চতুর্থ দিনে চাঁপাইনবাবগঞ্জে কঠোর লকডাউন, আরও দুইজনের মৃত্যু
প্রাণঘাতি করোনাভাইরাসের সংক্রমণ ও ভারতীয় ভ্যারিয়েন্ট রোধে চাঁপাইনবাবগঞ্জে চলছে সাতদিনের কঠোর লকডাউন। মঙ্গলবার রাত (২৫ মে) ১২টা থেকে শুরু হওয়া কঠোর লকডাউনের আজ চতুর্থ দিন চলছে। জেলা শহরে কঠোরভাবে পালিত হচ্ছে লকডাউন। মফস্বলেও কঠোরভাবে লকডাউন কার্যকরে শুক্রবার (২৮ মে) সকাল থেকেই মাঠে তৎপর রয়েছেন জেলা প্রশাসন ও জেলা পুলিশের বিভিন্ন স্তরের কর্মকর্তা ও সদস্যরা।
জেলা শহরের বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ মোড়ে এবং জেলার বিভিন্ন স্থানে প্রশাসনের তৎপরতা দেখা গেছে। জেলা পুলিশের ২৭টি চেকপোস্ট ও অর্ধশতাধিক তল্লাশি চৌকি বসানো হয়েছে। এছাড়াও পাঁচটি উপজেলায় জেলা প্রশাসনের ১২টি ভ্রাম্যমাণ আদালত কাজ করছে। লকডাউনে দূরপাল্লার ও আন্তঃজেলা বাস ও ট্রেনসহ যানবাহন বন্ধ রয়েছে। মার্কেট ও দোকানপাট বন্ধ রয়েছে।
বিজ্ঞাপন
তবে দেশের দ্বিতীয় বৃহত্তম স্থলবন্দর সোনামসজিদ স্থলবন্দরে কার্যক্রম স্বাভাবিক গতিতেই চলছে। বুধবার (২৬ মে) থেকে ভারতীয় ভ্যারিয়েন্ট রোধে ভারতীয় ট্রাক ড্রাইভারদের গলায় লাল ফিতা বেঁধে দেয়ার ব্যবস্থা করেছে বন্দর কর্তৃপক্ষ।
এদিকে প্রাণঘাতি করোনায় গত ২৪ ঘণ্টায় জেলায় আরও দুই নারীর মৃত্যু হয়েছে। নিহতরা হলেন- সদর উপজেলার রানিহাটি ইউনিয়নের রামচন্দ্রপুরহাট গ্রামের রোজিনা বেগম (৭০) ও আরেকজন নাচোলের মমতাজ বেগম। এনিয়ে জেলায় করোনায় মৃত্যুর সংখ্যা বেড়ে দাঁড়াল ৩০ জন। শুক্রবার দুপুর আড়াইটার দিকে মুঠোফোনে ঢাকা পোস্টকে এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন সিভিল সার্জন ডা. জাহিদ নজরুল চৌধুরী।
জেলা প্রশাসক মঞ্জুরুল হাফিজ ঢাকা পোস্টকে জানান, লকডাউনের যত দিন যাচ্ছে প্রশাসন আরও তত কঠোর হচ্ছে। স্বাস্থ্যবিধি না মানলে আরও বেশি পরিমাণে জরিমানা আদায় করা হচ্ছে। কারণ জেলাবাসীকে বাঁচাতে এর কোনো বিকল্প নেই।
লকডাউনের মেয়াদ বাড়ানো হবে কিনা জানতে চাইলে জেলা প্রশাসক বলেন, সেটা সময়ই বলে দিবে। পরিস্থিতি বিবেচনায় নিয়ে এ বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে। কঠোর লকডাউনের ৪র্থ দিন পর্যন্ত জেলার করোনা পরিস্থিতি অনেকটাই উন্নতি হয়েছে। জেলবাসীকে ঘরে থাকতে ও জরুরি প্রয়োজনে স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলার আহ্বান জানান তিনি।
সিভিল সার্জন ডা. জাহিদ নজরুল চৌধুরী জানান, গত ২৪ ঘণ্টায় চাঁপাইনবাবগঞ্জে ১৩১টি স্যাম্পল র্যাপিড এন্টিজেন টেস্ট করে ৩৮ জনের পজিটিভ পাওয়া গেছে। যা পরীক্ষার প্রায় ৩৪%। চাঁপাইনবাবগঞ্জ জেলায় বর্তমানে করোনা রোগী চিকিৎসাধীন রয়েছে ৪৫১ জন। জেলায় এ পর্যন্ত মোট ১ হাজার ৫৬৭ জনের দেহে করোনাভাইরাস শনাক্ত হয়েছে। আর ১ হাজার ১১৬ জন সুস্থ হয়ে বাড়ি ফিরে গেছেন। মারা গেছেন ৩০ জন।
তিনি আরও জানান, ভারত থেকে সোনামসজিদ স্থলবন্দর দিয়ে দেশে প্রবেশ করেছে মোট ৮০ জন আটকে পড়া বাংলাদেশি। এর মধ্যে দুইজনের দেহে করোনা শনাক্ত হয়েছে। ভারত থেকে আসা মানুষদের সকলকে জেলা শহরের দুটি আবাসিক হোটেলে এবং সোনামসজিদ ডাকবাংলোতে প্রাতিষ্ঠানিক কোয়ারেন্টাইনে রাখা হয়েছে।
জাহাঙ্গীর আলম/আরএআর