ভাতা ৩ হাজার, ২ হাজার টাকাই রেখে দিতে চান ইউপি সদস্য!
কুড়িগ্রামের নাগেশ্বরীতে বয়স্ক ও বিধবা ভাতাভোগীদের বিকাশ একাউন্ট করা সিমকার্ড আটকে রেখে টাকা দাবি করার অভিযোগ উঠেছে বেরুবাড়ী ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) এক সদস্যের বিরুদ্ধে। ইউনিয়নের ৪ নং ওয়ার্ড সদস্য আনোয়ার হোসেনের বিরুদ্ধে এ অভিযোগ তুলেছেন ভুক্তভোগীরা। এ ব্যাপারে প্রতিকার চেয়ে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার কাছে লিখিত অভিযোগ দিয়েছেন তারা।
লিখিত অভিযোগ থেকে জানা যায়, বেরুবাড়ী ইউনিয়নের ৪ নং ওয়ার্ডে ইউপি সদস্য আনোয়ার হোসেন ভাতা কার্ড করে দেওয়ার কথা বলে বয়স্ক ও বিধবাদের কাছ থেকে জাতীয় পরিচয়পত্র জমা নেন। তাদের মোবাইল নম্বরে বিকাশ খোলার জন্য তার বাড়িতে ডাকেন। বিকাশ একাউন্ট খুলে সিম ও পিন কোড নিজের কাছে রেখে দেন তিনি। পরে ভুক্তভোগীরা বিকাশের সিম ও পিন কোড চাইলে তিনি তা দিতে অস্বীকৃতি জানান এবং ‘ভাতা কার্ড হবে না’ বলে হুমকি দেন।
বিজ্ঞাপন
কিছুদিন পর ভুক্তভোগী ব্যক্তিরা জানতে পারেন তারা বয়স্ক ও বিধবা ভাতার তালিকাভুক্ত হয়েছেন এবং তাদের বিকাশ নম্বরে জনপ্রতি ৩ হাজার করে টাকা সংযুক্ত হয়েছে। তারা সিম ও পিন কোড ফেরত চাইলে ইউপি সদস্য আনোয়ার ২ হাজার করে টাকা দাবি করেন। একপর্যায়ে নিরুপায় হয়ে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার (ইউএনও) কাছে অভিযোগ করেন ভুক্তভোগীরা।
ভুক্তভোগী কুদ্দুছ খান, সাহের আলী ও ফজিলা বেওয়া ঢাকা পোস্টকে বলেন, আনোয়ার মেম্বার বিকাশ একাউন্ট করে দেওয়ার কথা বলে শতাধিক মানুষের কাছ থেকে সিম জমা নিয়ে ছবি তোলে। পরে আর সিমও দেয়নি, বিকাশের পিন কোডও দেয়নি। এখন ৩ হাজার টাকা থেকে নামপ্রতি ২ হাজার করে টাকা দাবি করছে সে। টাকা না দিলে সিম ফেরত দেবে না। আমরা এর সঠিক বিচার চাই।
এ ব্যাপারে অভিযুক্ত ইউপি সদস্য আনোয়ার হোসেন ঢাকা পোস্টকে বলেন, আমি তাদের কাছে সিম চাইনি। তারাই নিজে থেকে আমাকে বিকাশ করার জন্য সিম জমা দিয়েছে। অনেকে ভুল নম্বর দিয়েছিল। তাই সমস্যা সমাধানে সিমগুলো আমার কাছে ছিল। তবে আমি তাদের সিম নিয়ে যেতে বলেছি।
তিনি বলেন, ষড়যন্ত্র করে আমার নামে মিথ্যা বলছে তারা। এখানে একটি মসজিদ মেরামতের জন্য আমি নিজে ২০ হাজার টাকা দিয়েছি। তাদেরও বলেছি আপনারা যে যা পারেন কিছু টাকা দেন। যাতে সবার সহযোগিতায় মসজিদের কাজ সম্পন্ন হয়।
এ ব্যাপারে জানতে বেরুবাড়ী ইউনিয়নের চেয়ারম্যান আব্দুল মোতালেবকে একাধিকবার ফোন করলেও তিনি ফোন রিসিভ করেননি।
নাগেশ্বরী উপজেলার ইউএনও নূর আহমেদ মাছুম বলেন, বিষয়টি খতিয়ে দেখতে উপজেলা সমাজসেবা কর্মকর্তাকে দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে। তদন্ত প্রতিবেদন পেলে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
উপজেলা সমাজসেবা অফিসার সালেকুল ইসলাম বলেন, আমি ব্যস্ততার কারণে এখনো তদন্ত করতে পারিনি। তবে দু-এক দিনের মধ্যেই তদন্ত করে প্রতিবেদন জমা দেবো।
মো. জুয়েল রানা/এনএ/জেএস