আতঙ্ক দেখা দিয়েছে ওই প্রকল্পে বসবাসকারী অন্যদের মাঝে

হস্তান্তরের কয়েক মাসের মধ্যেই ভেঙে পড়েছে ঝিনাইদহ সদর উপজেলার লাউদিয়া গ্রামের মুজিব বর্ষে প্রধানমন্ত্রীর উপহার আশ্রয়ণ প্রকল্পের ঘরের খুঁটি। এতে আতঙ্ক দেখা দিয়েছে ওই প্রকল্পে বসবাসকারী অন্যদের মাঝে।

শনিবার (১৭ জুলাই) সকালে লাউদিয়া গ্রামের আশ্রয়ণ প্রকল্পে গিয়ে দেখা যায়, আবাসনের ১ নং ঘরের ডান পাশের খুঁটি ভেঙে মাটিতে পড়ে কয়েক টুকরো হয়ে গেছে। ঘর ঠেকাতে সেখানে বাশের খুঁটি দেওয়া হয়েছে।

ঘরের বাসিন্দা ফাতেমা খাতুন ঢাকা পোস্টকে জানান, শুক্রবার রাত ১০টার পরে ঘরের সামনে জোরে কিছু ভেঙে পড়ার শব্দ শুনতে পান তারা। বাইরে বেরিয়ে দেখতে পান ঘরের সামনের ডান পাশের খুঁটিটি ভেঙে কয়েক টুকরা হয়ে গেছে। তিনি আরও বলেন, খুঁটি ভেঙে পড়ার পর থেকে খুব ভয়ে আছি। কখন জানি ঘর ভেঙে মাথায় পড়ে, এই ভয়ে ভয়ে রাত কাটাইছি।

আরেক বাসিন্দা তারা খাতুন ঢাকা পোস্টকে বলেন, প্রধানমন্ত্রী আমাগের ঘর দিয়েছে। আমরা এতে খুব খুশি। কিন্তুক সেই ঘরে যুদি থাকতি না পারি, তাহলে নিয়ে কী করব? সরকার তো কম দিইনি। এই ঘর যারা বানাইছে, তারা টাকা মেরে খাইছে। এই জন্যি আজ এই দশা।

লাউদিয়া গ্রামের বাসিন্দা সাহেব আলী বলেন, যে খুঁটি ভেঙে পড়েছে, সেই খুঁটি মনে করেন ৫ ফুট। সেখানে ২ ফুট রড দিয়ে খুঁটি বানাইছে। ঠিকমতো সিমেন্টও দেয়নি। তাহলে খুঁটি টিকবে কী করে?

ঝিনাইদহ সদর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) এস এম শাহীন ঢাকা পোস্টকে বলেন, সরকারের ভাবমূর্তি ক্ষুণ্ন করার জন্য রাতের আঁধারে কে বা কারা এ কাজটি করেছে। এ বিষয়ে তদন্ত চলছে। এ ব্যাপারে তিনি মামলা করার কথাও বলেন।

এ ব্যাপারে জেলা প্রশাসক মজিবর রহমান বলেন, ঘটনা শোনার পর সেখানে সদর ইউএনওকে পাঠানো হয়েছে। এ ছাড়া অতিরিক্ত জেলা প্রশাসককে পাঠানো হয়েছে। তারা প্রতিবেদন দিলে পরবর্তী ব্যবস্থা গ্রহণ করব।

উল্লেখ্য, জেলা প্রশাসক সূত্রে জানা যায়, মুজিব বর্ষে একজন মানুষও গৃহহীন থাকবে না। প্রধানমন্ত্রীর এ কর্মসূচির অধীন জেলায় মোট ৭০৫টি ভূমি ও গৃহহীন পরিবারকে সরকারি ঘর বরাদ্দ দেওয়া হয়েছে। এর মধ্যে প্রথম পর্যায়ে ৪০৭টি ঘর ভূমি ও গৃহহীনদের মাঝে হস্তান্তর করা হয়েছে। এর মধ্যে ঝিনাইদহ সদর উপজেলায় ১৮০টি, শৈলকুপা ৬০টি, হরিণাকুন্ডু ৩০টি, কালীগঞ্জ ২৭টি, কোটচাঁদপুর ৪৬টি এবং মহেশপুর উপজেলায় ৬৪টি ঘর হস্তান্তর করা হয়েছে। 

এ ছাড়া (২০ জুন) দ্বিতীয় পর্যায়ে ১৮৬টি ঘর হস্তান্তর করা হয়েছে। বাকি ঘরগুলো নির্মাণাধীন রয়েছে। এর মধ্যে জেলার দ্বিতীয় পর্যায়ে ঘরের মধ্যে সদর উপজেলায় ১৩৭টি, শৈলকুপায় ৫টি, হরিণাকুন্ডুতে ১০টি, কালীগঞ্জে ৫টি, কোটচাঁদপুরে ১৭টি, মহেশপুরে ১২টি ঘর রয়েছে। ঘর ছাড়াও এসব ভূমি ও গৃহহীন পরিবার ও তাদের বাচ্চাদের জন্য শিক্ষা স্বাস্থ্য কর্মসংস্থানসহ সব ধরনের সুযোগ-সুবিধা নিশ্চিত করতে গ্রোথ সেন্টার, নিকটবর্তী হাটবাজার, বিদ্যুৎ ও খাবার পানির ব্যবস্থাও করা হয়েছে।

আব্দুল্লাহ আল মামুন/এনএ