বরগুনায় কমছে জোয়ারের উচ্চতা, স্বস্তি ফিরছে উপকূলে
ঘূর্ণিঝড় ইয়াস ও পূর্ণিমার জোয়ারের চাপে গত দুদিন একের পর এক বাঁধ ভেঙে ও উপচে প্লাবিত হয়েছে বরগুনার দুই শতাধিক গ্রাম। তবে ভারতে ইয়াস আঘাত হানার পর কমতে শুরু করেছে জোয়ারের উচ্চতা। বিপদসীমার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হলেও বুধবার (২৬ মে) সকালের জোয়ারের থেকে রাতের জোয়ারে কমেছে পানির উচ্চতা। এতে স্বস্তি ফেরা শুরু করেছে বরগুনার নদী ও সমুদ্রে তীরবর্তী বাসিন্দাসহ দুর্গত মানুষের মাঝে।
বরগুনা পানি উন্নয়ন বোর্ড সূত্রে জানা গেছে, বুধবার সকালে বরগুনার নদ-নদীতে জোয়ারের উচ্চতা ছিল ৩.৬৮ মিটার এবং রাতের জোয়ারের উচ্চতা ছিল ৩.৪৮ মিটার। যা দিনের জোয়ারের থেকে ২০ সেন্টিমিটার কম। এছাড়াও বুধবার দিনের জোয়ারের সময় বরগুনার নদ-নদীতে বিপদসীমার ৮৩ সেন্টিমিটার ওপর দিয়ে পানি প্রবাহিত হলেও রাতের জোয়ারের প্রবাহিত হয়েছে ৪৮ সেন্টিমিটার ওপর দিয়ে। যা দিনের জোয়ারের থেকে ৩৫ সেন্টিমিটার কম।
বিজ্ঞাপন
বরগুনার পানি উন্নয়ন বোর্ডের পানি পরিমাপক মো. মাহতাব হোসেন বলেন, ঘূর্ণিঝড়ের পরবর্তী সময়ে আজ (বুধবার) পূর্ণিমা ছিল। তাই আমাদের ধারণা ছিল- দিনের জোয়ারের থেকেও রাতের জোয়ারের পানির উচ্চতা বেশি হবে। কিন্তু তা না হয়ে দিনের থেকেও রাতের জোয়ারের পানির উচ্চতা হয়েছে কম।
বরগুনা সদর উপজেলার বুড়িরচর ইউনিয়নে গুলবুনিয়া এলাকার বাসিন্দা বৃদ্ধ হাতেম আলী বলেন, ঘূর্ণিঝড়ের পরবর্তী সময় জোয়ারের উচ্চতা একবার কমা শুরু করলে আর বাড়ে না। এরপর পানির উচ্চতা কমতে কমতে একেবারে স্বাভাবিক পর্যায়ে চলে আসে। তাই ঘূর্ণিঝড় আর পূর্ণিমার জন্য সৃষ্ট জোয়ারের উচ্চতা আর বৃদ্ধি পাওয়ার সম্ভাবনা নেই বলেও জানান তিনি।
বরগুনা সদর উপজেলার পোটকাখালী আশ্রয়ণ প্রকল্পের বাসিন্দা জলিল মিয়া বলেন, গত দুদিনের প্রতিটি জোয়ারে পানির উচ্চতা বৃদ্ধি পেয়েছে। এজন্য ভেবেছিলাম আজ রাতের জোয়ারে দিনের জোয়ারের থেকেও পানির উচ্চতা বেশি হবে। তাই ঘরে না থেকে জোয়ারের আগেই রাস্তায় অবস্থান নিয়েছি। কিন্তু জোয়ারের উচ্চতা দিনের তুলনায় বাড়েনি, বরং কমেছে।
সদর উপজেলার ঢলুয়া ইউনিয়নের ডালভাঙা গ্রামের বাসিন্দা সোলায়মান মিয়া বলেন, মনে হচ্ছে পানির উচ্চতা আর বাড়বে না। ধীরে ধীরে কমতে থাকবে। এজন্য অনেক স্বস্তি পাচ্ছি।
বরগুনার পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী কায়ছার আলম বলেন, বুধবার দিনের জোয়ারের চাপে বেড়িবাঁধ ভেঙে ও উপচে জেলার বিভিন্ন স্থানে গ্রাম প্লাবিত হওয়ার খবর পেয়েছি। পরে ভাটার সময় ভাঙা বেড়িবাঁধ সংস্কার করা হয়েছে। কিন্তু রাতের জোয়ারের পর কোথাও বেড়িবাঁধ ভেঙে বা উপচে লোকালয় প্লাবিত হওয়ার কোনো খবর পাইনি।
মো. সাইফুল ইসলাম মিরাজ/এইচকে