হামিদ হোসেন

কক্সবাজারের উখিয়া উপজেলার বালুখালী থেকে হামিদ হোসেন (২১) নামে এক ব্যাংক কর্মকর্তাকে অপহরণ করেছে রোহিঙ্গা সন্ত্রাসীরা। অপরিচিত নম্বর থেকে ফোন করে মুক্তিপণ দাবি করছে তারা। অপহরণের তিন দিন পেরিয়ে গেলেও তাকে উদ্ধারে তৎপরতা নেই প্রশাসনের। স্বজনদের দাবি, তাকে রোহিঙ্গা সন্ত্রাসী গ্রুপ হারকা আল ইয়াকিনের সদস্যরা অপহরণ করেছে। 

অপহৃত হামিদ হোসেন টেকনাফ উপজেলার হোয়াইক্যং ইউনিয়নের কাঞ্জরপাড়া এলাকার খায়রুল আলমের ছেলে। তিনি আল আরাফাহ ইসলামী ব্যাংকের উখিয়ার কুতুপালং শাখার ক্যাশিয়ার হিসেবে কর্মরত।

পরিবার ও ব্যাংক সূত্রে জানা যায়, ৩০ জুন সকালে নিজ বাড়ী হোয়াইক্যংয়ের কাঞ্জরপাড়া থেকে আল আরাফাহ ইসলামী ব্যাংক কুতুপালং শাখায় যাওয়ার পথে বালুখালী পানবাজার এলাকা থেকে নিখোঁজ হন হামিদ। এরপর থেকে আর কোনো খোঁজ মেলেনি তার। থানায় অভিযোগের পর একটি নম্বর (০১৯৫৬০৭৪২৬৮) থেকে ফোন দিয়ে মুক্তিপণ দাবি করা হচ্ছে বলে অভিযোগ পরিবারের।

পরিবারের পক্ষ থেকে থানায় দায়ের করা অভিযোগে বলা হয়, ‘বাড়ি থেকে কর্মস্থল কুতুপালংয়ে যাওয়ার পথে হামিদ হোসেনকে তালহা নামে এক ব্যক্তি ফোন করে বালুখালীর পানবাজারে নামতে বলেন। সেখানে গিয়ে পরিবারের লোকজনকে ফোনও দেন হামিদ। এর কিছুক্ষণ পরেই নিখোঁজ হন হামিদ। বালুখালী থেকে তাকে রোহিঙ্গা সন্ত্রাসী গ্রুপ হারাকা আল ইয়াকিনের সদস্যরা তুলে নিয়েছে।’

>> সীমান্তে টাওয়ার বসিয়ে তথ্য নিচ্ছে মিয়ানমার

হামিদ হোসেনের ভাই হারুনুর রশীদ বলেন, ‘প্রশাসনের সব দফতরে গিয়েছি। এখনো কেউ সঠিকভাবে কাজ করছে না। অন্যদিকে ২০ লাখ টাকা মুক্তিপণ দাবি করছে সন্ত্রাসীরা। রোহিঙ্গা সন্ত্রাসী গ্রুপ ছাড়া এগুলো কেউ করতে পারে না। কিছুদিন আগেও আমাদের এলাকা থেকে এক সিএনজি চালককে অপহরণের পর মুক্তিপণ নিয়েছে তিন লাখ টাকা। এভাবে আর কতদিন নিরাপত্তাহীনতায় থাকতে হবে আমাদের?’

অপহৃত হামিদ হোসেনের চাচা খায়রুল বাশার বলেন, ‘নিখোঁজের পর থেকে হামিদ হোসেনের বাবা খায়রুল আলমসহ সবাই চারদিকে খোঁজাখুজি করেছি। উখিয়া থানায় অভিযোগও দিয়েছি। কোথাও তাকে পাওয়া যায়নি। এদিকে অপরিচিত এক নম্বর থেকে ফোন করে মুক্তিপণ দাবি করা হয়েছে। এ অবস্থায় পরিবারের সবাই ভেঙে পড়েছেন।’

আল আরাফাহ ইসলামী ব্যাংক কক্সবাজার শাখার ব্যবস্থাপক মো. বেলাল উদ্দিন ঢাকা পোস্টকে বলেন, ‘ক্যাশিয়ার হামিদের অপহরণের বিষয়ে ব্যাংকের হেড অফিসে জানানো হয়েছে। পরিবারের পক্ষ থেকে দাবি করা হয়েছে তিনি ব্যাংকে যাওয়ার পথে নিখোঁজ হয়েছেন। আমরাও বিষয়টি নিয়ে চিন্তিত।’

জানতে চাইলে রাজপালং ইউনিয়ন পরিষদের সদস্য (কুতুপালং) হেলাল উদ্দিন বলেন, ‘ব্যাংকের ম্যানেজারের কাজ থেকে বিষয়টি শুনেছি। কিন্তু কারা তাকে অপহরণ করেছে তা এখনো জানা যায়নি।’

অভিযোগ পাওয়ার বিষয়টি নিশ্চিত করে উখিয়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) সঞ্জুর মোর্শেদ বলেন, ‘তাকে ব্যাংকে আসার পর নিয়ে যাওয়া হয়নি। পরিবারের মতে আসার পথে নিয়ে গেছে। বিষয়টি নিয়ে কাজ করছি। দ্রুত একটি রেজাল্ট আসবে।’

বালুখালী রোহিঙ্গা শিবিরে দায়িত্বরত ৮ আমর্ড পুলিশ ব্যাটালিয়নের অধিনায়ক এসপি শিহাব কায়সার খান ঢাকা পোস্টকে বলেন, ‘অপহরণকারীরা ক্যাম্পের কোথাও অবস্থানের তথ্য পেলে কাজ শুরু করব। শুধু পুলিশ নয়, পরিবারের পক্ষ থেকে লিখিতভাবে জানানো হলেও সহযোগিতা করবে এপিবিএন।’

ওএফ/জেএস