মুজিব শতবর্ষ উপলক্ষে সারাদেশের মতো প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার উপহার হিসেবে নতুন ঘর পেয়েছেন কুষ্টিয়া জেলার কুমারখালী উপজেলার ভূমিহীনরা। উপজেলার চরসাদীপুর ইউনিয়নের ৩ নম্বর ওয়ার্ডের ঘোষপুরে তৈরি করা হয়েছে আশ্রয়ণ প্রকল্পের ২৫টি ঘর। ১৭ জুন (বৃহস্পতিবার) এসব ঘর ভূমিহীন ও গৃহহীন পরিবারের মাঝে হস্তান্তর করা হয়।

তবে হস্তান্তরের একদিন পরেই শুক্রবার (১৮ জুন) বৃষ্টির পানিতে সেখানে জলাবদ্ধতা সৃষ্টি হয়। এ কারণে চরম ভোগান্তি পোহাচ্ছেন উপকারভোগীরা। বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন কুমারখালী উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মো. রাজীবুল ইসলাম খান।

জানা গেছে, আশ্রয়ণ-২ প্রকল্পের আওতায় গৃহহীনদের জন্য দুর্যোগসহনীয় বাসযোগ্য গৃহনির্মাণকাজ ইতিমধ্যে শেষ করে ১৭ জুন উপজেলার ঘোষপুর গ্রামের প্রকল্পের ২৫টি ঘর নির্ধারিত ব্যক্তিদের কাছে হস্তান্তর করা হয়। কিন্তু উদ্বোধনের পরের দিনই থেমে থেমে বর্ষণের কারণে জলাবদ্ধতার সৃষ্টি হয়েছে।

সরেজমিনে দেখা যায়, ২৫টি ঘরের মধ্যে প্রায় ১৫টি ঘরেই পানি ঢুকেছে। এতে দুর্ভোগ পোহাতে হচ্ছে সেখানকার মানুষদের। পানিনিষ্কাশনের ব্যবস্থা না থাকায় ঘরের মধ্যে থইথই অবস্থা। ভুক্তভোগীরা দ্রুত এই জলাবদ্ধতা নিরসনের দাবি জানিয়েছেন।

আশ্রয়ণ প্রকল্পের বাসিন্দা মকসেদ আলী মুকুল ঢাকা পোস্টকে বলেন, আমি পেশায় একজন হকার। আমার ঘরবাড়ি-জমাজমি কিছুই ছিল না। আমি যেখানে ব্যবসা করতাম, সেখানেই থাকতাম। এখন শেখ হাসিনার উপহার পেয়ে নিজস্ব একটা ঠিকানা হয়েছে। এখন যেখানেই থাকি না কেন, দিন শেষে ঘরে এসে শান্তিতে থাকতে পারব। কিন্তু বৃষ্টি হওয়ায় আমার ঘরে পানি জমে যায়। সারারাত ঘুমাতে পারিনি। দ্রুত এই সমস্যার সমাধান চাই।

উপকারভোগী হালিমা খাতুন বলেন, আমি বিধবা মানুষ। আমার একটি ছেলেসন্তান আছে। ৩০ বছর ছেলেকে নিয়ে বাপের বাড়ি ছিলাম। দুই দিন আগে মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর উপহার পেয়ে অনেক খুশি হয়েছিলাম। কিন্তু এখন আমাদের ঘরের মধ্যে বৃষ্টির পানি যাওয়ার কারণে অনেক কষ্টে আছি।

চরসাদীপুর ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) চেয়ারম্যান তোফাজ্জল হোসেন মানিক ঢাকা পোস্টকে বলেন, আশপাশের জায়গার তুলনায় প্রকল্পের ঘর নির্মাণ করা জায়গাটি নিচু। শুক্রবারের বৃষ্টিতে আশ্রয়ণ প্রকল্পের বেশ কয়েকটি ঘরে বৃষ্টির পানিতে জলাবদ্ধতা সৃষ্টি হয়েছে। এতে তাদের দুর্ভোগ পোহাতে হচ্ছে।

উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তা (পিআইও) বলেন, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার উপহার হিসেবে ভূমিহীন ও গৃহহীন ২৫ পরিবারের মধ্যে ঘোষপুরে ২৫টি বাড়ির চাবি হস্তান্তর করা হয়েছে। তবে জলাবদ্ধতার বিষয়টি অনাকাঙ্ক্ষিত। দ্রুত সমাধানের চেষ্টা চলছে।

কুমারখালী উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) রাজিবুল ইসলাম খান বলেন, আমাদের এই বিষয়ে অবগত করা হয়েছে। আমাদের প্রতিনিধি সেখানে গিয়ে দেখে এসেছেন। সেখানে জলাবদ্ধতা সৃষ্টি হয়েছে। যত দ্রুত সম্ভব আমরা এই সমস্যার সমাধান করে দেব।

রাজু আহমেদ/এনএ/জেএস