আবদুল কাদের মির্জা

নোয়াখালী বসুরহাট পৌরসভার মেয়র আবদুল কাদের মির্জা ফের ২৪ ঘণ্টার আল্টিমেটাম দিয়েছেন। শনিবার (২৯ মে) রাত ৯টায় তার সহযোগী স্বপন মাহমুদের ফেসবুক একাউন্ট থেকে লাইভে এসে তিনি এ ঘোষণা দেন।

লাইভে কাদের মির্জা বলেন, ‘আমি গত কয়েকদিন আগে আমাদের মন্ত্রী ওবায়দুল কাদের সাহেবের সঙ্গে দেখা করেছি। তারপর থেকে এখানকার প্রশাসন আমার বিরুদ্ধে লেগেছে। এখানকার ওসি,  ইউএনও, এসি ল্যান্ড ও এডিশনাল এসপি শামিম ষড়যন্ত্র করে আমার পরিবারকে রাজনীতি থেকে সরাতে চায়। তারা আমার ভাই ওবায়দুল কাদের সাহেবকে, আমাকে ও আমার পরিবারকে সরিয়ে একরামের রাজত্ব কায়েম করতে চায়।’

তিনি বলেন, ‘গতকাল পুরো বসুরহাটে মিছিল হয়েছে তাতে কেউ কোনো শব্দও করে নাই। কিন্তু আজ সন্ধ্যায় ইউএনও, ওসি, এসি ল্যান্ড ও এডিশনাল এসপি শামিমের সামনে বহিরাগত সশস্ত্র সন্ত্রাসীদের দ্বারা আমার পৌরসভার ৯ নং ওয়ার্ডের নেতাকর্মীদের ওপর গুলিবর্ষণ করেন। এতে আমার ১৫ জন নেতাকর্মী গুলিবিদ্ধ হয়। ওসি এবং এডিশনাল এসপি শামিম সেখানে উপস্থিত ছিল। আর ইউএনও এবং এসি ল্যান্ড তখন উপজেলা অফিসে উপস্থিত ছিলেন। আমার একটা ছেলে মৃত্যুর সঙ্গে পাঞ্জা লড়ছে তাকে ঢাকায় নেওয়ার প্রস্তুতি চলছে।’

কাদের মির্জা বলেন, ‘আমি আগামী ২৪ ঘণ্টা সময় দিলাম। এর মধ্যে যদি ইউএনও, এসি ল্যান্ড, ওসি ও এডিশনাল এসপি শামিমকে প্রত্যাহার না করলে আমি কোম্পানীগঞ্জের মানুষদের নিয়ে আন্দোলন করব। আমেরিকা যাওয়ার কথা ছিল, আমি যাব না। আমি এর শেষ দেখে ছাড়ব। তারপর আমেরিকা যাব। আর কত অত্যাচার হবে। আমি আপনাদের কাছে বিচার চাই।’

এসময় তিনি ওবায়দুল কাদেরকে উদ্দেশ্য করে বলেন, ‘যারা কোটি কোটি টাকা আত্মসাৎ করে একতরফাভাবে কাজ করছে আপনি তাদেরকে কিছুই বলছেন না। ২৪ ঘণ্টার মধ্যে এদেরকে সরাতে হবে। নাহলে আপনার বিরুদ্ধে আমরা কঠিন আন্দোলন শুরু করব।’

এদিকে আজ শনিবার (২৯ মে) সন্ধ্যা সাড়ে ৭টার দিকে কাদের মির্জা ও বাদল অনুসারীদের মধ্যে বসুরহাট পৌরসভার ৯ নম্বর ওয়ার্ডের সামনের সড়কে গোলাগুলির ঘটনা ঘটে। গোলাগুলিতে কাদের মির্জা অনুসারী ১৫ জন গুলিবিদ্ধ হয় বলে দাবি করেন তিনি।

জেলা পুলিশ সুপার (এসপি) মো. আলমগীর হোসেন গোলাগুলির ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করে ঢাকা পোস্টকে বলেন, ‘আজ গোলাগুলি হয়েছে। তবে কতজন গুলিবিদ্ধ হয়েছে তা এখনো জানা যায়নি। এখন পর্যন্ত কাউকে আটক করা হয়নি। তবে আসামিদের ধরতে পুলিশের অভিযান চলছে।’

প্রসঙ্গত, আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক এবং সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদেরের ছোট ভাই বসুরহাট পৌর মেয়র আবদুল কাদের মির্জা। ওই পৌরসভায় দ্বিতীয় মেয়াদে গত ডিসেম্বরে নির্বাচনের আগে বিভিন্ন ইস্যুতে কথা বলে আলোচনায় আসেন তিনি।

স্থানীয় রাজনীতির বিভিন্ন ইস্যুতে দলীয় প্রতিপক্ষের সঙ্গে তার বিরোধের ঘটনায় এক মাসে দুটি সংঘর্ষে দুজন গুলিবিদ্ধ হয়ে নিহত হয়েছেন। এসব ঘটনায় একাধিক মামলা হয়েছে। এমন পরিস্থিতিতে ৩১ মার্চ দল থেকে পদত্যাগের ঘোষণা দিয়েছিলেন কাদের মির্জা। পদত্যাগের ৪৫ দিনের মাথায় ১৬ মে কাদের মির্জা আবার দলে ফিরে আসেন।

হাসিব আল আমিন/ওএফ