গৌরনদীতে ডাকাতির খবরে মানুষের ভিড়

একটি হাটের সব মানুষকে জিম্মি করে একযোগে ১৩ দোকানে ডাকাতির ঘটনা ঘটেছে। স্থানীয়রা বলছেন, ছয়জন পাহারাদারসহ কমপক্ষে ৪০ থেকে ৫০ জন মানুষকে ওই রাতে নির্যাতন করা হয়েছে। কাউকে বেঁধে, কাউকে আটকে মারধর করা হয়। স্পিডবোটযোগে ওই হাটে ঢুকে ডাকাতি শেষে আবার স্পিডবোটযোগেই পালিয়ে যায় ডাকাতদল।

রোববার (১৫ আগস্ট) রা‌ত আড়াইটা থেকে চারটা পর্যন্ত বরিশালের গৌরনদী উপজেলার টরকী বন্দরের রায়পট্টিতে এই ঘটনা ঘটেছে। ওই বন্দরে একটি পুলিশ ফাঁড়ি থাকলেও তারা কার্যত কোনো ব্যবস্থা নিতে পারেনি।

গৌরনদী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আফজাল হোসেন জানান, আজকেই মামলা গ্রহণ করা হবে। প্রাথমিকভাবে অজ্ঞাতনামা আসামি করা হবে। ইতোমধ্যে ঘটনাতদন্তে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর কয়েকটি টিম কাজ শুরু করেছে। সিসি ক্যামেরা ফুটেজ সংগ্রহ করে তা বিশ্লেষণ করা হচ্ছে। আশা করা যায় দ্রুততার সাথেই ডাকাতদের আইনের আওতায় নিয়ে আসা যাবে।

ব্যবসায়ী সহিদুল ইসলাম জানান, টরকী বন্দরে শুক্রবার সাপ্তাহিক হাট। শনিবার ব্যাংক বন্ধ থাকায় ব্যবসায়ীদের নগদ টাকা যার যার ক্যাশেই ছিল। পাহারাদাররা আমাকে জানিয়েছেন কমপক্ষে ৩০ জনের একটি দল অস্ত্রসহ রাত আড়াইটার দিকে রায়পট্টিতে প্রবেশ করে পাহারাদারদের বেঁধে ফেলেন। এছাড়া বাজারে অন্য যারা ছিলেন তাদের মারধর করে বসিয়ে রাখেন।

আতঙ্ক সৃষ্টির পর একে একে ১৩টি দোকান থেকে নগদ প্রায় ৩০ লাখ টাকা ও ৩৫ কার্টন সিগারেট নিয়ে যায়। ডাকাতি শেষে তারা পালরদী নদী দিয়ে পালিয়ে যায়।

টরকী বন্দর ব্যবসায়ী সমিতির সভাপতি রাজু আহম্মদ হারুন বলেন, এমন ডাকাতি স্বাধীনতার পরে গৌরনদীতে হয়নি। অথচ ডাকাতি যেখানে হয়েছে তার একশ গজের মধ্যে পুলিশ ফাঁড়ি। এই ঘটনা ব্যবসায়ীদের জন্য আতঙ্ক ছড়িয়েছে।

ফাঁড়ির ইনচার্জ এসআই শাহীন বলেন, রাত ৩টা ১৭ মিনিটের দিকে ডাকাতি শুরু করে ডাকাতদল বলে আমরা জেনেছি। কিন্তু ফাঁড়িতে সেই খবর পৌঁছলে আমি ফোর্সসহ ৪টা ২৫ মিনিটে ঘটনাস্থলে আসি। ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের তাৎক্ষণিক জানাই।

তিনি দাবি করেন, বন্দরে সকল মানুষকে জিম্মি করায় কেউ চলাচল করতে পারেনি। ফলে আমি তাৎক্ষণিক তথ্য পাইনি। ব্যবসায়ীদের বরাত দিয়ে এসআই শাহীন বলেন, মেশিনের মাধ্যমে দোকানের তালা খুলে ডাকাতি করে ডাকাতরা। তারা কোনো দোকানে এক মিনিটের বেশি অপেক্ষা করেনি।

অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (গৌরনদী সার্কেল) আ. রব হাওলাদার ব‌লেন, আমরা সকালেই ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছি এবং অপরা‌ধীদের শনা‌ক্তে পুলিশের একাধিক টিম কাজ করছে। সিসি ফুটেজে দেখা গেছে ডাকাতদলের মুখে মুখোশ ছিল। তাদেরকে শনাক্ত ও দ্রুত আইনের আওতায় নিয়ে আসতে কাজ করছে একাধিক টিম।

সৈয়দ মেহেদী হাসান/এমএসআর