয়াইহ্লা মং মারমা।

পরিবেশ অধিদফতর এবং প্রশাসনের কোনো ধরনের অনুমোদন ছাড়াই থানচি সদর ইউনিয়ন এলাকায় এক মাস ধরে প্রকাশ্যে কয়েকশ ফুটের সুউচ্চ বিশাল পাহাড় কাটলেও তার বিরুদ্ধে এখনো নেওয়া হয়নি কোনো আইনি ব্যবস্থা। 

সরেজমিনে দেখা গেছে, থানচি উপজেলা বাসস্টেশন থেকে আমতলীপাড়া যাওয়ার রাস্তার পার্শ্ববর্তী ইউনিয়ন পরিষদ এলাকায় বসতবাড়ি নির্মাণের জন্য দুটি এক্সকেভেটর ব্যবহার করে শ্রমিক দিয়ে নির্বিচারে পাহাড় কাটছে থানচি উপজেলা চেয়ারম্যান ও উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি থোয়াইহ্লা মং মারমা। 

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক স্থানীয়রা বলেন, থোয়াইহ্লা মং মারমা একটা সময় পার্বত্য জেলা পরিষদের সদস্য ছিলেন। বর্তমানে থানচি উপজেলা চেয়ারম্যান ও উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি। ক্ষমতার অপব্যবহার করে ইতোমধ্যে গড়েছেন অনেক সম্পত্তি। লোপাটের টাকায় বাড়ি বানাতে পরিবেশ ধ্বংস করে কাটা হচ্ছে বিশাল পাহাড়।

আইনের কোনো ধরনের তোয়াক্কা করছেন না তিনি। প্রকাশ্যে এক্সকেভেটর মেশিন দিয়ে পাহাড় কেটে পাহাড়ের মাটিগুলো চড়া দামে ইটের ভাটায় এবং নিচু জমি ভরাটের জন্য বিক্রি করে মোটা অঙ্কের টাকা আয় করছেন। 

পাহাড় কাটার বিষয়টি স্বীকার করে থানচি উপজেলা চেয়ারম্যান ও উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি থোয়াইহ্লা মং মারমা বলেন, কোনো ধরনের পরিবেশ ধ্বংস বা পরিবেশের জন্য ক্ষতিকারক কাজের সঙ্গে আমি জড়িত নই। পাহাড় কাটছি নিজের জায়গায় একটি বসতবাড়ি বানানোর জন্য। উন্নয়ন কাজের জন্য পাহাড় কাটা তো অপরাধ নয়। পাহাড় কেটে আমি তো মাটি বিক্রি করছি না। আমার থাকার কোনো ঘর নেই, তাই বাড়ি বানাতে নিজের জায়গায় পাহাড় কাটতে হচ্ছে। 

বান্দরবান পরিবেশ অধিদফতরের পরিদর্শক আবদুস সালাম বলেন, থানচিতে পাহাড় কাটার বিষয়টি আমি শুনেছি। আগামী রোববার থানচিতে সরেজমিনে গিয়ে দেখে ব্যবস্থা নেওয়া হবে। পাহাড় কাটার জন্য পরিবেশ অধিদফতরের কোনো ছাড়পত্রও নেওয়া হয়নি।

থানচি উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মো. আতাউল গণি ওসমানী বলেন, পাহাড় কাটার কোনো নিয়ম নেই। পাহাড় কাটা আইনগত শাস্তিযোগ্য অপরাধ। পাহাড় কাটার বিষয়টি গণমাধ্যমকর্মীদের কাছ থেকেই শুনেছি। আইনশৃঙ্খলা বাহিনীসহ ঘটনাস্থলে গিয়ে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

রিজভী রাহাত/এসপি