গোয়ালন্দ পয়েন্টে পদ্মা নদীর পানি বিপৎসীমার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। এর ফলে ফরিদপুরের তিনটি ইউনিয়নের ৯টি গ্রামের অন্তত হাজারখানেক পরিবার পানিবন্দি হয়ে পড়েছে। 

পানিবন্দি গ্রামগুলো হলো- ফরিদপুর সদরের কাইমুদ্দিন মাতুব্বরের ডাঙ্গী, বরান বিশ্বাসের ডাঙ্গী, বাসের মোল্লার ডাঙ্গী, শুকুর আলী মাতুব্বরের ডাঙ্গী, আয়জদ্দিন মাতুব্বরের ডাঙ্গী, চর বালুধুম, বাঘের টিলা, লালার গ্রাম ও নর্থ চ্যানেল।

জানা গেছে, গোলডাডাঙ্গী সড়কের জামাল সিকদারের বাড়ির কাছে ১০২ মিটার, জাফর প্রামাণিকের বাড়ির সামনে ৫৫ মিটার, জলিল শেখের বাড়ির সামনে ১৪৮ মিটার এবং নিকলী হাওর এলাকার অন্তত ৫০৫ মিটারসহ সড়কের ৮০০ মিটার অংশ পানিতে তলিয়ে গেছে।

বাসের মোল্লা ডাঙ্গী গ্রামের বাসিন্দা জসিম মোল্লা (৩৯) বলেন, প্রতি বছর আমাগো এই সময়ের আগেই পানি তলায় নিয়ে যাই। এত দিনেও পানি না আসায় ভাবছিলাম, এবার অন্তত পানি থেকে বাঁচবো। শেষ রক্ষা আর হইলো না।

বাঘের টিলা গ্রামের বাসিন্দা সাজাহান মোল্লা (৫৬) বলেন, আমাগো বাড়িঘরের যা হবার হইলো। পাটের বতর এখনো শেষ হয় নাই। তার আগেই সব তলাইয়া গেলে এত দামি পাটের কপালে কি হবে? সেইটাই চিন্তার বিষয়। আর কয়ডা দিন সময় পাইলে পাটের বতরডা শেষ করতে পারতাম।

নর্থ চ্যানেল ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান মোস্তাকুজ্জামান ঢাকা পোস্টকে  বলেন, আমার ইউনিয়নের অন্তত ৪৫০টি পরিবার পানিবন্দি হয়ে পড়েছে। পানি বাড়লে আরও অনেকের ঘরবাড়ি পানির নিচে তলিয়ে যাবে। স্থানীয় প্রশাসনের সঙ্গে আমরা যোগাযোগ করেছি। এই বিষয়ে সমন্বয় করে দ্রুত ব্যবস্থা নেব।

জেলা পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী সুলতান মাহমুদ বলেন, মঙ্গলবার সন্ধ্যা ছয়টা পর্যন্ত গোয়ালন্দ পয়েন্টে পদ্মা নদীর পানি ১৮ সেন্টিমিটার বেড়ে বিপৎসীমার ৮ দশমিক ৬৫ সেন্টিমিটার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে।

তিনি আরও বলেন, আগামী ২০ আগস্ট পর্যন্ত ৮-৯ ইঞ্চি পানি বাড়তে পারে। ওই পরিমাণ পানি বাড়লেও জেলার বন্যা নিয়ন্ত্রণ বাঁধ জেগে থাকবে। জেলার বন্যা পরিস্থিতির খুব অবনতি হবে না। 

ফরিদপুর সদরের উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মাসুম রেজা ঢাকা পোস্টকে বলেন, পানিবন্দি ওইসব এলাকায় ইতোমধ্যে মাইকিং করা হয়েছে। তাদের শুকনো খাবারসহ আশ্রয়ের জন্য সব প্রস্তুতি প্রশাসনের রয়েছে।

এসপি