সন্তানকে ফিরে পেতে অবশেষে আদালতে বাবা
লক্ষ্মীপুরে শিশু তাসফিয়া সুলতানা রাফাকে (৪) নিয়ে পরকীয়া প্রেমিকের সঙ্গে পালিয়ে গেছেন মা জান্নাতুল ফেরদাউস। এ নিয়ে তিনি দুবার একই ব্যক্তির সঙ্গে পালিয়েছেন। তবে প্রথমবার একা গেলেও এবার সঙ্গে করে নিয়ে গেছেন একমাত্র মেয়েটিকেও।
এদিকে একমাত্র মেয়েকে ফিরে পেতে বাবা রাসেল মাহমুদ রোমান মরিয়া হয়ে উঠেছেন। প্রায় দেড় মাস হয়ে গেলেও মেয়েকে দেখতে না পেরে তিনি এখন পাগলপ্রায়। তাই প্রশাসন ও মানুষের সহযোগিতা চেয়েছিলেন এত দিন। ব্যর্থ হয়ে অবশেষে আদালতের দ্বারস্থ হয়েছেন তিনি।
বিজ্ঞাপন
রোববার (২৯ আগস্ট) দুপুরে লক্ষ্মীপুর সিনিয়র জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট (সদর) আদালতে জান্নাতুল ফেরদাউস, প্রেমিক সাইফুল ও সহযোগী কাওছার আহম্মেদকে আসামি করে একটি মামলা করেন।
বিষয়টি ঢাকা পোস্টকে নিশ্চিত করে বাদীর আইনজীবী লুৎফুর রহমান গাজী বলেন, মামলাটি আদালতের বিচারক রায়হান চৌধুরী আমলে নিয়েছেন। এটি তদন্ত করার জন্য জেলা গোয়েন্দা পুলিশকে (ডিবি) নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।
এর আগে গত ১৪ জুন রাফাকে নিয়ে তার মা জান্নাতুল ফেরদাউস প্রেমিক সাইফুল ইসলামের সঙ্গে দ্বিতীয়বার পালালে রোমান সদর মডেল থানায় একটি সাধারণ ডায়েরি (জিডি) করেন। দেড় মাস অতিক্রম হলেও মেয়েকে না পেয়ে এবার তিনি আদালতে এই মামলা করেন।
তারা সবাই সদর উপজেলার দক্ষিণ হামছাদী ইউনিয়নের হেতিমপুর গ্রামের বাসিন্দা।
মামলার এজাহার সূত্রে জানা যায়, ব্যবসায়ী রোমান ও জান্নাতুল ফেরদাউসের সঙ্গে প্রেমের সম্পর্ক ছিল। পাঁচ বছর আগে তাদের বিয়ে হয়। এক বছর পরই তাদের সংসারে মেয়ে রাফার জন্ম হয়। ব্যবসার কাজে রোমান রাজধানী ঢাকাতেই থাকতেন। এ সুযোগে জান্নাতুল ফেরদাউস স্বামীর বন্ধু সাইফুল ইসলামের সঙ্গে পরকীয়া সম্পর্ক গড়ে তোলেন।
স্থানীয়দের কাছে সাইফুল ও জান্নাতুল ফেরদাউস হাতেনাতে আটক হন। পরে গত ৪ এপ্রিল সন্তানকে রেখে জান্নাতুল সাইফুলের সঙ্গে পালিয়ে যান। পরে তারা বিয়ে করেন। এ নিয়ে সালিস বৈঠক হলে মেয়ের কথা চিন্তা করে জান্নাতুল ফিরে আসেন রোমানের কাছে। দুই মাস পর ১৪ জুন ফের সাইফুলের কাছে চলে যান। এবার মেয়েকেও সঙ্গে নিয়ে যান।
মামলার বাদী রাসেল মাহমুদ রোমান বলেন, সাইফুল আমার ছোটবেলার বন্ধু। সম্পর্কেও চাচা-ভাতিজা। সাইফুলের সঙ্গে আমার স্ত্রীকে পালিয়ে যেতে কাওছার (সাইফুলের বন্ধু) সহযোগিতা করেছে। তারা পালিয়ে যাওয়ার সময় আমার মেয়েটিকে নিয়ে গেছে।
তিনি বলেন, দেড় মাস হয়ে গেছে আমি মেয়েটির খোঁজ পাচ্ছি না। কীভাবে আছে, কেমন আছে, আমার মেয়েকে তারা কী করছে, কিছুই জানতে পারছি না। রাফাকে অক্ষত অবস্থায় আমার কোলে ফিরিয়ে দিতে আদালত ও প্রশাসনের সহযোগিতা কামনা করছি।
হাসান মাহমুদ শাকিল/এনএ