কোয়ারেন্টাইন সেন্টারে নিম্নমানের খাবার সরবরাহ, বিক্ষোভ
চুয়াডাঙ্গার ভিমরুল্লাহ এলাকায় অবস্থিত কারিগরি প্রশিক্ষণ কেন্দ্র (টিটিসি) প্রাতিষ্ঠানিক কোয়ারেন্টাইন সেন্টারে মানহীন খাবার সরবরাহের অভিযোগে বিক্ষোভ করেছেন ভারতফেরতরা। বুধবার (২৬ মে) রাতে এ ঘটনা ঘটে।
জানা গেছে, করোনাভাইরাসের প্রকোপে বন্ধ রয়েছে ভারত-বাংলাদেশ সীমান্ত। এর মধ্যে জরুরি চিকিৎসা নিতে বেনাপোল সীমান্ত দিয়ে স্থলপথে হাজার দেড়েক বাংলাদেশি ভারতে গিয়ে পড়েন বিপাকে। পরে বাংলাদেশের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের বিশেষ ব্যবস্থায় আটকা পড়া বাংলাদেশি যাত্রীরা দেশে ফেরেন।
বিজ্ঞাপন
গত ১৮ মে থেকে চুয়াডাঙ্গার দর্শনাসহ দেশের ৩টি স্থল সীমান্ত ও চেকপোস্ট দিয়ে দেশে ফিরতে শুরু করে বাংলাদেশিরা। তবে শর্ত অনুযায়ী দেশে ফেরা সবাইকে বিশেষ কোয়ারেন্টাইনে থাকতে হচ্ছে ১৪ দিন। সংশ্লিষ্ট জেলা প্রশাসন বিষয়টি তদারকি করছেন। সেই অনুযায়ী চুয়াডাঙ্গার দর্শনা সীমান্ত দিয়ে দেশে ফেরা প্রায় ৭০০ ভারতফেরত অবস্থান করছেন চুয়াডাঙ্গার দুটি সরকারি ভবন ও কয়েকটি আবাসিক হোটেলের অস্থায়ী কোয়ারেন্টাইন সেন্টারে।
সরকারি নির্দেশ অনুযায়ী থাকা-খাওয়ার সব খরচ বহন করতে হচ্ছে কোয়ারেন্টাইনে থাকা লোকদেরই। আবাসন নিয়ে তেমন কোনো অভিযোগ না পাওয়া গেলেও সরবরাহকৃত খাবারের মান নিয়ে প্রথম থেকেই অভিযোগ করছেন তারা। বুধবার টিটিসি কোয়ারেন্টাইন সেন্টারে ক্ষোভ রূপ নেয় বিক্ষোভে। অনেকে টিটিসি ভবনের জানালা দিয়ে ফেলে দেন খাবার।
যাত্রীদের অভিযোগ, রাতে যে মাছ খেতে দেওয়া হয়েছে তা পচা দুর্গন্ধযুক্ত। একদম খাওয়ার অনুপযোগী। বিক্ষোভের খবর পেয়ে সেখানে পৌঁছান অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক মুনিরা পারভীন, অতিরিক্ত পুলিশ সুপারসহ প্রশাসনের কর্তারা। পরে সবাইকে বুঝিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনেন তারা।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক কোয়ারেন্টিনে থাকা বেশ কয়েকজন অভিযোগ করে বলেন, কোয়ারেন্টাইনে আসার প্রথম দুই দিন আমরা ভালই ছিলাম। এরপর থেকে খাবার নিয়ে যা হচ্ছে তা রীতিমতো অত্যাচার। তিনবেলা দেওয়া হচ্ছে অখাদ্য ও পরিমাণে কম। বুধবার দুপুরে যে মুরগির মাংস খেতে দেওয়া হয়েছিল তা খাওয়া যায়নি। রাতে পচা মাছ ছিল। খেতে না পেরে প্রতিবাদ করেছে সবাই।
কোয়ারেন্টাইনে থাকা যাত্রীদের খাবারসহ ব্যবস্থাপনার দায়িতে থাকা চুয়াডাঙ্গা জেলা প্রশাসকের সহকারী কমিশনার ও বিজ্ঞ নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট (এনডিসি) আমজাদ হোসেন জানান, মান যাচাই করে চুয়াডাঙ্গা শহরের তিনটি রেস্তোরাঁকে পর্যায়ক্রমে খাবার সরবরাহের কাজ দেওয়া হয়েছে। এ কাজ তদারকি করছেন দুইজন ম্যাজিস্ট্রেট। বড় বাজারের হোটেল আল আমিন, ভোজন বিলাস এবং মেহমান হোটেল থেকে যাচ্ছে তিন বেলার খাবার।
তিনি আরও বলেন, বুধবার রাতে কোয়ারেন্টাইনে থাকা ১০/১২ জন মাছের মান নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন। অন্যরা কোনো অভিযোগ করেননি। কোয়ারেন্টাইনে থাকা বাংলাদেশি যাত্রীদের কাছ থেকে থাকা খাওয়া বাবদ জন প্রতি ৫ হাজার টাকা জমা নেওয়া হয়েছে। খাবার নিয়ে অভিযোগ উঠায় এর আগে সরবরাহকারী হোটেল বদল করা হয়েছে।
তিনি বলেন, থাকা খাওয়াসহ যাত্রীদের দেখভালের বিষয়টির সঙ্গে চুয়াডাঙ্গা জেলা প্রশাসকের ভাবমূর্তি জড়িত। আজ থেকে খাবার সরবরাহ করবে রেডচিলি। বুধবার রাতের খাবার সরবরাহকারী মেহমান হোটেলের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে। তদন্তের পর প্রয়োজনে সিলগালা করা হবে।
আফজালুল হক/এসপি