সনদ জালিয়াতি করে ৯ বছর চাকরি
চট্টগ্রামের প্রগতি ইন্ডাস্ট্রিজ লিমিটেডের উপপ্রধান প্রকৌশলী কায়কোবাদ আল মামুনকে অপসারণ করা হয়েছে। সনদ জালিয়াতি করে চাকরি নেওয়ার নয় বছর পর ধরা পড়েছেন তিনি। দীর্ঘ তদন্ত শেষে বোর্ড সভায় করা বিভাগীয় মামলার পর তাকে অপসারণের এ সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে।
বৃহস্পতিবার (১৪ জানুয়ারি) বাংলাদেশ ইস্পাত ও প্রকৌশল করপোরেশনের (বিএসইসি) চেয়ারম্যান মো. রইছ উদ্দিন স্বাক্ষরিত এ অপসারণের আদেশ চট্টগ্রামে পৌঁছায়।
বিজ্ঞাপন
বিএসইসি সূত্র জানায়, ২০১৭ সালে প্রগতি ইন্ডাস্ট্রিজ কারখানার উপপ্রধান প্রকৌশলী পদে দায়িত্ব পাওয়ার পর থেকে কায়কোবাদ আল মামুনের বিরুদ্ধে নানা অনিয়মের অভিযোগ আসতে থাকে। বিএসইসি এসব অনিয়মের তদন্ত করতে গিয়ে দেখেন মিথ্যা তথ্য দিয়ে চাকরি নিয়েছেন কায়কোবাদ আল মামুন।
২০১১ সালের ২ মার্চ প্রকাশিত বিজ্ঞপ্তির প্রেক্ষিতে নিয়োগ পেয়েছিলেন কায়কোবাদ আল মামুন। তখন বিএসইসির নিয়োগের শর্ত ছিল প্রকৌশলী (যান্ত্রিক) পদে আবেদনের জন্য ডিপ্লোমা ইন ইঞ্জিনিয়ারিং ডিগ্রিসহ ১০ বছরের অভিজ্ঞতা থাকতে হবে।
মামলার তদন্তে উল্লেখ করা হয়, ফরিদপুর পলিটেকনিক ইনস্টিটিউট থেকে ২০০১ সালে অনুষ্ঠিত চূড়ান্ত পরীক্ষায় অংশ নিয়ে এক বিষয়ে রেফার্ড পান কায়কোবাদ। ২০০৬ সালের আগস্ট-সেপ্টেম্বরে অনুষ্ঠিত ডিপ্লোমা ইন ইঞ্জিনিয়ারিং (পাওয়ার টেকনোলজি) পরীক্ষায় অংশগ্রহণ করে দ্বিতীয় বিভাগে পাস করেন তিনি।
চাকরিতে আবেদনের সময় তার অভিজ্ঞতা ছিল মাত্র তিন বছর নয় মাস ১৬ দিন। কিন্তু চাকরির আবেদনপত্রে ২০০১ সালে পাসের সাল উল্লেখ করেন ১০ বছরের। ভুয়া অভিজ্ঞতা সনদ ব্যবহার করে প্রকৌশলী পদে চাকরি নেন কায়কোবাদ।
ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করে বিএসইসির সচিব মো. নাজমুল হক প্রধান বলেন, কায়কোবাদ আল মামুনের অভিজ্ঞতার সনদ ভুয়া। বিএসইসির নিয়োগ বিধিমালা অনুযায়ী তার নিয়োগ অবৈধ। এজন্য তাকে অপসারণ করা হয়েছে।
২০২০ সালের ১০ আগস্ট প্রতারণার অভিযোগে কায়কোবাদ আল মামুনের বিরুদ্ধে বিভাগীয় মামলা করা হয়। তদন্ত কমিটির কাছে কারণ দর্শানো নোটিশের জবাব ও আত্মপক্ষ সমর্থন করে রিপোর্ট জমা দেন কায়কোবাদ। কিন্তু প্রতিষ্ঠানের কাছে সন্তোষজনক বিবেচিত না হওয়ায় বিএসইসির প্রধান প্রকৌশলী মো. নাজমুল হক প্রধানকে তদন্ত কর্মকর্তা নিয়োগ করা হয়। দীর্ঘ তদন্ত শেষে সর্বশেষ বিএসইসির বোর্ড সভায় কায়কোবাদের বিরুদ্ধে বিভাগীয় মামলাসহ অপসারণের সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়।
এএম