দৌলতদিয়ায় পারাপারের অপেক্ষায় ৫ শতাধিক গাড়ি
লকডাউন শিথিল হওয়ায় চলছে গণপরিবহন। কোরবানির পশুবাহী ট্রাকের কারণে সড়কে বেড়েছে যানবাহনের চাপ। তার ওপর পদ্মায় তীব্র স্রোতে বিঘ্নিত হচ্ছে ফেরি চলাচল। এসব কারণে পাটুরিয়া-দৌলতদিয়া নৌরুটের দৌলতদিয়া প্রান্তে সৃষ্টি হয়েছে যানবাহনের দীর্ঘ সারি।
সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, অনেকদিন পর স্বরূপে ফিরেছে দৌলতদিয়া ফেরি ঘাট। বিধিনিষেধের সময় ঘাটের সংযোগ সড়কে নদী পারের অপেক্ষায় যানবাহন খুব একটা ছিল না। এখন দুই দিনেই গাড়ির চাপ বেড়ে গেছে কয়েক গুণ। প্রতিটি গাড়িকে ফেরিতে ওঠার জন্য অপেক্ষা করতে হচ্ছে দীর্ঘ সময়।
বিজ্ঞাপন
সকাল ১০টা নাগাদ ঢাকা-খুলনা মহাসড়কের দৌলতদিয়া জিরো পয়েন্ট থেকে ইউনিয়ন বোর্ড পর্যন্ত ৩ কিমি রাস্তায় তিন শতাধিক পশুবাহী ও যাত্রীবাহী গাড়ি দাঁড়িয়ে থাকতে দেখা গেছে। এতে ভোগান্তিতে পড়েছেন চালক ও যাত্রীরা।
এ ছাড়া দৌলতদিয়া ঘাট এলাকায় যানজট এড়াতে রাজবাড়ী-কুষ্টিয়া আঞ্চলিক মহাসড়কের গোয়ালন্দ মোড় থেকে কল্যাণপুর পর্যন্ত ৩ কিমি এলাকায় দুই শতাধিক অপচনশীল পণ্যবাহী ট্রাক আটকে রাখা হয়েছে। যেগুলো রাতে সিরিয়াল অনুযায়ী পার করা হবে।
দীর্ঘ এই যানজটে বাস ও ব্যক্তিগত গাড়ির যাত্রীদের পাশাপাশি দুর্ভোগে পড়েছে ট্রাকে থাকা হাজার হাজার গরু। এ অবস্থায় বিপাকে পড়েছেন গরু ব্যবসায়ীরা। তীব্র গরমে অনেক গরু অসুস্থ হয়ে পড়ছে। কিছু গরু মারা যাওয়ার খবরও পাওয়া গেছে। গরম থেকে বাঁচাতে গরুগুলোকে হাত পাখা দিয়ে বাতাস করতে দেখা গেছে ট্রাকে থাকা সহকারীদের।
বরিশাল থেকে ছেড়ে আসা গোল্ডেন লাইন পরিবহনের চালক আলিম সরদার জানান, ভোরে দৌলতদিয়া ঘাটে এসে পৌঁছাই। কিন্তু এখন পর্যন্ত ফেরির নাগাল পাইনি। সিরিয়ালে দাঁড়িয়ে আছি। প্রচণ্ড গরমে যাত্রীরাও অতিষ্ঠ হয়ে উঠছেন। ফেরি পেতে আরও ঘণ্টা দুয়েক সময় লাগবে। ঘাটে পশুবাহী ট্রাক থাকায় বাড়তি চাপ রয়েছে। ফেরির সংখ্যা বাড়লে এই চাপ আর থাকবে না।
সুলতানপুর থেকে ট্রাকে গরু নিয়ে ঢাকায় যাচ্ছেন মোহাম্মদ আলী শেখ। তিনি জানান, ফজরের নামাজ পড়ে বাড়ি থেকে বের হয়েছি। এখন দৌলতদিয়া ঘাটে এসে আটকে পড়েছি। এই তীব্র গরমে গরুর স্ট্রোক করার আশঙ্কা থাকে। তাই একটু চিন্তায় আছি, ঠিকমতো গরু নিয়ে ঢাকায় পৌঁছাতে পারব কি না। কখন ফেরিতে উঠতে পারব তাও বলতে পারছি না।
বাংলাদেশ অভ্যন্তরীণ নৌপরিবহন কর্তৃপক্ষ (বিআইডব্লিউটিএ) দৌলতদিয়া ঘাট শাখার ব্যবস্থাপক শিহাব উদ্দিন ঢাকা পোস্টকে বলেন, দৌলতদিয়া-পাটুরিয়া নৌরুটে বর্তমানে ছোট-বড় মিলে ১৫টি ফেরি চলাচল করছে। ঈদ-উল আজহা উপলক্ষ্যে দু’একদিনের মধ্যে আরও দু’টি রোরো ফেরি যুক্ত হবে।
মীর সামসুজ্জামান/এসপি/জেএস