সাংবাদিক আলতাফ মাহমুদের কবর

পটুয়াখালীর গলাচিপা উপজেলার রামনাবাদ নদীর অব্যাহত ভাঙনের কবলে পড়েছে প্রখ্যাত সাংবাদিক আলতাফ মাহমুদের কবর। নদী থেকে কবরের দূরত্ব মাত্র ৫০ ফুট। আলতাফ মাহমুদের কবরের শেষ চিহ্নটুকু রক্ষায় দ্রুত ব্যবস্থা গ্রহণের দাবি এলাকাবাসী ও স্থানীয় সংবাদকর্মীদের। 

আলতাফ মাহমুদ বাংলাদেশ ফেডারেল সাংবাদিক ইউনিয়নের (বিএফইউজে) একাংশের সভাপতি ছিলেন। তিনি ২০১৬ সালের ২৪ জানুয়ারি মৃত্যুবরণ করেন। 

এলাকাবাসী জানায়, গলাচিপা নদীর তীরে উপজেলার একটি জনগুরুত্বপূর্ণ ইউনিয়ন ডাকুয়ার তিনটি গ্রাম আটখালী, ডাকুয়া ও হোগলবুনিয়ায় রয়েছে ইউনিয়ন পরিষদ ভবনসহ প্রায় দুইশ কোটি টাকার সরকারি-বেসরকারি স্থাপনা। ভাঙনের মুখে রয়েছে ডাকুয়া ইউনিয়ন পরিষদ ভবন, জৈনপুরী পীর সাহেবের খানকা, আটখালী মাধ্যমিক বিদ্যালয়, আটখালী প্রাথমিক বিদ্যালয়, আটখালী কমিউনিটি ক্লিনিক, গলাচিপা-কলাগাছিয়া কার্পেটিং সংযোগ সড়কের একাংশ, গলাচিপা-চরচন্দ্রাইল সংযোগ সড়কের একাংশ, পাঁচটি মসজিদ, দুটি মন্দির, তেঁতুলতলা বাজার, দুইশ বছরের পুরোনো জমিদার বাড়িসহ অসংখ্য বাড়িঘর ও ফসলি জমি। 

নদী ভাঙন রোধ কিংবা নদী শাসনের কোনো ব্যবস্থা গ্রহণ না করে পানি উন্নয়ন বোর্ড দুই বার বন্যা নিয়ন্ত্রণ বেড়িবাঁধ নির্মাণ করেছে। এতে কয়েকশ একর জমির ক্ষতি হলেও কাজের কাজ কিছুই হয়নি। কয়েক বছরে গলাচিপা নদীর ভাঙনে বাস্তুহারা হয়েছে শতাধিক পরিবার। যারা উদ্বাস্তু হিসেবে ঢাকাসহ দেশের বিভিন্ন স্থানে দিনমজুর হিসেবে কাজ করেন। 

প্রয়াত সাংবাদিক আলতাফ মাহমুদের ভাগনে মু. মঈনউদ্দিন বলেন, আমার মামা একজন দেশপ্রেমিক মানুষ ছিলেন। তার কবর এখন নদী ভাঙনের কবলে। যে কোনো সময় কবরটি নদী গর্ভে বিলীন হয়ে যেতে পারে। আমরা আশাবাদী মাননীয় প্রধানমন্ত্রী বিষয়টি অবগত হলে তিনি অবশ্যই ভাঙন রোধে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করবেন।   

সিনিয়র সাংবাদিক খায়রুজ্জামান কামাল বলেন, আমাদের প্রয়াত নেতা আলতাফ মাহমুদের কবর নদীতে ভেঙে যাচ্ছে। অবিলম্বে কবরটি সংরক্ষণে ব্যবস্থা নেওয়ার জন্য আমি জেলা প্রশাসন ও স্থানীয় সংসদ সদস্যের প্রতি আহ্বান জানাই। 

গলাচিপা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা আশীষ কুমার বলেন, প্রয়াত সাংবাদিক আলতাফ মাহমুদের কবর সংরক্ষণে ঊর্ধ্বতন কতৃপর্ক্ষকে দ্রুত পদক্ষেপ নেওয়ার জন্য বলা হয়েছে। আমরা উপজেলা থেকেও এ ব্যাপারে পদক্ষেপ নেওয়ার চেষ্টা করবো। 

পটুয়াখালী পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী আব্দুল হালিম সালেহী বলেন, আমরা বিষয়টি গুরুত্ব সহকারে নিয়ে অতি ঝুঁকিপূর্ণের তালিকায় অন্তর্ভুক্ত করেছি এবং মন্ত্রণালয়ে প্রেরণ করেছি। একটি টিম সাংবাদিক আলতাফ মাহমুদের কবরের স্থানসহ ঝুঁকিপূর্ণ এলাকা পরিদর্শন করেছে। মন্ত্রণালয় ও পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্দেশনা পেলে খুব দ্রুত কাজ শুরু করতে পারবো।

পটুয়াখালী-৩ আসনের সংসদ সদস্য এস এম শাহজাদা বলেন, পানিসম্পদ মন্ত্রণালয়ে আমাদের চিঠি দেওয়া আছে। মন্ত্রণালয় থেকে প্রকল্প পাস হলে দ্রুত কাজ শুরু করা হবে। 

মুহিবুল্লাহ চৌধুরী/আরএআর