প্রতিদিনের ন্যায় মঙ্গলবার (২৫ মে) সকালে আবহাওয়ার পরিস্থিতি স্বাভাবিক ছিল। তবে সকাল ৯টার পর থেকেই আকাশজুড়ে মেঘের আনাগোনা শুরু হয়। উপকূলীয় অঞ্চলসহ বিভিন্ন স্থানে থেমে থেমে হয় হালকা মাঝারি বৃষ্টি। আধা ঘণ্টা পরই আবারও পরিস্থিতি স্বাভাবিক হয়। এভাবেই সাতক্ষীরা অঞ্চলে সকাল থেকে চলেছে আবহাওয়ার পরিস্থিতি।

সাতক্ষীরার উপকূলজুড়ে এখন থমথমে পরিস্থিতি বিরাজ করছে। আবহাওয়া অধিদফতরের সতকর্তা সংকেতের উপর নির্ভর করছে মানুষের আশ্রয়কেন্দ্রে নেওয়ার বিষয়টি। এরই মধ্যে উপকূলের ইউনিয়ন পরিষদে ২৫ হাজার টাকা করে সরকারি বরাদ্দ দেওয়া হয়।

সাতক্ষীরা উপকূলীয় গাবুরা ইউনিয়নের সোরা গ্রামের বাসিন্দা হুদা মালী জানান, বেলা ১২টার দিকে কপোতাক্ষ নদের জোয়ারের পানি বৃদ্ধি পাওয়ায় নেবুগুনিয়া এলাকার বাঁধ উপচে লোকালয়ে পানি প্রবেশ শুরু করে। তখন সবাই মিলে মাটি দিয়ে সেটি রক্ষা করা হয়েছে। তবে পরবর্তী রাতে জোয়ার আসলে পরিস্থিতি কী দাঁড়াবে সেটি নিয়ে আমরা আতঙ্কিত।

উপকূলীয় নীলডুমুর খেয়াঘাট এলাকার সাহেব আলী বলেন, দিনভর আকাশে কখনো মেঘ বৃষ্টি হচ্ছে আবার কখনো রোদ উঠছে, এভাবেই চলছে। দুর্যোগকালীন সময়ের আগের যে আবহাওয়ার পরিবর্তন সেটি লক্ষ্য করছি। এখন থমথমে অবস্থা বিরাজ করছে। মানুষের মাঝে আতঙ্কের সৃষ্টি হয়েছে। তবে কোনো মানুষ এখনো আশ্রয় কেন্দ্রে যায়নি।

এদিকে, উপকূলীয় এলাকায় স্বাভাবিকের চেয়ে কপোতাক্ষ ও খোলপেটুয়া নদীর পানি ২-৩ ফিট উচ্চতা বৃদ্ধি পেয়েছে জানিয়ে শ্যামনগর পানি উন্নয়ন বোর্ডের উপসহকারী প্রকৌশলী সাজ্জাদুল হক জানান, ঘূর্ণিঝড় ও পূর্ণিমার কারণে নদীর পানি স্বাভাবিকের চেয়ে একটু বৃদ্ধি পেয়েছে। উপকূলবর্তী এলাকাগুলোতে ঝুঁকিপূর্ণ বাঁধ মেরামত করা হয়েছে। আমরা জিও ব্যাগসহ শ্রমিক প্রস্তুত রেখেছি।

শ্যামনগর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা আ ন ম আবুজর গিফারী বলেন, বর্তমানে দুই নম্বর সতর্কতা সংকেত চলছে। এই সংকেত ৬ নম্বরে পৌঁছালে আমরা উপকূলীয় বাসিন্দাদের আশ্রয়কেন্দ্রে নেওয়া শুরু করব। আশ্রয়কেন্দ্রগুলো প্রস্তুত রাখা হয়েছে। সেজন্য আমাদের ফায়ার সার্ভিস, কোস্টগার্ড, স্বেচ্ছাসেবকসহ সার্বিক প্রস্তুতি রয়েছে।

তিনি আরও বলেন, ঘূর্ণিঝড় ইয়াস মোকাবিলায় প্রত্যেক ইউনিয়ন চেয়ারম্যানদের অনুকূলে ২৫ হাজার টাকা সহায়তা দেওয়া হয়েছে। এছাড়া শিশুখাদ্য ও গোখাদ্য বরাদ্দ করা হয়েছে।

সাতক্ষীরা আবহাওয়া অধিদফতরের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা জুলফিকার আলী বলেন, ঘূর্ণিঝড়টির বর্তমান অগ্রসর অবস্থা অনুযায়ী এটি ভারতের উড়িষ্যা ও পশ্চিমবঙ্গের দিকে এগোচ্ছে। বুধবার (২৬ মে) দুপুরের দিকে এটি উপকূল অতিক্রম করবে। তখন উপকূলীয় অঞ্চলে ২-৪ ফিট উচ্চতার জলোচ্ছ্বাস হওয়ার শঙ্কা রয়েছে।

আকরামুল ইসলাম/এমএসআর