মাদারীপুরে একই স্থানে পক্ষে-বিপক্ষে মানববন্ধন করাকে কেন্দ্র করে আওয়ামী লীগের বিবদমান দুই গ্রুপের মধ্যে ধাওয়া-পাল্টা ধাওয়া ও সংঘর্ষের ঘটনা ঘটেছে। এতে এক সাংবাদিক, তিনজন পুলিশসহ আহত হয়েছেন ১৫ জন। এ সময় আটটি মোটরসাইকেল ও বেশ কিছু ব্যবসা প্রতিষ্ঠান ভাঙচুর করা হয়েছে। 

স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, সাবেক নৌপরিবহন মন্ত্রী ও মাদারীপুর-২ আসনের সংসদ সদস্য শাজাহান খানের বাবা বীর মুক্তিযোদ্ধা মৌলভী আছমত আলী খানকে নিয়ে কটূক্তিমূলক বক্তব্য দেওয়ায় মাদারীপুরে বেশ কিছু দিন ধরে শাজাহান খান গ্রুপের নেতাকর্মীরা প্রতিবাদ সভা ও মানববন্ধন করে আসছেন। এরই ধারাবাহিকতায় তারা সকাল ১০টার দিকে মৌলভী আছমত আলী খানকে নিয়ে কটূক্তিকারী মাদারীপুর জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি শাহাবুদ্দিন মোল্লার পদত্যাগের দাবিতে উপজেলার কেন্দুয়া ইউনিয়নের ঢাকা-বরিশাল মহাসড়কের কলাবাড়ি স্ট্যান্ডে মানবন্ধনের আয়োজন করেন।

আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় কমিটির যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক আ ফ ম বাহাউদ্দিন নাসিম ও মাদারীপুর জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি শাহাবুদ্দিন মোল্লা গ্রুপের সমর্থকরা একই সময় মানববন্ধন করতে গেলে দুই পক্ষের মধ্যে উত্তেজনা সৃষ্টি হয়। একপর্যায়ে দুই গ্রুপের মধ্যে ধাওয়া-পাল্টা ধাওয়া শুরু হয়। এ সময় উত্তেজিত নেতাকর্মীরা পার্শ্ববর্তী ঘটকচর স্ট্যান্ডে আটটি মোটরসাইকেল ভাঙচুর করে ও কিছু ব্যবসা প্রতিষ্ঠান ভাঙচুর করে। পরে ঘটনাস্থলে পুলিশ গিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে। এ ঘটনায়  তিন পুলিশ, এক সাংবাদিকসহ আহত হয়েছেন ১৫ জন।

মাদারীপুরের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (সদর সার্কেল) মো. এহসানুল রহমান ভুইয়া জানান, আওয়ামী লীগের দুই গ্রুপের মধ্যে সংঘর্ষে তিন পুলিশ সদস্য আহত হয়েছেন। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণের বাইরে গেলে পুলিশ লাঠিচার্জ করে। ঘটনাস্থলে অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে। এখন পর্যন্ত কোনো পক্ষ থানায় অভিযোগ করেনি। কেউ অভিযোগ দিলে আমরা আইনগত ব্যবস্থা নিব।

জেলা ছাত্রলীগের সভাপতি জাহিদ হোসেন অনিক বলেন, শেখ হাসিনার কারামুক্তি দিবস উপলক্ষে কেন্দুয়া ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের উদ্যোগে রাস্তার পাশে মানববন্ধন চলছিল। এ সময় শাজাহান খানের সমর্থকরা আমাদের ওপর হামলা চালায়।

জেলা যুবলীগের সাধারণ সম্পাদক সাইফুর রহমান রুবেল খান বলেন, মরহুম আছমত আলী খান জেলার সকলের শ্রদ্ধেয় ব্যক্তি। তিনি জেলা আওয়ামী লীগের প্রতিষ্ঠাতা সভাপতি, সাবেক এমপি ও মুক্তিযুদ্ধের সংগঠক ছিলেন। তাকে স্বাধীনতা পদক দিয়েছেন আমাদের সফল প্রধানমন্ত্রী ও আওয়ামী লীগের সভাপতি শেখ হাসিনা। সেই পদক নিয়ে জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি শাহাবুদ্দিন আহমেদ মোল্লা কটূক্তি করে বক্তব্য দিয়েছেন।

শাহাবুদ্দিন মোল্লা তার বক্তব্যের মাধ্যমে শুধু আছমত আলী খানকে নয় মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকেও অসম্মান করছেন। এখনও সময় আছে শাহাবুদ্দিন মোল্লা যদি শেখ হাসিনার কাছে ক্ষমা চান তাহলে সব সমস্যার সমাধান হয়ে যায়। তিনি তা না করে আমরা যেখানে প্রতিবাদ সভা বা মানববন্ধন করছি সেখানে লোক পাঠিয়ে হামলা করিয়েছেন। শাহাবুদ্দিন মোল্লা গ্রুপের মানববন্ধন ছিল সকাল ৮টা থেকে ৯টা পর্যন্ত। আর আমাদের সময় সকাল ১০টা থেকে ১১টা। ১০টার পর আমরা মানববন্ধন করলে শাহাবুদ্দিন মোল্লার সমর্থকরা আমাদের ওপর হামলা চালায়

নাজমুল মোড়ল/আরএআর