২৫ বছর আগে গাইবান্ধা সরকারি বালক উচ্চ বিদ্যালয়ের তিনটি আবাসিক ভবন পরিত্যক্ত ঘোষণা করেছে গণপূর্ত বিভাগ। তবুও মৃত্যুঝুঁকি নিয়ে তিনটি পরিবারের শিশুসহ অন্তত ১৫ সদস্য ভবনগুলোতে বসবাস করে আসছেন। 

প্রধান শিক্ষকের দাবি, স্বরণকালের ভয়াবহ রানা প্লাজা ট্র্যাজেডির সময় বিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ এই পরিবারগুলোকে সরিয়ে দিলেও পরবর্তীতে লিখিতভাবে মৃত্যুর দায় মাথায় নিয়ে তারা আবার বসবাস শুরু করেন।

স্থানীয় সচেতন মহল মনে করছেন, সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ ভবনগুলোতে ঝুঁকিপূর্ণ সাইনবোর্ড না লাগিয়ে দায়িত্বহীনতার পরিচয় দিয়েছেন। যে কারণে অনেকেরই বিষয়টি অজানা রয়েছে। এখানে বসবাসরত সবাইকে অনত্র সরিয়ে দ্রুত ভবনগুলো ভেঙে দিলে এই পরিবারগুলো বড় ধরনের দুর্ঘটনা থেকে রক্ষা পাবে।

অন্যদিকে আবাসিক ভবনগুলো শিক্ষকদের থাকার জন্য কত সালে নির্মাণ হয়েছে এ বিষয়ে শিক্ষা প্রকৌশলী অধিদফতর গাইবান্ধায় কোনো তথ্য নেই বলে জানিয়েছেন সেখানকার উপ-সহকারী প্রকৌশলী স.ম আব্দুল লাহেল লাকী। তবে তিনি বলেন, ১৯৯৫ সালে গণপূর্ত বিভাগ ভবনগুলো বসবাসের জন্য অনুপযোগী ঘোষণা করে ভেঙে দেওয়ার নির্দেশ দেয়।

ঝুঁকিপূর্ণ ভবনে বসবাসকারী সরকারি বালক উচ্চ বিদ্যালয়ের অফিস সহায়ক শ্রী নয়ন চন্দ্র বলেন, ‘একটি ভবনে পরিবার নিয়ে থাকি। ভবনটি বেশ ঝুঁকিপূর্ণ অবস্থায় আছে। কিন্তু আর্থিক দিক বিবেচনা করে আমাকে এখানে থাকতে হচ্ছে।’ 

সরকারী বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়ের অফিস সহায়ক মহাসিন আলী বলেন, ‘জরাজীর্ণ এসব ভবনে বাঁশ ও পলিথিন দিয়ে কোনো রকমে বসবাস করছি। তবে ঝড়-বৃষ্টির সময় ভবন ভেঙে পড়ার আতঙ্কে থাকি। কিন্তু কোনো উপায় না থাকায় বাধ্য হয়েই এখানে বসবাস করতে হচ্ছে।

সরকারি বালক উচ্চ বিদ্যালয়ের নৈশ প্রহরী বাদল রায় বলেন, এসব বাসায় ভাড়া ছাড়াই ঝুঁকি নিয়ে থাকি আমরা। আমাদের বেতন দিয়ে সংসার চালানোই দায়, এরপর বাড়ি ভাড়া নিয়ে থাকি কী করে?

সরকারি বালক উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক শাহানা বানু বলেন, এই ভবনগুলোতে যারা আছে তাদের কাছে স্কুল কর্তৃপক্ষ কোনো ভাড়া নেয় না। তারা সকলেই নিজে লিখিতভাবে মৃত্যুর দায় নিয়ে আছে। এর আগে একবার তারা চলে গেলেও পুনরায় ফিরে এসে এমন আবেদন করে বসবাস করছেন।

জেলা প্রশাসক আবদুল মতিন বলেন, বিষয়টি আমার জানা নেই। তবে ঝুঁকিপূর্ণ ভবনে কোনো পরিবারকে থাকতে দেওয়া দায়িত্বহীনতার পরিচয়। আমি বিষয়টি প্রধান শিক্ষকের সঙ্গে কথা বলে ব্যবস্থা নেবো।

এসপি