রাত পোহালেই ঈদুল আজহা। পরিজনের সঙ্গে ঈদ উদযাপন করতে বাড়িতে ছুটছে মানুষ। মুন্সিগঞ্জের শিমুলিয়া ঘাটে মঙ্গলবার (২০ জুলাই) ঘরমুখী মানুষের উপচে পড়া ভিড় লক্ষ করা গেছে। রাতভর বৃষ্টির পর শিমুলিয়া ঘাট এলাকায় সকাল থেকেও থেমে থেম বৃষ্টি হচ্ছে। ফলে দক্ষিণবঙ্গের ২১ জেলার মানুষের শিমুলিয়া ঘাটে এসে পড়তে হয় বিড়ম্বনায়।

তবে আজ ঘাটে রয়েছে মোটরসাইকেলের দীর্ঘ সারি। সকালে শুধু মোটরসাইকেল নিয়ে ছেড়ে গেছে কয়েকটি ফেরি। শিমুলিয়া ঘাট থেকে খান বাড়ি পর্যন্ত এ সারি পড়ে। অন্যদিকে ঘাট এলাকায় পারাপারের অপেক্ষায় রয়েছে ৬ শতাধিক ব্যক্তিগত ও পণ্যবাহী গাড়ি।

মঙ্গলবার সকাল থেকে রাজধানী ঢাকাসহ দেশের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে বিভিন্ন যানবাহনে চড়ে যাত্রীরা ঘাটে উপস্থিত হয়ে ফেরি ও লঞ্চে পদ্মা পাড়ি দিচ্ছে। গত কয়েক দিনের ন্যায় পদ্মা নদীতে তীব্র স্রোত থাকায় তিন কিলোমিটার ঘুরে ফেরি শিমুলিয়া ঘাট হতে বাংলাবাজার ঘাটে যাচ্ছে।

রাস্তায় প্রচণ্ড যানজট থাকায় মাওয়া চৌরাস্তা থেকে পায়ে হেঁটে শিমুলিয়া ঘাটে যাচ্ছে যাত্রীরা। বৃষ্টি আর কাদায় যাত্রীদের দুর্ভোগ অনেকগুণ বেড়ে গেছে।

ফেরিঘাটের যানবাহন দীর্ঘ সারি আর লঞ্চঘাটে যাত্রীদের ভিড় রয়েছে। ভোরে মোটরসাইকেল এবং সাধারণ যাত্রী দখলে নেয় ফেরিগুলো। তবে বেলা বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে লঞ্চ চলাচল শুরু হওয়ায় ফেরি ঘাটে যাত্রী চাপ কমতে থাকলেও লঞ্চঘাটে সকাল থেকেই যাত্রীদের গাদাগাদি রয়েছে। লঞ্চে মানা হচ্ছে না নির্দেশিত স্বাস্থ্যবিধি। অর্ধেক যাত্রী ধারণের কথা থাকলেও অধিক যাত্রী নিয়ে লঞ্চ চলাচল করছে।

এদিকে পদ্মার তীব্র স্রোত ও গণপরিবহন ও ব্যক্তিগত গাড়ির চাপ বাড়ায় ফেরিতে যানবাহন পারাপারে বেগ পেতে হচ্ছে। ঘাট অভিমুখে ঢাকা-মাওয়া এক্সপ্রেসওয়েতে পারাপারের অপেক্ষায় শতশত পণ্যবাহী ট্রাক। ঘাট কর্তৃপক্ষ সূত্রে জানা গেছে যানবাহন ও যাত্রী পারাপারে নৌরুটে বর্তমানে ১৫টি ফেরি ও ৮২টি লঞ্চ সচল রয়েছে।

মাওয়া ট্রাফিক পুলিশের টিআই হাফিজুর রহমান ঢাকা পোস্টকে বলেন, রাতে লঞ্চ বন্ধ থাকায় ভোড়ে ঘাট এলাকায় মানুষ আর মোটরসাইকেলের প্রচণ্ড ভিড় হয়। সকালে বেশ কিছু ফেরি শুধু মানুষ আর মোটরসাইকেল নিয়ে ছেড়ে গেছে। যে কারণে আমরা অন্যান্য গাড়ি পার করতে পারি নাই। সে জন্য ঘাটে অন্যান্য গাড়ির চাপ রয়েছে। ঘাটে এ মুহূর্তে ৫ শতাধিক ছোট গাড়ি ৩০টি বাস ও পণ্যবাহী গাড়ি পারাপারের অপেক্ষায় রয়েছে।

হাসাড়া হাইওয়ে থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) সোহরাব আহম্মেদ জানান, মোটরসাইকেল, যাত্রীবাহী বাস, প্রাইভেট কার, পণ্যবাহী ট্রাক যানজটে আটকে আছে। ফজরের আজানের পর থেকে এই যানজট শুরু হয়েছে। যানজট ছাড়াতে হাইওয়ে পুলিশের ৪টি ইউনিটে ফজর থেকে কাজ করে যাচ্ছে।

বিআইডাব্লিউটিএর শিমুলিয়াঘাটের সহকারী ব্যবস্থাপক ফয়সাল আহমেদ ঢাকা পোস্টকে বলেন, নৌরুটে বর্তমানে ১৫টি ফেরি সচল চলছে। রাতে লঞ্চ বন্ধ থাকায় ভোড়ে ফেরিতে যাত্রী ও মোটরসাইকেলের প্রচণ্ড চাপ ছিল। লঞ্চ ছাড়ার পর থেকে চাপ কমেছে। এখন ঘাট এলাকায় পারাপারের জন্য যাত্রী ও পণ্যবাহী মিলিয়ে ৫ শতাধিক যানবাহন রয়েছে। পর্যায়ক্রমে সব যানবাহন পারাপার করা হবে।

ব.ম শামীম/এনএ