আশ্রয়ণ প্রকল্প
‘শেখ হাসিনার দেওয়া ঘর পাইয়া আমি এহন সুখি’
মুজিব বর্ষ উপলক্ষে দেশের হতদরিদ্র মানুষকে আশ্রয়ণ প্রকল্পের আওতায় ঘর দিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। এর আওতায় নারায়ণগঞ্জের রূপগঞ্জ উপজেলায় ঘর পেয়েছেন ১৫০ অসহায় ও দরিদ্র পরিবার।
উপজেলা প্রশাসন সূত্রে জানা গেছে, আশ্রয়ণ প্রকল্পের আওতায় রূপগঞ্জে মোট ৩০৩টি ঘর বরাদ্দ হয়েছে। একেকটি পরিবারের জন্য ২ শতক জমি ও ১ লাখ ৭১ হাজার টাকা ব্যয়ে টিন শেডের দুই কক্ষ বিশিষ্ট ঘর নির্মাণ করে দেওয়া হচ্ছে। উপজেলার ১৫০ পরিবার ইতোমধ্যে স্বপ্নের এ ঘরে বসবাস শুরু করেছেন, ঘরে ওঠার অপেক্ষায় রয়েছে আরও ১৫৩ পরিবার।
বিজ্ঞাপন
রূপগঞ্জ উপজেলায় ঘর পাওয়াদের মধ্যে একজন ৭০ বছর বয়সী রুনা বেগম। তার স্বামী মারা গেছেন বহু দিন আগে। ছিল না থাকার কোনো ঘর। ভিক্ষা করে ও গৃহকর্মীর কাজ করে এক ছেলে ও এক মেয়েকে বড় করেছেন। বহু কষ্টে মেয়েকে বিয়েও দিয়েছেন। ছেলে কাদির বিয়ে করে চলে গেছে ঢাকায়। ছেলে চলে যাওয়ার পর থেকে রুনা বেগমকে অন্যের বাড়ির বারান্দাতেও থাকতে হয়েছে। তিনি কখনও ভাবেননি নিজের জমিতে, নিজের ঘরে থাকতে পারবেন।
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার আশ্রয়ণ প্রকল্পের আওতায় রুনা বেগম পেয়েছেন নিজের নামে দুই শতক জমি ও ঘর। বৈদ্যুতিক সংযোগ ও পানির ব্যবস্থাও করা হয়েছে উপজেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে।
শুধু রুনা বেগম নয় শ্রমিক ইউসুফ, ৯০ বছর বয়সী সজীমুন, পঙ্গু শফিকুল আলমও মাথা গোজার ঠাঁই পেয়েছেন।
শ্রমিক ইউসুফ জানান, এক মেয়ে ও স্ত্রী নিয়ে তার সংসার। গত ২০ বছর ধরে মুড়াপাড়া নগর এলাকায় পরিবার নিয়ে ভাড়া থাকতেন। বাপ-দাদার কোনো ভিটেমাটি নেই। কোনোদিন তার আয় হয় তো, কোনো দিন হয় না। অথচ মাসে ৪ হাজার টাকা বাড়ি ভাড়া দেওয়া লাগতো। অথচ সেই ইউসুফও এখন থাকছেন নিজের ঘরে।
এসব কথা বলতে গিয়ে চোখে পানি চলে আসে ইউসুফের। প্রধানমন্ত্রীকে ধন্যবাদ দিতেও ভোলেননি তিনি।
বিরাব এলাকায় ঘর পাওয়া হযরত আলী বলেন, বাবাগো আমি ভিক্ষা কইরা চলি, আমার পোলা-মাইরারা আমারে দেহে না। আগে রাস্তায়, নয়তো মাইনষের বাড়ি বাড়ি থাকতাম। শেখ হাসিনার দেওয়া ঘর পাইয়া আমি এহন সুখি।
উপজেলা নির্বাহী অফিসার (ইউএনও) শাহ্ নূসরাত জাহান বলেন, ঘরগুলো নির্মাণের সময় আমরা নিজেরা সরেজমিনে থেকে পর্যবেক্ষণ করায় ঘরগুলো খুব মজবুত হয়েছে। একটি ঘরে সামান্য ত্রুটি দেখা দিলে তা তাৎক্ষণিক ঠিক করে দেওয়া হয়েছে। যারা এখানে থাকছেন আমরা প্রতিনিয়ত তাদের খোঁজ রাখছি। উপকারভোগীরা অনেক সন্তুষ্ট।
মো. মাহবুবুর রহমান ভূঁইয়া/এনএফ