কনস্টেবল সাগর হোসেন

১৫ বছরের এক কিশোরসহ বরিশাল মেট্রোপলিটন পুলিশের কোতোয়ালি থানার কনস্টেবল সাগর হোসেনকে আটক করেছেন স্থানীয়রা। বুধবার (০১ সেপ্টেম্বর) বিকেল ৩টার দিকে নগরীর ফলপট্টি এলাকার রুপা শপিং প্লাজা থেকে তাকে আটক করা হয়। 

স্থানীয়দের দাবি- কনস্টেবল ওই কিশোরকে অসামাজিক সর্ম্পকে লিপ্ত হতে এখানে এনেছিলেন।  

যদিও পুলিশ বলছে, মাদকসেবীদের ফাঁদে পড়েছেন কনস্টেবল সাগর হোসেন। তবে থানায় অবহিত না করে এবং পুলিশের পোশাক ছাড়া কেন তিনি সেখানে গিয়েছিলেন তা তদন্ত করে দেখা হবে বলে জানিয়েছেন বরিশাল মেট্রোপলিটন পুলিশের অতিরিক্ত উপকমিশনার ফজলুল করিম।

কোতোয়ালি মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) নুরুল ইসলাম ঢাকা পোস্টকে জানান, সেখানে কিছু মাদকসেবী মাদক সেবন করছিল- ওই কিশোরের মাধ্যমে এমন তথ্য পেয়ে সেখানে যান কনস্টেবল সাগর হোসেন। এ সময়ে তার ওপর হামলা চালানো হয়। খবর পেয়ে পুলিশ তথ্যদাতা কিশোর এবং কনস্টেবল সাগরকে উদ্ধার করে থানায় নিয়ে এসেছে। এ ঘটনায় হামলাকারীদের বিরুদ্ধে মামলা করা হবে।

কনস্টেবল সাগর হোসেন বলেন, আমি কিশোরের মাধ্যমে জানতে পারি রুপা শপিং কমপ্লেক্সের ৫ তলা ভবনের তিনতলায় কিছু লোক মাদক সেবন করছে। তথ্য যাচাই করতে সেখানে যাই। নিচতলা থেকে তিন তলায় ওঠার সঙ্গে সঙ্গেই মাদকসেবীরা আমাকে বাধা দেন। তখন তারা আমার সঙ্গে থাকা কিশোরকে নিয়ে গিয়ে মারধর করে শিখিয়ে দেয় আমার বিরুদ্ধে বলার জন্য। তারা কিশোরকে বলতে শিখিয়ে দেয় ‘অসামাজিক সর্ম্পক’ স্থাপনের জন্য আমি ওকে নিয়ে গেছি- এই কথা যেন বলে। পরে আমাকে অনেক মারধর করে।  এলাকাবাসী আমার ভিডিও ধারণ করে।

ওই কিশোর বলে, ওখানে কিছু লোক গাঁজা খায় এই তথ্য জানতে পেরে তাকে (পুলিশ কনস্টেবল) জানাই। তিনি আমাকেসহ সেখানে যান। গেলে মাদকসেবীরা আমাদের মারধর করেন। আমাকে শিখিয়ে দেন, যেন আমি তার (কনস্টেবল সাগর) বিরুদ্ধে বাজে কথা বলি। আমি চাই আমাদের যারা মারধর করেছেন তাদের বিচার চাই।

ওই কিশোর জানায়, সে ঢাকা-বরিশাল রুটের সুন্দরবন লঞ্চে চাকরি করে। সাতদিন আগে বরিশাল নদী বন্দর এলাকায় পরিচয় হয় পুলিশ কনস্টেবল সাগর হোসেনের সঙ্গে। কনস্টেবল সাগর হোসেন ও তার বাড়ি যশোরে হওয়ায় সে তাকে মামা বলে ডাকে। 

রুপা শপিং কমপ্লেক্স ভবনের মালিক সোলায়মান বলেন, আমার ভবনের ছাদে অনুমতি ছাড়া একটি বাচ্চা নিয়ে তিনি ছাদে উঠে গেছেন। আমি সেখানে গিয়ে জানতে চাই ভাই কি জন্য এসেছেন। তিনি বলেন, আমি পুলিশ। তখন তাকে বলি যদি পুলিশ হন তাহলে কোনো আইডি কার্ড আছে। তিনি আইডি কার্ড দেখাতে পারেননি। তিনি অবশ্যই খারাপ কোনো কাজ করার জন্য ওই কিশোরকে নিয়ে আমার মার্কেটের ছাদে এসেছিলেন। 

ঘটনাস্থলের ভিডিওতে দেখা গেছে, কোনো প্রশ্নের জবাব দিচ্ছেন না পুলিশ কনস্টেবল। ওই কিশোর বলছে, তাকে পুলিশ সদস্য রুপা শপিং কমপ্লেক্সের ছাদে নিয়ে এসেছে। তবে কী কারণে নিয়ে এসেছে তা জানে না। 

বরিশাল মেট্রোপলিটন পুলিশের অতিরিক্ত উপকমিশনার ফজলুল করিম জানান, পুরো বিষয়টি তদন্ত করে দেখা হচ্ছে। ঘটনাস্থলের সিসি টিভি ক্যামেরা ফুটেজ সংগ্রহ করা হবে। এরপরই মূলত আমরা ব্যবস্থা গ্রহণ করবো। 

সৈয়দ মেহেদী হাসান/আরএআর