প্রাণঘাতি করোনা সংক্রমণে রাজশাহী মেডিকেল কলেজ (রামেক) হাসপাতালে আরও ১৩ জন মারা গেছেন। চিকিৎসাধীন অবস্থায় মঙ্গলবার (১৫ জুন) সকাল ৯টা থেকে বুধবার (১৬ জুন) সকাল ৯টার মধ্যে হাসপাতালের করোনা ইউনিটে মারা যান তারা।

এদের মধ্যে পাঁচজন করোনায় এবং আটজন করোনার উপসর্গ নিয়ে মারা গেছেন। এই ১৩ জনের মধ্যে আটজনের বাড়ি রাজশাহী জেলায়। এ ছাড়া চাঁপাইনবাবগঞ্জের চারজন এবং কুষ্টিয়ার একজন মারা গেছেন। করোনা সংক্রমণ ও উপসর্গ নিয়ে হাসপাতালে এসেছিলেন তারা।

এদিকে করোনার প্রকোপ বেড়ে যাওয়ায় বুধবার (১৬ জুন) থেকে নিয়মিত সংবাদ সম্মেলন স্থগিত ঘোষণা করেছেন রামেক হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ।

সংবাদ সম্মেলন করে রামেক হাসপাতাল করোনা ইউনিটের সার্বিক খবরাখবর গণমাধ্যমে তুলে ধরতেন পরিচালক ব্রিগেডিয়ার জেনারেল শামীম ইয়াজদানী।

রামেক হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে, গত ২৪ ঘণ্টায় রামেক হাসপাতালের করোনা আইসোলেশন ওয়ার্ডে ১৩ জন মারা গেছেন। এদের মধ্যে সর্বোচ্চ তিনজন করে মারা গেছেন ১ এবং ১৫ নম্বর ওয়ার্ডে। আইসিইউ ও ৩ নম্বর ওয়ার্ডে দুজন করে মারা গেছেন। এ ছাড়া একজন করে মারা গেছেন ২২, ২৫, ৩৯ ও ৪০ নম্বর ওয়ার্ডে।

এই এক দিনে করোনা সংক্রমণে মারা গেছেন পাঁচজন। এদের মধ্যে তিনজনই করোনার হটস্পট রাজশাহী জেলার বাসিন্দা। অন্য দুজনের বাড়ি চাঁপাইনবাবগঞ্জ জেলায়। উপসর্গ নিয়ে একই দিনে হাসপাতালে মারা গেছেন আরও ৮ জন। এদের মধ্যে রাজশাহীর পাঁচজন, চাঁপাইনবাবগঞ্জে দুজন এবং কুষ্টিয়ার একজন। স্বাস্থ্যবিধি মেনে মরদেহ দাফনের পরামর্শ দিয়েছে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ।

হাসপাতাল সূত্র আরও জানিয়েছে, ৩০৫ শয্যার রামেক হাসপাতালের করোনা ইউনিটে বুধবার সকাল ৯টা পর্যন্ত রোগী ভর্তি ছিলেন ৩৪৪ জন। এর মধ্যে আইসিইউতে ভর্তি রয়েছেন ২০ জন। করোনা নিয়ে এ পর্যন্ত হাসপাতালে ভর্তি রয়েছেন ১৬২ জন। এ ছাড়া উপসর্গ নিয়ে ভর্তি রয়েছেন ১৫৫ জন। করোনা ধরা পড়েনি হাসপাতালে ভর্তি ২৭ জনের নমুনায়। গত ২৪ ঘণ্টায় হাসপাতালে ভর্তি হয়েছেন ৪৮ জন। এই এক দিনে হাসাপাতাল ছেড়েছেন ২৩ জন।

মঙ্গলবার (১৫ জুন) রাজশাহী মেডিকেল কলেজ (রামেক) হাসপাতালের ল্যাবে ১৮৭ জনের এবং রাজশাহী মেডিকেল কলেজ পিসিআর ল্যাবে ৪৫৮ জনের নমুনা পরীক্ষা হয়েছে। এর মধ্যে রামেক হাসপাতাল ল্যাবে ৭৭ ও রামেক ল্যাবে ১৫২ জনের নমুনায় করোনা শনাক্ত হয়েছে।

পরীক্ষার অনুপাতে রাজশাহীতে সবেচেয়ে বেশি ৪৩ দশমিক ৪৩ শতাংশ নমুনায় করোনা শনাক্ত হয়। এ ছাড়া নাটোরে ২৫ দশমিক ১৮ শতাংশ এবং চাঁপাইনবাবগঞ্জে ২৪ দশমিক ০৬ শতাংশ নমুনায় করোনা ধরা পড়েছে।

ফেরদৌস সিদ্দিকী/এসপি