গত ২৪ ঘণ্টায় (২১ থেকে ২২ আগস্ট) গোয়ালন্দ পয়েন্টে পদ্মা নদীর পানি আরও ৭ সেন্টিমিটার বৃদ্ধি পেয়ে বিপৎসীমার ৪৮ সেন্টিমিটার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে।

ফলে ফরিদপুর সদরের তিনটি ইউনিয়নের পাশাপাশি চরভদ্রাসন উপজেলার চারটি এবং সদরপুর উপজেলার দুটি ইউনিয়নে ২ হাজার ৬৫০ পরিবার পানিবন্দি হয়ে পড়েছে।

জানা গেছে, এসব পানিবন্দী এলাকার মানুষ সবচেয়ে বিপদে পড়েছেন নিজেদের খাদ্য ও গোখাদ্য নিয়ে। যদিও সরকার থেকে যেসব খাবার বরাদ্দ দেওয়া হচ্ছে, তা চাহিদার তুলনায় অপ্রতুল। বিশেষ করে ফরিদপুর সদর এলাকার পানিবন্দি মানুষের দুর্ভোগ বেশি। এসব গ্রামের অনেক বাড়ির উঠান তলিয়ে গেছে। কোনো কোনো বাড়ির ভেতরে পানি ঢুকে পড়ছে।

সদরের নর্থ চ্যানেল ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) চেয়ারম্যান মোস্তাকুজ্জামান ঢাকা পোস্টকে বলেন, রোববার (২২ আগস্ট) উপজেলা প্রশাসন থেকে আমার ইউনিয়নে গোখাদ্য হিসেবে ২৯ বস্তা খাবার পেয়েছি। অথচ আমার ইউনিয়নের পানিবন্দী বাসিন্দাদের প্রায় প্রত্যেকেই কয়েকটি করে গরু-ছাগল লালনপালন করেন। যে পরিমাণ বরাদ্দ পেয়েছি, তাতে প্রতি পরিবারে পাঁচ কেজি পরিমাণ গোখাদ্য বরাদ্দ দেওয়া যাবে। এই পরিমাণ খাবার একটি গরুর এক বেলাও ঠিকমতো হয় না। এতে একটি পরিবার তার কয়েকটি গরুকে কী খাবার দেবে?

এ ছাড়া পদ্মা নদীতে পানি বাড়তে থাকায় চরভদ্রাসন উপজেলার ছয়টি ইউনিয়ন নতুন করে বন্যাকবলিত হয়েছে। উপজেলার গাজীরটেক ইউনিয়নের চারটি গ্রামের ২০০ পরিবার, চর হরিরামপুর ইউনিয়নের পাঁচটি গ্রামের ৭০০ পরিবার, চর ঝাউকান্দা ইউনিয়নের ৪টি গ্রামের ২০০ পরিবার এবং চরভদ্রাসন সদর ইউনিয়নের ১৫০টি পরিবার নতুন করে পানিবন্দি হয়ে পড়েছে।

পাশাপাশি পদ্মা ও আড়িয়াল খাঁ নদে পানি বাড়ায় সদরপুরের দিয়ারা নাড়কেলবাড়িয়া ও চর নাসিরপুর ইউনিয়নের ২৭টি গ্রামের ১ হাজার ৪০০ পরিবার পানিবন্দি হয়ে পড়েছে।

ফরিদপুর পানি উন্নয়ন বোর্ডের (পাউবো) নির্বাহী প্রকৌশলী সুলতান মাহমুদ বলেন, গত ২৪ ঘণ্টায় গোয়ালন্দ পয়েন্টে পদ্মা নদীর পানি আরও ৭ সেন্টিমিটার বেড়ে বিপৎসীমর ৪৮ সেন্টিমিটার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে।

তিনি আরও বলেন, তবে পানিবৃদ্ধির প্রবণতা কমে আসছে। তিনি আশাবাদ ব্যক্ত করে বলেন, আগামী মঙ্গলবার (২৪ আগস্ট) পর্যন্ত পানি বাড়বে বলে মনে হচ্ছে। এরপর দুই দিন স্থিতিশীল থেকে পানি কমতে শুরু করবে।

এনএ