৬৫ দিনের নিষেধাজ্ঞা শেষে মেঘনা নদীতে মাছ ধরতে নেমেছেন নোয়াখালীর বিচ্ছিন্ন দ্বীপ উপজেলা হাতিয়ার জেলেরা। তবে প্রত্যাশিত ইলিশ মিলছে না জেলেদের জালে। কাঙ্ক্ষিত ইলিশের দেখা না পেয়ে হতাশ জেলেরা। যদিও মৎস্য কর্মকর্তারা বলছেন- আগস্ট মাসের মাঝামাঝিতে নদীতে দেখা মিলবে ইলিশের। এই মাসে তেমন ইলিশ পাওয়া যাবে না। 
 
জানা গেছে, হাতিয়ার জেলেরা বুড়িরদোনা ঘাট, কাজির বাজার, সুইজের বাজার, রহমত বাজার, আছকা বাজার, সোনাদিয়া চরচেঙ্গা, লম্বরিয়া, তমরুদ্দি বাজার, জাহাজমারা কাটাখালী, বাংলা বাজার ও নিঝুমদ্বীপের নামার বাজারে সারি সারি ট্রলার নিয়ে মাছ ধরার জন্য অবস্থান করছেন। জেলেরা মাছ ধরে আবার এই ঘাটগুলোতেই ফিরে আসেন। 

শনিবার (২৪ জুলাই) দুপুরে হাতিয়ার বুড়িরদোনা ঘাটে সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, ঘাটে সারি করে মাছ ধরার ট্রলার নিয়ে বসে আছেন জেলেরা। ট্রলার নিয়ে অপেক্ষায় থাকা জেলে কামাল মাঝি ঢাকা পোস্টকে বলেন, মাছ পেলে আমাদের সংসার চলে। গতকাল রাতে আবহাওয়া ভালো ছিল না। আমরা তেমন মাছ পাইনি। আজ তিনদিনের প্রস্তুতি নিয়ে সমুদ্রে যাব। এমনিতেই দুই মাসে অনেক ঋণের মধ্যে আছি। 

ফারুক মাঝি নামে আরেক জেলে ঢাকা পোস্টকে বলেন, গতকাল যে ইলিশ মাছ পেয়েছি তা আকারে অনেক ছোট। নদীর কাছাকাছি থেকে মাছ ধরেছি। গতবার এই সময়ে যে মাছ পেতাম এবার সেই রকম মাছ নেই। যেন পর্যাপ্ত পরিমাণ মাছ পাই- এটাই আল্লাহর কাছে আমাদের চাওয়া।

হাতিয়া উপজেলা মৎস্য কর্মকর্তা অনিল চন্দ্র দাস ঢাকা পোস্টকে বলেন, গতকাল রাতে বৈরী আবহাওয়ার কারণে জেলেরা কম মাছ পেয়েছেন। তবে আগস্ট মাসের মাঝামাঝিতে নদীতে পুরোদমে মাছ পাওয়া যাবে। এখন নদীর তলদেশে মাছ রয়েছে। উপরিভাগে তেমন মাছ নেই। 

জেলা মৎস্য কর্মকর্তা ড. মো. মোতালেব হোসেন ঢাকা পোস্টকে বলেন, মধ্যরাত থেকে জেলেরা নদীতে ট্রলার ভাসিয়েছেন। দীর্ঘ ৬৫ দিনের নিষেধাজ্ঞা শেষে তারা নদীতে নেমেছেন। সরকার ইলিশ মাছ বড় হতে দেওয়ার লক্ষ্যেই এই ৬৫ দিনের নিষেধাজ্ঞা দিয়েছিল। আমরা ধারণা করছি ৬৫ দিনের নিষেধাজ্ঞার উদ্দেশ্য সফল হয়েছে। 

নোয়াখালীর জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ খোরশেদ আলম খান ঢাকা পোস্টকে বলেন, ইলিশ মাছের বংশ বৃদ্ধির জন্য এই নিষেধাজ্ঞা আরোপ করা হয়েছিল। নোয়াখালী জেলায় মোট ৪০ হাজার জেলে রয়েছেন। এর মধ্যে সমুদ্রে মাছ ধরেন ৯ হাজার ৮৬৪ জন জেলে। নিষেধাজ্ঞার এই সময়ে ৯ হাজার ৮৬৪ জন সমুদ্রগামী জেলেকে ৮৬ কেজি করে চাল দেওয়া হয়েছে।

হাসিব আল আমিন/আরএআর