আলোচিত সাবেক পুলিশ কর্মকর্তা এসি আকরামের মৃত্যু
বাংলাদেশের শীর্ষ সন্ত্রাসীদের গ্রেফতার করে সরকারের কাছ থেকে পুরস্কার পাওয়া আলোচিত সাবেক পুলিশ কর্মকর্তা এসি আকরাম কিডনি সমস্যাজনিত কারণে ঢাকার একটি হাসপাতালে ইন্তেকাল করেছেন (ইন্না লিল্লাহি ওয়া ইন্না ইলাহি রাজিউন)। শুক্রবার (১৬ জুলাই) সকালে ঢাকার ইউনাইটেড হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় তার মৃত্যু হয়।
এসি আকরাম টাঙ্গাইল সদর উপজেলার হুগড়া গ্রামের মরহুম মৌলভী হাবিবুর রহমানের ছেলে। শুক্রবার বাদ আসর তার গ্রামের বাড়ি হুগড়ায় হাবিব কাদের উচ্চ বিদ্যালয় মাঠে জানাজা নামাজ শেষে পারিবারিক কবরস্থানে তাকে দাফন করা হয়।
বিজ্ঞাপন
এ সময় উপস্থিত ছিলেন- টাঙ্গাইল সদর আসনের সংসদ সদস্য ছানোয়ার হোসেন, জেলা জাতীয় পার্টির সাধারণ সম্পাদক অ্যাডভোকেট সালাম চাকলাদার, জেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক অ্যাডভোকেট ফরহাদ ইকবাল, সদর উপজেলা পরিষদের সাবেক চেয়ারম্যান অ্যাডভোকেট খোরশেদ আলম প্রমুখ।
এসি আকরামের চাচাতো ভাই সাংবাদিক মাসুম ফেরদৌস জানান, কয়েক বছর আগে তার কিডনি প্রতিস্থাপন করা হয়। গত ৭ জুলাই তার কিডনিতে সমস্যা দেখা দিলে ইউনাইটেড হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। এ সময় অবস্থার অবনতি হলে ওইদিন সন্ধ্যায় নিবিড় পরিচর্যাকেন্দ্রে (আইসিইউ) ভর্তি করা হয়। সেখানে চিকিৎসাধীন অবস্থায় তার মৃত্যু হয়। মৃত্যুকালে স্ত্রী, এক ছেলে ও এক মেয়ে রেখে গেছেন। তার মৃত্যুতে এলাকায় শোকের ছায়া নেমে এসেছে।
জানা গেছে, পুলিশ বাহিনীতে দায়িত্ব পালনকালে আকরাম হোসাইন বিপিএম (বার) ও পিপিএম (বার) পদক পেয়েছেন। এ ছাড়া দেশের চার রাষ্ট্রপ্রধান প্রেসিডেন্ট জিয়াউর রহমান, প্রেসিডেন্ট হুসাইন মুহাম্মদ এরশাদ, প্রধানমন্ত্রী খালেদা জিয়া ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার কাছ থেকেও জাতীয় পুরস্কারসহ একাধিক পদক গ্রহণ করেছেন।
১৯৮১ সালের ৫ জানুয়ারি আকরাম হোসাইনকে প্রেসিডেন্ট পুলিশ পদকে (পিপিএম) ভূষিত করেন তৎকালীন প্রেসিডেন্ট জিয়াউর রহমান। ১৯৮২ সালের ২৩ মার্চ আকরাম হোসাইনকে শ্রেষ্ঠ পুলিশ অফিসার হিসেবে জাতীয় পদকে ভূষিত করেন তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী শাহ আজিজুর রহমান। ১৯৯২ সালের ৪ জানুয়ারি আকরাম হোসাইনকে প্রেসিডেন্ট পুলিশ পদকে (পিপিএম) ভূষিত করেন তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী খালেদা জিয়া।
এ ছাড়া ১৯৯৮ সালের ৮ মার্চ তাকে বাংলাদেশ পুলিশ পদকে (বিপিএম) ভূষিত করেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। তিনি জাতীয় স্বেচ্ছাসেবী হিসেবে সংগঠনের কমিটমেন্ট পদক, জাতীয় মানবাধিকার সাংবাদিক সংস্থার স্বর্ণপদকও লাভ করেন।
এর আগে ১৯৯৭ সালে সরকার কর্তৃক ধরিয়ে দেওয়ার জন্য পুরস্কার ঘোষিত চার সন্ত্রাসীর মধ্যে সুইডেন আসলাম, জোসেফ ও বিকাশকে গ্রেফতার করে সুনাম অর্জন করেন। পরবর্তীতে সরকার ঘোষিত দেশের ২৩ শীর্ষ সন্ত্রাসীর মধ্যে ১৭ জনকে গ্রেফতার করে অনন্য নজির স্থাপন করেন তিনি।
এসি আকরাম তার নিজ গ্রামের হুগড়া হাবিব কাদের উচ্চ বিদ্যালয়, হুগড়া বেগুনটাল দাখিল মাদরাসাসহ একাধিক শিক্ষা ও ধর্মীর প্রতিষ্ঠান প্রতিষ্ঠা করেছেন। এ ছাড়া শ্যামার ঘাট ব্রিজ, টাঙ্গাইল হুগড়া সড়ক, বিদ্যুৎ সংযোগ, সরকারি হাসপাতাল, ইউনিয়ন পরিষদ, ইউনিয়ন ভূমি অফিস স্থাপনসহ নানা উন্নয়নের অংশীদার তিনি।
অভিজিৎ ঘোষ/এসপি