ঘূর্ণিঝড় ইয়াসে পূর্ব সুন্দরবনে ক্ষতি ৬০ লাখ টাকা
ঘূর্ণিঝড় ইয়াসের প্রভাব ও জোয়ারের পানিতে পূর্ব সুন্দরবনের প্রাথমিক ক্ষয়ক্ষতির পরিমাণ নিরূপণ করেছে বন বিভাগ। প্রবল বাতাস ও ঝড়ে পূর্ব বন বিভাগের ওয়াচ টাওয়ার, ফুট রেইল, জলযান, গোলঘর, গাছপালা ও রাস্তা ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। এতে ৬০ লক্ষাধিক টাকার ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে বলে জানিয়েছেন সুন্দরবন পূর্ব বন বিভাগের বিভাগীয় বন কর্মকর্তা (ডিএফও) মোহাম্মাদ বেলায়েত হোসেন।
তিনি বলেন, ঘূর্ণিঝড় ইয়াসের প্রভাবে সুন্দরবনে স্বাভাবিকের থেকে ৫-৬ ফুট পানি বৃদ্ধি পেয়েছে। বৃহস্পতিবার (২৭ মে) সকাল পর্যন্ত আমরা যে তথ্য পেয়েছি, তাতে প্রবল বাতাস ও পানির তোড়ে আমাদের বেশ কিছু স্থাপনা ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। এর মধ্যে ১৯টি জেটি, ৬টি জলযান (ট্রলার), দুটি গোলঘর, একটি ফুট রেইল, একটি ওয়াচ টাওয়ার, চারটি স্টাফ ব্যারাক ও একটি রেস্ট হাউজ রয়েছে। দুটি অফিসের রাস্তা ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে।
বিজ্ঞাপন
সব মিলে সুন্দরবনে ৬০ লক্ষাধিক টাকার ক্ষতি হয়েছে বলে প্রাথমিকভাবে ধারণা করছি। তবে ক্ষয়ক্ষতির পরিমাণ আরও বাড়তে পারে। এ ছাড়া ইয়াসের প্রভাবে গত ২৪ মে পূর্ব সুন্দরবনের আটটি টহল ফাঁড়ির কর্মীদের নিরাপদ স্থানে সরিয়ে নেওয়া হয়েছিল। তাদের পুনরায় সেখানে পাঠানো হয়েছে বলে জানান তিনি।
সুন্দরবন পূর্ব বন বিভাগের তথ্য অনুযায়ী, দশটি অফিসের টিনের চালা উড়ে গেছে ইয়াসের বাতাসে। সুন্দরবনের মধ্যে সুপেয় পানির সংস্থান হিসেবে পরিচিত ৯টি পুকুরে লবণ পানি প্রবেশ করেছে। সুন্দরবন থেকে দুটি এবং লোকালয় থেকে দুইটি হরিণের মরদেহ উদ্ধার করা হয়েছে। সুন্দরবনের করমজল বন্যপ্রাণি প্রজনন কেন্দ্রের দুটি কুমিরের শেড ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে।
সুন্দরবনের একমাত্র বন্যপ্রাণি প্রজনন কেন্দ্র করমজলের কোনো প্রাণির ক্ষতি হয়নি বলে জানান প্রজনন কেন্দ্রের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা আজাদ কবির। তিনি বলেন, ঘূর্ণিঝড় ইয়াসের প্রভাবে সৃষ্ট জলোচ্ছ্বাস ও বাতাসে কুমিরের দুটি শেড নষ্ট হয়েছে। পানি বৃদ্ধি পাওয়ার সঙ্গে সঙ্গে আমরা বন্যপ্রাণিগুলোকে নিরাপদ স্থানে নিয়েছি। ঝড়ে আমাদের কোনো বন্যপ্রাণির ক্ষতি হয়নি।
সুন্দরবন পূর্ব বন বিভাগের শরণখোলা রেঞ্জের সহকারী বন সংরক্ষক (এসিএফ) মো. জয়নাল আবেদিন বলেন, ঘূর্ণিঝড় ইয়াসের প্রভাব ও পূর্ণিমা তিথির জোয়ারের কারণে বনে স্বাভাবিকের চেয়ে ৫ থেকে ৬ ফুট পানি বৃদ্ধি পায়। পানিতে বনের প্রায় সব এলাকা প্লাবিত হয়েছে।
সুন্দরবন সংলগ্ন বাগেরহাটের শরণখোলা উপজেলার বলেশ্বর নদীর তীরবর্তী রাজেশ্বরে একটি হরিণ, উত্তর তাফালবাড়িতে একটি, সুন্দরবনের দুবলা ও কচিখালী এলাকায় একটি করে চারটি হরিণের মৃতদেহ পাওয়া গেছে। বৃহস্পতিবার সকাল পর্যন্ত আর কোনো বন্যপ্রাণির মৃত্যুর খবর পাইনি আমরা।
তানজীম আহমেদ/এসপি