পটুয়াখালীতে ঘূর্ণিঝড় ইয়াসের প্রভাবে নদ-নদীর পানি বৃদ্ধি পেয়েছে। বুধবার (২৬ মে) বিপৎসীমার ৬৪ সেন্টিমিটার ওপর দিয়ে জোয়ারের পানি প্রবাহিত হয়। যা অতীতের সব রেকর্ড ছাড়িয়ে গেছে। এতে জেলায় প্রায় ৫০ কিলোমিটার বেড়িবাঁধ ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। ২ হাজার ৬৩২টি পুকুর ও ৫৯০টি ঘেরের মাছ ভেসে গেছে।

জানা গেছে, মঙ্গলবার (২৫ মে) জোয়ারের প্রভাবে পটুয়াখালীর তেঁতুলিয়া, পায়রা, রামনাবাদ, বুড়াগৌরঙ্গ, লোহালিয়া ও আগুনমুখা নদীর পানি বিপৎসীমার ১৮ থেকে ৬৪ সেন্টিমিটার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। বুধবার (২৬)  বিপৎসীমার ৬৪ সেন্টিমিটার ওপর দিয়ে জোয়ারের পানি প্রবাহিত হয় যা অতীতের সব রেকর্ডকে ছাড়িয়ে গেছে। পটুয়াখালীতে পাউবোর ১ হাজার ৩৪১ কিলোমিটার বেড়িবাঁধ রয়েছে। পূর্ণিমার জোয়ারের প্রভাবে গত দুই দিনে বিভিন্ন বাঁধের মোট ৫০ কিলোমিটার ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। চরম দুর্ভোগে আছে উপকূলের কয়েক লাখ মানুষ। 

পটুয়াখালী পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী মো. হালিম সালেহিন বলেন, জলবায়ু পরির্বতনের প্রভাবে সাগরের পানির উচ্চতা বৃদ্ধি পাওয়ায় আমরা বার বার বিপর্যয়ের মুখে পড়ছি। পূর্ণিমার জোয়ারে মঙ্গলবার পটুয়াখালী জেলায় প্রায় ৫০ কিলোমিটার বেড়িবাঁধ ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। আমরা জিও ব্যাগ, বালির বস্তা দিয়ে সেগুলো সংস্কারের চেষ্টা করে যাচ্ছি। 

তিনি আরও বলেন, সিওয়াল নির্মাণ মূলত একটি ব্যয়বহুল প্রকল্প। আমাদের অর্থ সংকট রয়েছে। তবে ওই পর্যায়ে যেতে পারলে সেটি নিরাপদ হতো। মাটির তৈরি বেড়িবাঁধ নির্মাণেও আমরা পর্যাপ্ত অর্থের যোগান দিতে পারি না। তবে সরকারের পরিকল্পনা রয়েছে। ইতোমধ্যে আমরা বাঁধ নির্মাণে অতীতের চেয়ে ১ মিটার উচ্চতা বৃদ্ধির জন্য অনুমতি পেয়েছি। ভাঙা বাঁধগুলো পর্যায়ক্রমে সংস্কার করা হবে।

এদিকে জোয়ারের প্রভাবে জেলায় ২ হাজার ৬৩২টি পুকুর ও ৫৯০টি ঘেরের মাছ ভেসে গেছে বলে প্রাথমিকভাবে জানা গেছে। তবে এখনো ক্ষয়ক্ষতির পরিমাণ তৈরি করতে পারেনি জেলা প্রশাসন। ক্ষয়ক্ষতি নিরুপণে কাজ করছেন তারা।

পটুয়াখালী জেলা মৎস্য কর্মকর্তা মোল্লা এমদ্যাদুল্লাহ্ বলেন, ঘূর্ণিঝড় ইয়াসের প্রভাবে ২ হাজার ৬৩২টি পুকুর ও ৫৯০টি ঘেরের মাছ ভেসে গেছে। এতে চাষিদের ৪৮ কোটি ৯১ লাখ টাকার ক্ষতি হয়েছে। ক্ষতির পরিমাণ আরও বাড়তে পারে।

জেলা ত্রাণ ও পুনর্বাসন কর্মকর্তা রনজিৎ কুমার বলেন, বৃহস্পতিবার (২৭ মে) দুপুর ১২টার পর আমরা আপনাদের ক্ষতির পরিমাণ জানাতে পারব।

মহিব্বুল্লাহ্ চৌধুরী/এসপি