শাহিন হাওলাদার

সালিশ বৈঠকে কিশোরীকে দেখে পছন্দ হওয়ায় তাৎক্ষণিক বিয়ে করা সেই চেয়ারম্যান শাহিন হাওলাদারকে (৬০) এবার তালাক দিয়ে বাবার বাড়ি ফিরে গেছেন কিশোরী নসিমন বেগম (১৪)। শনিবার (২৬ জুন) রাতে তালাকের বিষয়টি কিশোরীর বাবা নজরুল ইসলাম নিশ্চিত করেছেন।

জানা গেছে, কনকদিয়া ইউনিয়নের নারায়নপাশা গ্রামের বাসিন্দা মো. রমজান (২৫) একই ইউনিয়নের চুনারপুল এলাকার অষ্টম শ্রেণির এক ছাত্রীর প্রেমের সম্পর্ক গড়ে ওঠে। কিন্তু প্রেমের সম্পর্ক মেনে নিতে পারেননি মেয়েটির বাবা। তিনি বিষয়টি কনকদিয়া ইউপির নবনির্বাচিত চেয়ারম্যান মো. শাহিন হাওলাদারকে জানান। পরে চেয়ারম্যান শাহিন হাওলাদার আনুষ্ঠানিকভাবে ওই যুবক ও কিশোরীর বিয়ে দেওয়ার কথা বলে কনকদিয়া ইউপি কার্যালয়ে সালিশ বৈঠকের আয়োজন করেন। সে অনুযায়ী শুক্রবার সকাল ৯টায় দুই পরিবারের সদস্যরা ইউপি কার্যালয়ে যান। 

সেখানে মেয়েটিকে দেখে পছন্দ হয়ে যায় চেয়ারম্যানের। তিনি মেয়েটিকে বিয়ে করার আগ্রহ দেখান। মেয়ের বাবা এতে রাজি হলে বিকেলেই কাজি ডেকে পাঁচ লাখ টাকা দেনমোহরে মেয়েটিকে বিয়ে করেন চেয়ারম্যান শাহিন হাওলাদার। বিয়ের কাবিন নামায় মেয়েটির জন্মতারিখ উল্লেখ করা হয়েছে ২০০৩ সালের ১১ এপ্রিল। কিন্তু জন্মনিবন্ধন ও পিএসসি পাসের সনদ অনুযায়ী মেয়েটির জন্মতারিখ ২০০৭ সালের ১১ এপ্রিল। বিয়ের পর মেয়েটিকে নিজের বাড়িতে নিয়ে যান চেয়ারম্যান। এ সময় বাড়িতে তার প্রথম স্ত্রী ও পরিবারের সদস্যরা উপস্থিত ছিলেন না।

ইউপি চেয়ারম্যান শাহিন হাওলাদার ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক। তিনি গত ২১ জুন অনুষ্ঠিত ইউপি নির্বাচনে আওয়ামী লীগের প্রার্থী হিসেবে চেয়ারম্যান নির্বাচিত হয়েছেন। তার স্ত্রী আছে। সেই সংসারে তাদের এক ছেলে ও এক মেয়ে রয়েছে। ছেলেকে বিয়েও দিয়েছেন।

এদিকে প্রেমিকার বিয়ের খবর শুনে প্রেমিক মো. রমজান আত্মহত্যার চেষ্টা করেন। পরে অচেতন অবস্থায় শুক্রবার রাত সাড়ে ৯টার দিকে তাকে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে যান স্থানীয় গ্রাম পুলিশ মো. ফিরোজ আলম।

ইউপি চেয়ারম্যান শাহিন হাওলাদার ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক। তিনি ২১ জুন অনুষ্ঠিত ইউপি নির্বাচনে আওয়ামী লীগের প্রার্থী হিসেবে চেয়ারম্যান নির্বাচিত হয়েছন।

তালেকের বিষয়ে কিশোরী নসিমনের পিতা নজরুল ইসলাম জানান, মেয়ে এখন তাদের বাড়িতেই আছেন। শুক্রবার (২৫ জুন) দুপুরে কনকদিয়া ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান শাহিন হাওলাদার পাঁচ লাখ টাকা দেনমোহরে তার মেয়েকে বিয়ে করেছিলেন। স্থানীয় কাজি মো. আবু সাদেক বিয়ে পড়িয়েছিলেন। এই বিয়ের পর তা জানাজানি হলে শনিবার (২৬ জুন) সন্ধ্যায় ওই একই কাজীর মাধ্যমেই তালাক সম্পন্ন হয়েছে। 

ইউনিয়ন চেয়ারম্যান শাহিন হাওলাদার জানান, ওই মেয়ে তাকে স্বামী হিসেবে মেনে না নেওয়ায় এমন সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। মেয়েটিকে তার বাবার বাড়িতে পাঠানো হয়েছে।

মহিব্বুল্লাহ্ চৌধুরী/ওএফ