মা ও ছেলের পরিচয়পত্র

মায়ের জন্মের ২৫ বছর আগেই ছেলের জন্ম! বাস্তবে সম্ভব না হলেও কাগজে-কলমে এমনই দেখা গেছে। দেখা গেছে, জাতীয় পরিচয়পত্রের হিসাব অনুযায়ী মায়ের চেয়ে ছেলে ২৫ বছরের বড়। পরিচয়পত্রে এমন ভুল থাকায় পরিবারটিকে পড়তে হচ্ছে নানা সমস্যায়। 

রাজবাড়ী জেলার বালিয়াকান্দি উপজেলার নারুয়া ইউনিয়নের গঙ্গারামপুর গ্রামের ফিকির লস্কারের স্ত্রী সুফিয়া বেগম। জাতীয় পরিচয়পত্র অনুযায়ী তার জন্মতারিখ ১৯৭২ সালের ১৫ জুন, তার বড় ছেলে মো. কওশের আলীর জন্ম তারিখ ১৯৪৭ সালের ১ ডিসেম্বর। জাতীয় পরিচয়পত্র অনুযায়ী মা ও ছেলের বয়সের পার্থক্য দাঁড়ায় ২৫ বছর। অর্থাৎ ছেলে মা থেকে ২৫ বছরের বড়। ছেলে কওশের আলী তার মায়ের চেয়ে ২৫ বছর আগেই জন্ম নিয়েছেন!

ভুক্তভোগী মো. কওশের আলী বলেন, আমার জাতীয় পরিচয়পত্রে জন্মতারিখ দেওয়া ১৯৪৭ সালের ১ ডিসেম্বর, আর মায়ের জন্ম তারিখ ১৯৭২ সালের ১৫ জুন। কাগজে-কলমে মায়ের জন্মের ২৫ বছর আগেই আমার জন্ম। এমন ভুল থাকায় আমি সরকারি বিভিন্ন সহায়তা পাওয়া থেকে বঞ্চিত হচ্ছি। আমার মা বয়স্ক ভাতাসহ সব সরকারি অনুদান থেকে বঞ্চিত হচ্ছেন।

তিনি আরও বলেন, জাতীয় পরিচয়পত্রের এই ভুলের খেসারত আজকে আমাদের দিতে হচ্ছে। আমরা গরিব, খেয়ে না খেয়ে দিন পার করি। পরিচয়পত্রে ভুল থাকায় সরকারি সব সুযোগ-সুবিধা আমরা পাচ্ছি না। তদন্ত করে জাতীয় পরিচয়পত্র যাচাই-বাছাই কার্যক্রমের সঙ্গে জড়িতদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়ার দাবি জানাচ্ছি।

এ বিষয়ে নারুয়া ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান মো. আব্দুস সালাম মাস্টার বলেন, জাতীয় পরিচয়পত্রের মতো এমন গুরুত্বপূর্ণ জিনিসে এমন ভুল সত্যিই কষ্টদায়ক। ইতোমধ্যে অনেকেই আমার কাছে এসেছেন, যাদের মধ্যে কেউ চার বছরেই বাবা হয়েছেন আবার কেউ মায়ের চেয়ে ২৫ বছরের বড়। তাদের পরিচয়পত্রে এমন ভুলের কারণে প্রতিনিয়তই আমাদের পড়তে হচ্ছে নানা বিড়ম্বনায়। 

এ বিষয়ে বালিয়াকান্দি উপজেলা নির্বাচন অফিসার মো. নিজাম উদ্দিন ঢাকা পোস্টকে বলেন, শুনেছি চেয়ারম্যান-মেম্বারের কাছে তারা বেশি ঘোরা-ঘুরি করেছিলেন। তারা কখনও বয়স সংশোধনের জন্য অফিসে আসেননি। যদি আসেন তাহলে তাদের প্রয়োজনীয় কাগজপত্র দেখে খুব দ্রুত বয়স সংশোধন করা হবে।

মীর সামসুজ্জামান/আরএইচ