সজীব খান

রূপপুর পারমাণবিক বিদ্যুৎ প্রকল্পের রাশিয়ান ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান এনারগোস্পেট মন্তাজে বিভিন্ন পদে চাকরি দেওয়ার নামে প্রতারণা করায় মানবসম্পদ বিভাগের ব্যবস্থাপক সজীব খানকে পুলিশে সোপর্দ করেছে কোম্পানি কর্তৃপক্ষ।

মঙ্গলবার (২৫ মে) বিকেলে প্রকল্পের নিরাপত্তার দায়িত্বে থাকা শৃঙ্খলারক্ষাকারী সদস্যদের মাধ্যমে তাকে পুলিশের কাছে হস্তান্তর করা হয়। সজীব খানের বিরুদ্ধে প্রতারিত ভুক্তভোগীদের লিখিত অভিযোগ প্রাপ্তির কথা নিশ্চিত করেছেন রূপপুর পুলিশ ফাঁড়ির ইনচার্জ আতিকুল ইসলাম।

আটক কর্মকর্তা সজীব খান নরসিংদী জেলার ভোলাহাট এলাকার মৃত জুনায়েদ খাঁনের ছেলে। তিনি এনারগোস্পেট মন্তাজ কোম্পানির মানবসম্পদ বিভাগের প্রধান ও ব্যবস্থাপক হিসেবে কর্মরত ছিলেন।

ফতেহ মোহাম্মদপুর এলাকার সৌরভ কুমার নামে একজন ভুক্তভোগী অভিযোগ করেন, সজীব খানের সঙ্গে তার পূর্ব পরিচয়ের সূত্র ধরে তিনি প্রকল্পে একটি চাকরির জন্য তার কাছে সহযোগিতা চান। সজীব খান চাকরি দিতে সহযোগিতার শর্তে ৪০ হাজার টাকা দাবি করেন। তার চাহিদা অনুযায়ী গত বছর ২১ জুলাই সজীব খানের হাতে নগদ ৪০ হাজার টাকা ও সিভি দেন সৌরভ।

তিনি আরও বলেন, একই দিন সৌরভের মাধ্যমে যোগাযোগ হওয়া আরও পাঁচজন চাকরির জন্য সজীব খানকে ৩ লাখ পাঁচ হাজার টাকা দেন। টাকা ও সিভি নিয়ে সজীব জানান, তাদের তিন বছরের জন্য এনারগোস্পেট কোম্পানিতে নিয়োগ দেওয়া হবে। কিন্তু যোগদানের কিছু দিন পরই আমাদের কোম্পানি থেকে বের করে দেওয়া হয়।

সৌরভ কুমার বলেন, তখন, প্রতিষ্ঠানটিতে কর্মরতদের মাধ্যমে জানতে পারি এই প্রতিষ্ঠান কাউকে সময়ভিত্তিক নিয়োগ দেয় না। এ সময় খোঁজ নিয়ে বহু মানুষের সঙ্গে তার প্রতারণার বিষয়টি জানতে পারি। পরে বিষয়টি নিয়ে এনারগোস্পেট কর্তৃপক্ষের নিকট অভিযোগ করলে তারা সত্যতা পান এবং তাকে বরখাস্ত করে মঙ্গলবার প্রকল্পের নিরাপত্তা বাহিনীর মাধ্যমে পুলিশে সোর্পদ করেন।

লিমন নামে এক ভুক্তভোগী জানান, বেকারত্বের সুযোগ নিয়ে করোনাকালীন দুর্যোগময় মুহূর্তে তিনি যে ক্ষতি করেছেন, তা দুঃখজনক। চলতি মাসে ৩০-৪০ জনের কাছ থেকে সজীব হাতিয়ে নিয়েছে মোটা অংকের টাকা।

থানা সূত্রে জানা যায়, এই কর্মকর্তা কাছে প্রতারিত হয়ে কয়েকজন চাকরিপ্রত্যাশী যুবক প্রকল্পের নিরাপত্তায় নিয়োজিত সেনা সদস্যদের কাছে অভিযোগ করেন। তদন্ত করে অভিযোগের প্রাথমিক সত্যতা পায় সেনাবাহিনী। পরে তাকে প্রকল্প এলাকা থেকে আটক করে রূপপুর পুলিশ ফাঁড়িতে হস্তান্তর করে তারা। 

রূপপুর পারমাণবিক ফাঁড়ির ইনচার্জ পুলিশের উপপরিদর্শক (এসআই) আতিকুল ইসলাম আটক ও প্রতারণার অভিযোগ প্রাপ্তির বিষয়টি নিশ্চিত করে বলেন, সজীবের বিরুদ্ধে মামলা দায়েরের বিষয়টি প্রক্রিয়াধীন রয়েছে।

রাকিব হাসনাত/এমএসআর