সেই বাবা-মেয়েকে সংবর্ধনা দিলেন রংপুর রেঞ্জ ডিআইজি
বাবা পুলিশের উপপরিদর্শক (এসআই) আব্দুস সালাম ও মেয়ে চিকিৎসক শাহনাজ পারভীন শাপলা বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর ক্যাপ্টেন। এই পুলিশ বাবা আর মেয়ের একটি ছবি সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ভাইরাল হয়েছিল। ছবিতে দেখা গেছে তারা একে-অপরকে হাত উঁচিয়ে অভিবাদন (স্যালুট) জানাচ্ছেন।
ভাইরাল হওয়া সেই ক্যাপ্টেন শাহনাজ পারভীন শাপলাকে সংবর্ধনা দিয়েছে বাংলাদেশ পুলিশের রংপুর রেঞ্জ। বুধবার (১১ আগস্ট) বেলা ১১টার দিকে রংপুর রেঞ্জ ডিআইজি অফিসে সংবর্ধনা অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়।
বিজ্ঞাপন
এতে রংপুর রেঞ্জের ডিআইজি দেবদাস ভট্টাচার্য্য ফুলেল শুভেচ্ছা ও সম্মাননা স্মারক তুলে দেন ক্যাপ্টেন শাহনাজ পারভীন শাপলার হাতে। এ সময় তার গর্বিত বাবা এসআই আব্দুস সালামও সঙ্গে ছিলেন।
দেশ সেবায় নিয়োজিত দুই বাহিনীর বাবা-মেয়ের স্যালুট দেওয়ার ছবির প্রশংসা করে ডিআইজি দেবদাস ভট্টাচার্য্য বলেন, পুলিশের উপপরিদর্শক আব্দুস সালামের কন্যার সেনাবাহিনীতে চাকরি হওয়ায় আমরা গর্বিত। আমরা চাই দেশ সেবায় আদর্শ মানুষ হিসেবে ক্যাপ্টেন শাহনাজ পারভীন তার বাবার মুখ উজ্জ্বল করবেন।
সংবর্ধনা অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন রংপুর রেঞ্জের অ্যাডিশনাল ডিআইজি (অ্যাডমিন অ্যান্ড ফিন্যান্স) শাহ মিজান শাফিউর রহমান, অ্যাডিশনাল ডিআইজি (অপরারেশনস্ অ্যান্ড ক্রাইম) ওয়ালিদ হোসেন, রংপুর রেঞ্জ অফিসের পুলিশ সুপার (এস্টেট অ্যান্ড ওয়েলফেয়ার) আব্দুল লতিফ।
আরও উপস্থিত ছিলেন পুলিশ সুপার (অপারেশনস্ অ্যান্ড ট্রাফিক) শহিদুল্লাহ কাওছার, পুলিশ সুপার (ডিসিপ্লিন অ্যান্ড প্রসিকিউশন) খন্দকার খালিদ বিন নুর, পুলিশ সুপার (মিডিয়া অ্যান্ড ক্রাইম এ্যানালাইসিস) আকতার হোসেন, অতিরিক্ত পুলিশ সুপার, (ডিসিপ্লিন অ্যান্ড প্রসিকিউশন) শরিফুল আলম, সহকারী পুলিশ সুপার (স্টাফ অফিসার টু ডিআইজি) জাহিদুল ইসলাম প্রমুখ।
মেয়ে ক্যাপ্টেন শাহনাজ পারভীনকে দেওয়া সংবর্ধনা অনুপ্রেরণা জোগাবে উল্লেখ করে বাবা এসআই আব্দুস সালাম জানান, আজকের দিনটি আমার জন্য ও মেয়ের জন্য অনেক বড়প্রাপ্তি। আমি ডিআইজি স্যারসহ সকলের প্রতি আন্তরিকভাবে কৃতজ্ঞ। এই সংবর্ধনা আমাদের অনুপ্রেরণা জোগাবে। মেয়ের সাফল্যে আমি গর্বিত।
শাহনাজ পারভীন শাপলা ছোটবেলা থেকেই মেধাবী ছিলেন। কুড়িগ্রামের ফুলবাড়ী পাইলট বালিকা বিদ্যালয় থেকে এসএসসি পরীক্ষা দেন ২০১০ সালে। উত্তীর্ণ হন জিপিএ-৫ পেয়ে। এরপর ভর্তি হন ফুলবাড়ী ডিগ্রি কলেজে। ২০১২ সালে সেখান থেকে উচ্চ মাধ্যমিক পরীক্ষায়ও ভালো ফল করেন।
২০১৩-১৪ সেশনে রংপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি হন। সফলতার সঙ্গে এমবিবিএস পাস করার পর এ বছরই সেনাবাহিনীর ক্যাপ্টেন (আর্মি মেডিকেল কোরে) পদে আবেদন করেন। মেধা আর যোগ্যতায় সেনাবাহিনীতে তার চাকরি হয়। তার বর্তমান কর্মস্থল টাঙ্গাইলের ঘাটাইল।
এসআই আব্দুস সালাম রংপুরের গঙ্গাচড়া মডেল থানায় কর্মরত। তার গ্রামের বাড়ি কুড়িগ্রামের ফুলবাড়ী উপজেলার চন্দ্রখানায়। বর্তমানে চাকরির সুবাদে তিনি পরিবার নিয়ে রংপুরে রয়েছেন। তার তিন সন্তানই মেয়ে।
বড় মেয়ে শাহনাজ পারভীন শাপলা রংপুর মেডিকেল কলেজের ৪৩তম ব্যাচের প্রাক্তন শিক্ষার্থী। বর্তমানে সেনাবাহিনীর ডেপুটি সুপারিনটেনডেন্ট (ডিএসপি)। মেজো মেয়ে উম্মে সালমা একটি বেসরকারি মেডিকেল কলেজের ৩য় বর্ষের শিক্ষার্থী। সবার ছোট স্মৃতিমনি মীম এসএসসি পরীক্ষার্থী।
ফরহাদুজ্জামান ফারুক/এমএসআর